ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

জব্দ হচ্ছে হোটেল রেডিসনের ব্যাংক হিসাব

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৭
জব্দ হচ্ছে হোটেল রেডিসনের ব্যাংক হিসাব হোটেল রেডিসন

ঢাকা: অভিজাত হোটেলগুলোর ভ্যাট ফাঁকির মানসিকতা বেড়েই চলেছে। ক্রেতার কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করলেও সরকারের কোষাগারে তা জমা দিচ্ছে না এসব নামিদামি হোটেল। ফলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। ভ্যাট ফাকি দেওয়া এসব হোটেলের তালিকায় নাম আছে হোটেল রেডিসনের।তাদের নামে আদালতে মামলাও আছে।

হোটেল রেডিসন রেস্তোরাঁ-সেবার বিপরীতে পরিহারকৃত সম্পূরক শুল্ক ও মূসক বাবদ ৬ কোটি ৯২ লাখ ২৭ হাজার ৮০৬ টাকা ২০ পয়সার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। হাইকোর্টের দায়ের করা আপিলের রায়েও হেরে গেছে রেডিসন।

তাই ফাঁকি দেওয়া সম্পূরক শুল্ক ও মূসক-এর অর্থ এখন সুদসহ পরিশোধ করতে হবে রেডিসনকে।  

এজন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের(এনবিআর)বৃহৎ করদাতা ইউনিট(এলটিইউ)থেকে ২৮ আগস্ট একটি নোটিশও দেয়া হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ফাঁকি দেয়া অর্থ পরিশোধ না করলে রেডিসন হোটেলের ব্যাংক হিসাব জব্দ করবে রাজস্ববোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরসূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

এনবিআর-এর বৃহৎ করদাতা ইউনিট(এলটিইউ)সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের জুলাই থেকে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে রেডিসন হোটেল সেবার বিপরীতে উক্ত টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। আর এই ভ্যাট ফাঁকির বিষয়টি  উৎঘাটিত হওয়ায় ২০০৯ সালের ১০ জুন হোটেলটির বিরুদ্ধে দাবিনামা জারি করে বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)। তখন সেই দাবিনামার বিরুদ্ধে হোটেল রেডিসন হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে। আর সেই রিট পিটিশনের বিপরীতে ২০১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর এনবিআরের পক্ষে রায় দেয় হাইকোর্ট। তখন হোটেল রেডিসন হাইকোর্টের রায়ের বিপরীতে আপিল বিভাগে আপিল করে। ১৩ জুলাই উচ্চ আদালত সেই আপিলের রায়ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পক্ষেই দিয়েছে।
 
অন্যদিকে হোটেল ও রেস্তোরাঁর ব্যাখায় বলা আছে, খাদ্য ও পানীয় সরবরাহকালে যদি হোটেল বা রেস্তোরাঁয় মদ জাতীয় পানীয় সরবরাহ করা হয় বা কোনো ফ্লোর শো করা হয় সেক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক আরোপিত হবে। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী রেস্তোরাঁতে মদ জাতীয় পানীয় সরবরাহ বা ফ্লোর শো’র ওপর সম্পূরক শুল্ক আরোপিত রয়েছে। সেহেতু কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক হোটেল ও রেস্তোরাঁতে উভয় ধরনের সেবা প্রদত্ত হলে সেবার বিনিময়ে প্রাপ্ত পণ্যের উপর সম্পূরক শুল্ক পরিশোধযোগ্য হবে।  

আরও জানা গেছে, হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক হোটেল রেডিসন ২০০৫ সালের জুলাই থেকে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পযন্ত সময়ে রেস্তোরাঁ সেবার বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ৬ কোটি ১ লাখ ৯৮ হাজার ৯২ টাকা ৩৮ পয়সা ও মূসক বাবদ ৯০ লাখ ২৯ হাজার ৭১৩ টাকা ৮২ পয়সার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।  

এছাড়া বৃহৎ করদাতা ইউনিট অর্থ পরিশোধে মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৫৬ এবং একই আইনের অধীনে প্রণীত বিধিমালা, ১৯৯১ এর বিধি ৪৩ অনুযায়ী প্রথম নোটিশটি ২৮ তারিখ হোটেল রেডিসনের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে পাঠিয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক ফাঁকি দেওয়া অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। অন্যথায় তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।  

এ বিষয়ে বৃহৎ করদাতা ইউনিটের(এলটিইউ)কমিশনার মো. মতিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, হোটেল রেডিসন রেস্তোবাঁ সেবার বিপরীতে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি যদি এখন ফাঁকি দেওয়া অর্থ সুদসহ পরিশোধ না করে তাহলে তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯০০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৭
এসজেড/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।