ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রমজানের আগে স্থিতিশীল বাজার চান ক্রেতারা

মনি আচার্য্য, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৮
রমজানের আগে স্থিতিশীল বাজার চান ক্রেতারা মোহাম্মদপুরের কাঁচাবাজার। ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: দীর্ঘদিন ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার দর অস্থিতিশীল। কখনো পেঁয়াজের দাম কখনো বা বাড়ে চালের দাম। আবার কখনো অস্থিতিশীল সবজির বাজার। এ অবস্থার অবসান চান ক্রেতারা, আসছে রমজান মাসের আগেই স্থিতিশীল বাজার দেখতে চানা তারা।

শুক্রবার (৬ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজারের ক্রেতারা বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এ দাবি জানান।

বিগত বছর থেকে বেশ কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার দর নিয়ে অস্বস্তিতে ছিলেন ক্রেতারা।

নতুন বছরে এসব পণ্যের দাম স্বাভাবিকের আশ্বাস বিক্রেতারা দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বরঞ্চ আরো বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে। ক্রেতারা আশঙ্কা করছেন রমজান মাসকে সামনে রেখে বিক্রেতারা আবারো দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

ক্রেতাদের আশঙ্কার সত্যতাও পাওয়া গেছে বাজারে। রমজান শুরুর আগেই মাংস ও চিনির বাজার দরে ঊর্ধ্বগতির হাওয়া লেগেছে। আর এর সঙ্গে তো দীর্ঘদিন ক্রেতাদের অস্বস্তিতে ফেলা চালের বাজার দর আছেই!

সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকা, প্রতি কেজি খাসির মাংস ৭৮০-৮০০ টাকা, প্রতি কেজি বয়লার মুরগি ১৫০-১৬০ টাকা, সোনালি মুরগি প্রতি পিস সাইজ অনুযায়ী ১৬০-২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৫৬ টাকা কেজি দরের চিনি এখন ৪ টাকা মূল্যবৃদ্ধি হয়ে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে চালের বাজারের আগুন কমার কোনো লক্ষণ নেই। দীর্ঘদিন ধরেই চালের বাজার দরে এমন ঊর্ধ্বগতি চলছে। সর্বশেষ খুচরা মূল্য অনুযায়ী কেজি প্রতি নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৩ টাকা, ১ নম্বর মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা, সাধারণ মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ টাকা, বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা ও স্বর্ণা এবং পারিজা ৪৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছ।

রমজান মাস শুরু হওয়ার আগে এসব পণ্যের দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই বলে জানা গেছে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে। তবে রমজান চলাকালীন চালের দামের নতুন করে মূল্যবৃদ্ধি সম্ভাবনা নেই। কিন্তু অন্যসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

ধানমন্ডি-১৫ নম্বর কাঁচাবাজারের চাল, ডাল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বিক্রেতা সিদ্দিকুর বাংলানিউজকে বলেন, আমরাও চাই রমজানের আগে বাজার দর স্বভাবিক থাক। কিন্তু রমজানে কিছু কিছু পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে বলে দাম বেড়ে যায়। চিনি, ছোলা, ডাল ও বেসনের দাম রমজানে একটু বেশি ওঠানামা করে।

অন্যদিকে সবজির বাজার এখনো স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি টমেটো ২৫ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, সিম ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, ধনিয়াপাতা ১০০ টাকা, লাউ প্রতিপিস ২০ টাকা, গাজর ২৫ টাকা, আলু ২০ টাকা, ঢেরস ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, করলা ৪০ টাকা প্রতি জোড়া বাঁধাকপি ও ফুলকপি ২৫ টাকা, লাল শাক, পালং শাক ও ডাটা শাক ৩ আঁটি ২০ টাকা।

মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা সুমন বাংলানিউজকে বলেন, সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে বাজারে, তাই দামও স্বাভাবিক। আশা করি রমজানের আগে ও পরে দাম একই থাকবে সবজির। তবে অন্য পণ্যের দাম বাড়লে সবজিতে এর কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে।

পেঁয়াজ, আদা ও রসুনসহ  অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার দর এখন পর্যন্ত কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে। সর্বশেষ বাজার দর অনুযায়ী, দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৪০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কেজি প্রতি আমদানি করা রসুন ১০০ টাকা, দেশি রসুন ৬০, দেশি মসুর ডাল ১০০ টাকা ও আমদানি করা মসুর ডাল ৭০ টাকা, ছোলা ৯০ টাকা ও আদা ৮০ কেজি করে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া মাছের দামও রয়েছে গত সপ্তাহের মতোই। প্রতি কেজি কাতল মাছ ২২০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০ টাকা, রুই ২৩০-২৮০ টাকা, সিলভারকার্প ১৩০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ টাকা, শিং ৪০০ টাকা ও চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৮
এমএসি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।