ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

জবাবদিহির আওতায় আসছেন প্রকৌশলীরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৮
জবাবদিহির আওতায় আসছেন প্রকৌশলীরা

ঢাকা: সরকারি সেবা কার্যকর ও দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারি উন্নয়ন ও নির্মাণ কাজে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীদের জবাবদিহির আওতায় আনা হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না করা, ব্যয় বৃদ্ধির কারণ, প্রকল্পের যথার্থতা ও উপযোগিতা নিশ্চিত করা, দরপত্র ও চুক্তিপত্রে বর্ণিত নকশা ও স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করতে হবে প্রকৌশলীদের।

এছাড়াও টেন্ডার প্রক্রিয়ার কোনো পর্যায়ে অনিয়ম, দুর্নীতি যাতে না হয় সেজন্য অভিযোগ কেন্দ্র খোলা এবং ক্রয় কার্য যথাযথ হচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করতে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক শক্তিশালী টিম গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

এসব বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগের আওতাধীন প্রকৌশল কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, সংস্থার প্রধানদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে।

২৭ ফেব্রুয়ারি দুদকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় সভায় উল্লেখিত ব্যক্তিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

দুদক বলছে, একটি দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতির জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের প্রকৌশল দপ্তর বা সংস্থাসমূহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে।

দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে শৃঙ্খলা আনয়ন এবং ফলদায়ক করার জন্য উল্লেখিত প্রকৌশল দপ্তরসমূহের দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রতিরোধ করে সুশাসন নিশ্চিত করা একান্ত আবশ্যক। এজন্য সরকারের প্রকৌশল সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থাসমূহ প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিয়ম সভা করতে চায় দুর্নীতি দমন কমিশন।

ওই সভায় প্রকৌশলীদের জন্য একটি জবাবদিহিমূলক কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরবে দুদক। কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না করে সময় ও ব্যয় বৃদ্ধির কারণ উদঘাটন; প্রকল্প নির্বাচন করার সময় প্রাক্কলন প্রণয়ন এবং টেকিনিক্যাল ও ফিনান্সিয়াল মূল্যায়নের ক্ষেত্রে জ্ঞান সম্পন্ন নির্ভরযোগ্য বিশেষজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত করার যৌক্তিকতা যাচাই; প্রকল্প নির্বাচনের ক্ষেত্রে উক্ত প্রকল্পের যথাযথতা এবং উপেযোগিতা রয়েছে কিনা তা স্থানীয় ব্যবহারকারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রত্যাশী সংস্থার মাধ্যমে নিশ্চিত করা এবং দরপত্র ও চুক্তিপত্রে বর্ণিত নকশা ও স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন নিশ্চিত করা; প্রকল্প শেষ হওয়ার পর রক্ষণাবেক্ষণের নামে এবং মেরামত কাজে নিম্নমানের মালামাল যাতে ব্যবহার না হয় সে বিষয়ে তদারকি করা এবং প্রকল্পের নির্মাণ, সংস্কার, মেরামদ কার্যাদি সম্পন্নের পরবর্তী একটি যৌক্তিক সময় পর্যন্ত উক্ত কাজের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিজ খরচে বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারের ওপর ন্যস্ত করা; টেন্ডার প্রক্রিয়ার কোনো পর্যায়ে অনিয়ম, দুর্নীতি যাতে না হয় সেজন্য প্রধান কার্যালয়ে একটি টেলিফোনিক অভিযোগ কেন্দ্র রাখা এবং ক্রয় কার্য যথাযথ হচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করার মন্ত্রণালয়ভিত্তিক শক্তিশালী টিম গঠন করা; নিম্নমানের মালামাল সরবরাহরোধে শিডিউল রেটের সঙ্গে বাজারমূল্যের সামঞ্জস্য বজায় রাখা; প্রকল্পের মেয়াদ তিনবছর বা অধিক হলে সে প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা; প্রকল্পের কাজে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রকল্পের অংশীদারদের সঙ্গে গণশুনানির ব্যবস্থা করা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে সরকার বিভিন্ন সময় বড় ধরনের অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এখনো বাস্তবায়নাধীন আছে আরও অনেক প্রকল্প। এসব প্রকল্প গ্রহণের সময় ও ব্যয় উল্লেখ করা হয়। আবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শিডিউলে উল্লেখিত মানের সামগ্রী ব্যবহার করেন না। তবে শুরুর কিছুদিন পরই প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বাড়তে থাকে বছরের পর বছর। এসব কাজের সঙ্গে বেশিভাগ ক্ষেত্রেই প্রকৌশলীদের হাত রয়েছে। দুদক এ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রকৌশলীদের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৮
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।