ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

নৌ-যোগাযোগের উন্নয়নে ৩৬ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৬
নৌ-যোগাযোগের উন্নয়নে ৩৬ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক ছবি: প্রতীকী

নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ৩৬ কোটি মার্কিন ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ। ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক নৌ-পথ পরিবহন প্রকল্প-১’ এর আওতায় এ ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।

ঢাকা: নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ৩৬ কোটি মার্কিন ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ। ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক নৌ-পথ পরিবহন প্রকল্প-১’ এর আওতায় এ ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।

 


দেশের ৯০০ কিলোমিটার দীর্ঘ অভ্যন্তরীণ নৌ-পথের নাব্যতা বৃদ্ধি এবং চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ নৌ-করিডোর ও সংযোগ রুটের উন্নয়নে এ অর্থ ব্যয় করা হবে।

এর ফলে দেশের ব্যস্ততম নৌ-পথগুলোতে সারা বছর নিরাপদে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের পথ অধিকতর সুগম  হবে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নৌ-পথে যাতায়াতের সময় যেমন কমে আসবে, তেমনই কমবে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের খরচও। এতে করে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে বাণিজ্য আরো বেগবান হবে।

বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা স্বল্প সুদে ৩৮ বছরে পরিশোধযোগ্য এ ঋণ সরবরাহ করবে। এতে গ্রেস পিরিয়ড থাকবে ৬ বছর। আর সার্ভিস চার্জ ০.৭৫ শতাংশ।

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের কার্যালয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দীন এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালে দায়িত্বরত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর কিমিয়াও ফান (Qimiao Fan) চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করেন।
 
প্রকল্পটির আওতায় পানগাঁওয়ে একটি নতুন কার্গো টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এছাড়া আশুগঞ্জ কার্গো টার্মিনালের মানোন্নয়ন করা হবে। এর পাশাপাশি সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর ও বরিশালে নতুন যাত্রী টার্মিনাল নির্মাণ এবং বিদ্যমান টার্মিনালগুলোর মানোন্নয়ন করা হবে।  

দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসরত দরিদ্র জনগণের সহায়তায় এ প্রকল্পের আওতায় চর এলাকাগুলোতে ১৪টি ল্যান্ডিং স্টেশনও নির্মাণ করা হবে।
এসব এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা নৌ-পথ।

ব্যবহারকারীদের স্বস্তি, নিরাপত্তার দিকটি মাথায় রেখে ও পয়ো:নিষ্কাশন ব্যবস্থার মানোন্নয়নের দিকে বিশেষ নজর রেখেই নির্মাণ করা হবে এসব টার্মিনাল ও ল্যান্ডিং স্টেশন। বিশেষ করে নজর দেওয়া হবে নারী, বয়স্ক মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে। এগুলোতে নারীদের জন্য থাকবে আলাদা টয়লেট ও বিশ্রামাগার।  

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর কিমিয়াও ফান (Qimiao Fan) বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক নদী সংযোগকে আরও উন্নত করার ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের সময় ও খরচ কমে আসার পাশাপাশি অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার মাধ্যমে এ প্রকল্পের সুফল ভোগ করবেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে রাতের বেলা ভ্রমণকালে নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে এসব অঞ্চলে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অনেক বেড়ে যাবে’।

‘এভাবে এ প্রকল্পের সুবাদে বাংলাদেশের রফতানি যেমন বাড়বে, তেমনিভাবে বাড়বে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যও’।

কিমিয়াও ফান বলেন, ‘এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা অনেকখানি বেড়ে যাবে। এর ফলে তারা নৌ-পথে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহনে আধুনিক ব্যবস্থা চালু করতে সক্ষম হবে। সেই সঙ্গে পরিচালনা ও আর্থিক দিকে অর্জিত হবে দীর্ঘমেয়াদি সুফল’।

ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড আইসিটি ওয়ার্ল্ডের ডিরেক্টর হোসে লুইস ইরগোয়েন (Jose Luis Irigoyen) বলেন, ‘নৌ-পথে পরিবহন অধিকতর জ্বালানি-সাশ্রয়ী। সড়কপথের চেয়ে নৌ-পথে ক্ষতিকর গ্রিনহাউজ গ্যাসের নি:সরণও কম হয়। এ কারণে এ প্রকল্পটি জলবায়ুর পরিবর্তনগত প্রভাব মোকাবেলায়ও ভূমিকা রাখবে’।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দীন বলেন, ‘নদীমাতৃক দেশ হিসেবে দেশের অভ্যন্তরীণ পরিবহন চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ নৌ-পথের ভূমিকা অপরিসীম। বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের চাহিদা পূরণ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের চাহিদা পূরণের সহায়ক শক্তি হিসেবে। নদীপথের গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সরকার এ খাতের উন্নয়নকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ নৌ-করিডোরের উন্নয়নে। কেননা, এ করিডোর দিয়েই অভ্যন্তরীণ নৌ-পথের বেশিরভাগ যাত্রী ও মালামাল পরিবহন করা হয়ে থাকে’।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৬
জেএম/ এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।