ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মোবাইল ব্যাংকিং: মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ চায় গ্রামীণফোন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৭
মোবাইল ব্যাংকিং: মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ চায় গ্রামীণফোন গ্রামীণফোনের লোগো

ঢাকা: মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লাইসেন্স পেতে বাংলাদেশ ব্যাংকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ চায় বেসরকারি মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবকে একটি চিঠি দিয়ে এই হস্তক্ষেপ চেয়েছে মোবাইল অপারেটরটি।

মোবাইল অপারেটরদের মোবাইল ব্যাংকিং করার অনুমোদন না দেওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জানিয়ে দেওয়ার পর গ্রামীণফোন সম্প্রতি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ইউনুসুর রহমানের কাছে ওই চিঠি দেয়।
 
গ্রামীণফোনের হেড অব ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস রাশেদা সুলতানা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, বালাদেশে উদ্ভাবন ও ব্যাপক বিনিয়োগ আনার পথ প্রশস্ত করতে গ্রামীণফোন বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারের (পিএসপি) যে আবেদন করেছে, তা দ্রুত অনুমোদন দিতে আপনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছে।


 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনুসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। তারা সব সময় স্বাধীনভাবে কাজ করে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সেখানে কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না।
 
আবার অনুমোদন না পেয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করাও অনৈতিক বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন সাবেক গর্ভনর।
 
নিত্যদিনের ছোট ছোট সেবার মূল্য পরিশোধ অধিকতর সহজ ও  নিরাপদ করতে চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল পিএসপি নামে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানের অনুমোদন চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করে গ্রামীণফোন।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই আবেদনে কোনো সাড়া না দেওয়ায় গ্রামীণফোন এবার একই আবেদন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে। অপারেটরটি তাদের আবেদনে সেবা প্রদানের অনুমোদন পেতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের হস্তক্ষেপও চেয়েছে।
 
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে,  ১৯৯৭ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করা গ্রামীণফোন বর্তমানে তার গ্রাহকদের ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট ও ট্রেনের টিকিটি ক্রয় সেবা দিচ্ছে।
 
এদিকে বাংলদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বলেছেন, গ্রামীণফোন ও বাংলালিংকসহ কোনো মোবাইল অপারেটরই মোবাইল ব্যাংকিং করতে পারবে না। তাদের লাইসেন্স দেওয়া হবে না। কারণ তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের অধিভুক্ত নয়। তাদের নিয়ন্ত্রণ করে বিটিআরসি। মোবাইল অপারেটরদের ব্যাংকিং সেবার অনুমতি দেয়ার আগে আমাদের ব্যাংকগুলোর স্বার্থ দেখতে হবে।

তিনি আরও বলেছেন, বর্তমানে দেশে সরকারি-বেসরকারি ও বিদেশি মিলে ৫৬টি ব্যাংক রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২৫টি ব্যাংককে মোবাইলে আর্থিক সেবা দেওয়ার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৮টি ব্যাংক তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের এসব কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে।
 
ডেপুটি গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তফসিলি ব্যাংকগুলোকে কঠোরভাবে মনিটর করে। ফলে এদের মাধ্যমে সন্ত্রাসে অর্থায়নের সুযোগ থাকে না। কিন্তু মোবাইল অপারেটরের ক্ষেত্রে এ মনিটরিং কঠিন। তাই মোবাইল অপারেটদের ব্যাংকিং সেবার লাইসেন্স দেওয়া হবে না।
 
গ্রামীণফোনের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নেতিবাচক সিদ্ধান্ত জানানোর পর অপারেটরটির এভাবে সরকারের ওপর মহলে যোগাযোগকে ভালোভাবে দেখছেন না অর্থনীতিবিদরা। বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুমোদন না পেয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের হস্তক্ষেপ চাওয়াকে অনৈতিক বলে মনে করছেন অনেকে।

এ বিষয়ে সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশ ব্যাংক। তারা অনুমোদন না দিলে অন্য কোথাও যোগাযোগ করে ব্যাংকিং করা যায় না।
 
এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে গ্রামীণফোনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (এক্সটার্নাল কমিউনিকেশনস) মোহাম্মাদ হাসান বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) জানাতে পারবো।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৭
এসই/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।