ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিমা দাবি পরিশোধ না করায় পদ্মা লাইফকে শোকজ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭
বিমা দাবি পরিশোধ না করায় পদ্মা লাইফকে শোকজ

ঢাকা: ১৫৫জন শ্রমিকের পরিবারকে বিমা দাবির টাকা পরিশোধ না করায় পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সকে শোকজ করেছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়শনের (বিকেএমইএ) আবেদনের প্রেক্ষিতে গত সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) আইডিআরএ কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাকে শোকজ করে।  

আইডিআরএ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিকেএমইএ’র সদস্যভুক্ত কারখানার মৃত ১৫৫ জন শ্রমিকের পরিবারকে বিমা দাবির টাকা দিতে গড়িমসি করায় গত ১৮ জুলাই আইডিআরএ’র কাছে অভিযোগ করে বিকেএমইএ। নির্ধারিত সময়ের ২ বছর পার হলেও পদ্মা লাইফ টাকা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ বিকেএমইএ’র।

আইডিআরএ’র পরিচালক কামরুল হক মারুফ স্বাক্ষতির চিঠিতে ১৫৫টি মৃত্যুদাবির বিপরীতে বিমা অংকের টাকা সুদসহ পরিশোধ করতে পদ্মা লাইফকে আদেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সাত কার্যদিবসের মধ্যে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য আইডিআরএ-এ পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিকেএমইএ'র অভিযোগে বলা হয়, মৃত শ্রমিকদের দাবি উত্থাপন করা হলেই নানা ধরনের অবান্তর, অযৌক্তিক ও বেআইনি প্রশ্ন তুলে ব্যাখ্যা চেয়ে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে হয়রানি করছে পদ্মা ইসলামী লাইফ। দাবি নিষ্পত্তি না করে অসৎ উদ্দেশ্যে ঝুলিয়ে রেখে গ্রাহকের প্রাপ্য টাকা না দেওয়ার পাঁয়তারা করছে তারা।

অথচ মৃত শ্রমিকের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিকভাবে সুবিধা দিতেই গ্রুপ বিমার এ চুক্তি করা হয়েছে। বিমা কোম্পানিটির অসহযোগিতা ও বেআইনি কর্মকাণ্ডের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এখনও কোনো টাকা পায়নি।

সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ১১ এপ্রিল পদ্মা ইসলামী লাইফের সঙ্গে বিমা চুক্তির মাধ্যমে বিকেএমইএ'র সদস্যভুক্ত সকল ফ্যাক্টরির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের জীবন গ্রুপ বিমার আওতাভুক্ত হয়। যা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর। এরপর ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি আরেকটি চুক্তি করা হয়, যা ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর।

উভয় বিমা চুক্তির শর্ত অনুসারে, বিকেএইএ’র প্রতিটি সদস্য কারখানার জন্য বছরে সর্বোচ্চ ২০ জন শ্রমিকের মৃত্যু দাবি পরিশোধযোগ্য। এক্ষেত্রে যেকোন সদস্যের যে কোন প্রকার মৃত্যুতে ২ লাখ টাকা বিমা দাবি পরিশোধ করা হবে বলে চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়। দুর্ঘটনার কারণে পঙ্গুত্ব বরণ করলেও একই সুবিধা দেওয়া শর্ত রয়েছে। তবে ঘোষিত বা অঘোষিত যুদ্ধ এবং আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুকে বিমার আওতার বাইরে রাখা হয়।

যেসকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক বিকেএমইএ'র সদস্যভুক্ত নিটওয়ার ফ্যাক্টরির অধীনে পূর্ণকালীন চাকরিতে নিয়োজিত, সুস্থ এবং যাদের বয়স পরবর্তী জন্মদিনে ৬০ বছর উত্তীর্ণ হবে কেবল তাদের জীবন এই চুক্তিনামার আওতাভুক্ত রাখা হয়। তবে কোনো সদস্যের বয়স ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর চুক্তিনামার আওতায় আসবে না বলে বিমা চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়।

২০১৫ সালের বিমা চুক্তিতে প্রতি সদস্যের বিমাকৃত অর্থের হাজার প্রতি বার্ষিক প্রিমিয়াম হার নির্ধারণ করা হয় ৮ টাকা ৭৫ পয়সা এবং প্রতি ইউনিটের বার্ষিক প্রিমিয়াম ৩৫ হাজার টাকা। এর আগে ২০১৪ সালের চুক্তিতে বিমাকৃত অর্থের প্রতি হাজার টাকার জন্য বার্ষিক প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা হয় ৬ টাকা ২৫ পয়সা হারে। এ ক্ষেত্রে প্রতি ফ্যাক্টরির জন্য বার্ষিক প্রিমিয়াম নির্ধারিত হয় ২৫ হাজার টাকা। কোনো ফ্যাক্টরির সদস্যদের তালিকা সরবরাহের পর প্রিমিয়াম পরিশোধের প্রক্রিয়ার জন্য বিকেএমইএ-কে ২০ থেকে ২৫ দিন সময় দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭
এমএফআই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।