ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৪০ কোটি ডলার পেতে পারে বাংলাদেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৭
রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৪০ কোটি ডলার পেতে পারে বাংলাদেশ

ঢাকা: রোহিঙ্গা শরণার্থীদের যেকোনো ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির (আইডিএ) আওতায় ৪০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা পেতে পারে বাংলাদেশ।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সংস্থার ঢাকা কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদন প্রকাশ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান।

তিনি জানান, ২০০ কোটি ডলার রয়েছে আইডিএ ‘রিফিউজি ফান্ডে’।

যেকোনো দেশ প্রয়োজনে তিন বছরে সর্বোচ্চ ৪০ কোটি ডলার ঋণ পেতে পারে। এই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশও ৪০ কোটি ডলার রোহিঙ্গাদের সহায়তায় পেতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান।

তিনি বলেন, এই অর্থ শরণার্থীদের নানা উন্নয়নে ব্যবহার করা যেতে পারে। শরণার্থীদের জন্য এটা শতভাগ অনুদান, কোনো ঋণ দিতে হবে না।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন্যদেশ ও উন্নয়ন সহযোগীদের মতো বিশ্বব্যাংকও রোহিঙ্গা নিয়ে ভাবছে ও পর্যবেক্ষণ করছে। বিশ্ববাসীর মতো আমরাও রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত।
 
ফান বলেন, দীর্ঘ মেয়াদি যে সাপোর্ট দরকার সেটা বিশ্বব্যাংক করবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য বিশ্বব্যাংক খুবই সতর্ক। এই অবস্থা গভীরভাবে বিশ্বব্যাংক পর্যবেক্ষণ করছে, অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের মতো। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ দরকার রোহিঙ্গা বিষয়ে। এজন্য যেকোনো সাপোর্ট দিতে বিশ্বব্যাংক প্রস্তুত।

‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদনে জানানো হয়, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৪ শতাংশ হবে । এই প্রবৃদ্ধি হবে মূলত শিল্প ও সেবা খাত নির্ভর।
 
সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, মানসম্পন্ন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের মূল চ্যালেঞ্জগুলো হলো অবকাঠামো উন্নয়ন। এছাড়া তৈরি পোশাক খাতও আরও উন্নত করতে হবে। এর পাশাপাশি শ্রমিকদের নিরাপত্তাও দিতে হবে। কারণ পোশাকখাতে অনেক নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।

‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদনে চলতি বছরের বাজেট বাস্তবায়নে বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত চাপ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। যেমন, খাদ্যে ভর্তুকি, রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সংস্থান। এ ছাড়া দেশের অর্থনৈতিক ঝুঁকির বিষয়গুলো হলো নির্বাচনের আগের বছর হওয়ায় চলতি বছরে বড় ধরনের সংস্কারের সম্ভাবনা কম, রপ্তানি কমে যাওয়া ও রেমিট্যান্স প্রবাহে দুর্বলতা।
 
সংস্থার প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের দাম উঠা-নামা বিপরীতমুখী। ইদানিং খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের দাম কমেছে, এখানে চাহিদা বড় একটা ভূমিকা রাখতে পারে।  

চালের দাম বৃদ্ধি সম্পর্কে তিনি বলেন, এ বিষয়ে অনেকে সরকারকে দুষছেন, অনেকে বলছেন ব্যবসায়ীদের কারসাজি। সবগুলো যে অসত্য তা আমি বলছিনা, ব্যাখ্যাগুলো অতি সরল। তবে বন্যার কারণে চালের দাম বেড়েছে। সব মিলিয়ে বন্যায় ২০ লাখ টন চালের উৎপাদন কমেছে। চাল কেনার সিদ্ধান্তহীনতায়ও দাম বেড়েছে। এর পাশাপাশি চালের দাম বাড়ার জন্য গুজবও দায়ী। ভারত চাল রফতানি করবে না এই গুজবে দাম বেড়েছে। এসবগুজবে ব্যবসায়ীরা মজুদ বাড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ক্যাপিটাল জিডিপি গ্রোথ বেড়েছে কিন্তু কর্মসংস্থান কমেছে। এটার কি ব্যাখ্যা হতে পারে। আমাদের সার্বিকভাবে শিল্পখাতে শ্রম ঘণ্টা কমছে। রানা প্লাজা ধসের পরে পোশাক খাতে সেইভাবে আশা দেখা যাচ্ছে না। আমাদের ইদানিংকালে যে ট্রেড পলিসি, সেখানে দেশীয় ভিত্তিক বাজার ব্যবস্থা বেড়েছে। শিল্প কারখানা যেভাবে বেড়েছে সেইভাবেও কর্মসংস্থান হয়নি। ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে এটা নিয়ে কোনো বিতর্ক নাই। আমরা শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি নিয়ে এগুচ্ছি।

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে জাহিদ বলেন, জাতীয় পর্যায়ে কেমন চাপ পড়বে বলা যাবে না, তবে স্থানীয়ভাবে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ২২২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৭
এমআইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।