ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ঢাকা ওয়াসাকে দিতেই হবে ১৭৬ কোটি টাকা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৮
ঢাকা ওয়াসাকে দিতেই হবে ১৭৬ কোটি টাকা

ঢাকা: রাজধানীর পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ ঢাকা ওয়াসার ফাঁকি দেওয়া ১৭৬ কোটি ‍টাকার ভ্যাট দিতেই হবে। আর এই ফাঁকিকৃত অর্থ অনতিবিলম্বে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে সোমবার (২৯ জানুয়ারি) প্রতিষ্ঠানটিকে চূড়ান্ত চিঠি দিয়েছে বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, ঢাকা ওয়াসা ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে মূসক ও উৎসে মূসক কর্তনবাবদ সরকারের ১৭৬ কোটি ৭৮ লাখ ৯৩ হাজার ১৭৯ টাকা ২৫ পয়সার ভ্যাট ফাঁকি দেয়।

আর এ অর্থ আদায়ে প্রতিষ্ঠানটিকে মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৫৫ এর উপধারা (৩) অনুযায়ী চূড়ান্ত দাবিনামা পাঠানো হয়েছে।  

চূড়ান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, ঢাকা ওয়াসা ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট আয় করেছে ৮৫৬ কোটি ৩৮ লাখ ৯২ হাজার ৬৯৭ টাকা। এর ওপর ১৫ শতাংশ হারে মূসকের পরিমাণ ১২৮ কোটি ৪৫ লাখ ৮৩ হাজার ৯০৪ টাকা ৫৫ পয়সা। আর দাখিলপত্রে দেখিয়েছেন ১০৭ কোটি ১৬ লাখ ৫৪ হাজার ৭৪৮ টাকা। অর্থাৎ ফাঁকি দিয়েছেন ২১ কোটি ২৯ লাখ ২৯ হাজার ১৫৬ টাকা ৫৫ পয়সা।

২০১৪-১৫ অর্থবছরে আয় করেছেন ৯১১ কোটি ১৫ লাখ ৫২ হাজার ৯১২ টাকা। আর ১৫ শতাংশ হারে মূসকের পরিমাণ ১৩৬ কোটি ৬৭ লাখ ৩২ হাজার ৯৩৬ টাকা ৮০ পয়সা। দাখিল দেখিয়েছেন ১১৩ কোটি ৮৮ লাখ ২৮ হাজার ৮৩২ টাকা। ফলে ফাঁকি দিয়েছেন ২২ কোটি ৭৯ লাখ ৮ হাজার ১০৪ টাক। সবমিলিয়ে মূসকে কম দেখিয়ে ফাঁকি দিয়েছেন ৪৪ কোটি ৮ লাখ ৩৩ হাজার ২৬১ টাকা ৩৫ পয়সা।

অন্যদিকে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে উৎসে মূসক কর্তনযোগ্য আয় করেছেন ৭২৮ কোটি ৭৫ লাখ ১৯ হাজার ৭৮৫ টাকা। ১৫ শতাংশ হারে মূসকের পরিমাণ ৭৫ কোটি ১৫ লাখ ২৫ হাজার ৯৬৩ টাকা ৩ পয়সা। দাখিলপত্রে দেখিয়েছেন ২৩ কোটি ৪১ লাখ ২৩ হাজার ৬১০ টাকা। ফলে ‍উৎসে মূসক ফাঁকি দিয়েছেন ৫১ কোটি ৭৪ লাখ ২ হাজার ৩৫৩ টাকা ৩ পয়সা।

আর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে উৎসে মূসক কর্তনযোগ্য আয় করেছেন ১ হাজার ১৬০ কোটি ৮১ লাখ ৬৪ হাজার ৩৩৫ টাকা। ১৫ শতাংশ হারে উৎসে মূসকের পরিমাণ ১০১ কোটি ২৩ লাখ ৮৫ হাজার ৮০৩ টাকা ৬৫ পয়সা। দাখিলপত্রে দেখিয়েছেন ২০ কোটি ৩১ লাখ ২৮ হাজার ২৩৮ টাকা ৭৮ পয়সা। ফলে ফাঁকি দিয়েছেন ৮০ কোটি ৯২ লাখ ৫৭ হাজার ৫৬৪ টাকা ৮৭ পয়সা। সবমিলিয়ে উৎসে মূসক ফাঁকি দিয়েছেন ১৩২ কোটি ৬৬ লাখ ৫৯ হাজরি ৯১৭ টাকা ৯০ পয়সা।

ফলে এনবিআরের অডিট রিপোর্টে বেরিয়ে এসেছে ঢাকা ওয়াসা ২০১৩-১৪ এবং ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে সরকারের ১৭৬ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ১৭৯ টাকা ২৫ পয়সার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। যা সরকারি প্রতিষ্ঠানটির এরূপ কার্যকলাপ মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৬ এর উপধারা (৩), উপধারা (৪ক), উপধারা (৪খ), (৪ঘ), (৪ঙ) এবং ধারা ৩১, ৩৫ ও মূল্য সংযোজন কর বিধিমালা, ১৯৯১ এর বিধি ১৮(ক), ১৮(খ) এবং বিধি ২২,২৩ ও ২৪ বর্ণিত অপরাধ।

এ বিষয়ে বৃহৎ করদাতা ইউনিটের কমিশনার মো. মতিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা ওয়াসা মূসক ও উৎসে মূসকের টাকা দাখিলপত্রে কম দেখিয়েছেন। আবার গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা আদায় করেও তারা সরকারি কোষাগারে জমা দেননি। যা আইন লঙ্ঘন এবং অপরাধ। ফলে প্রতিষ্ঠানটির ফাঁকি দেওয়া ভ্যাট দ্রুত সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া জন্য বলা হয়েছে। যদি জমা না দেয় তাহলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৮
এসজে/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।