ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

৫ দিন ছুটি শেষে বেনাপোল বন্দরে ব্যস্ততা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৯ ঘণ্টা, মে ৩, ২০১৮
৫ দিন ছুটি শেষে বেনাপোল বন্দরে ব্যস্ততা ট্রাক থেকে পণ্য নামাচ্ছেন শ্রমিকরা। ছবি: বাংলানিউজ

বেনাপোল (যশোর): সাপ্তাহিক ও সরকারি পাঁচদিন ছুটি শেষে যশোরের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান স্থলবন্দর বেনাপোলে আবারও কর্ম-ব্যস্ততা ফিরে এসেছে। পণ্য খালাসে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও বন্দরের কমকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকেরা।

বৃহস্পতিবার (মে ০৩) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এ পথে ভারতের পেট্রাপোল ও বেনাপোল বন্দরের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য শুরু হয়।

বেনাপোল স্থলবন্দর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত কাস্টমস, বন্দর, সিঅ্যান্ডএফ, ট্রান্সপোর্ট, ব্যাংক ও ইন্স্যুরেন্স অফিস খুলেছে।

পণ্য ছাড়করণের কাজে কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

অফিস খুলেছে বন্দরের পণ্য খালাসের সঙ্গে জড়িত থাকা শ্রমিক ইউনিয়নগুলো। পাঁচদিনের ছুটিতে দিন আনা দিন খাওয়া শ্রমিকরা অনেকটা অর্থ কষ্টের মধ্যে পড়েছিলেন। এখন পণ্য খালাস শুরু হওয়ায় শ্রমিকদের চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক ফুটে উঠেছে। বন্দরে পণ্যবাহী গাড়ি।  ছবি: বাংলানিউজএদিকে প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর থেকে আমদানি হওয়া পণ্য থেকে প্রায় ২০ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ হয়। সেক্ষেত্রে গত পাঁচদিন ছুটির কবলে পড়ায় প্রায় ১শ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ থেকে পিছিয়ে পড়ছে সরকার। লম্বা ছুটির পর অফিস খোলায় পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে ট্রাক ভাড়া অন্য সময়ের চেয়ে ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় ব্যবসায়ীরা পণ্য খালাস নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়তে দেখা যায়।  

বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক বাংলানিউজকে জানান, লম্বা ছুটির ফাঁদে পড়ে বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছিল। এতে বন্দর থেকে পণ্য ছাড়তে না পেরে দেশের বিভিন্ন শিল্প-প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কাজ ব্যাহক হয়েছে। টানা ছুটি থাকায় ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে জরুরি পণ্য ছাড়করণে বন্দরে ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার বিকল্প ব্যবস্থা সচল রাখার দরকার রয়েছে বলে মন্তব্য করেন সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক।

জানা যায়, অর্থনীতিতে বেনাপোল বন্দরের ভূমিকা অপরিসীম। ভারত থেকে আমদানি পণ্যের ৭৫ শতাংশ আসবে না পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে। বেনাপোল থেকে ভারতের বাণিজ্যিক শহর কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। মাত্র আড়াই থেকে তিন ঘণ্টায় একটি ট্রাক কলকাতা থেকে পণ্য নিয়ে বন্দরে পৌঁছাতে পারে। তেমনি একই সময়ে বেনাপোল বন্দর থেকে পণ্যবাহী ট্রাক পৌঁছায় কলকাতায়। এ কারণে আমদানিকাদের বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহারে বরাবরই আগ্রহ বেশি। প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৩শ থেকে সাড়ে ৩৫০ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য ভারত থেকে আমদানি হয়। ভারতে রফতানি হয় দেড়শ থেকে ২শ ট্রাক পণ্য। এছাড়াও শিল্প-প্রতিষ্ঠানের কাঁচমালের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আসে এই বন্দর দিয়ে। প্রতিবছর এ বন্দরে আমদানি পণ্য থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা সরকার রাজস্ব আহরণ করে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম বাণিজ্য সচলের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, যারা ছুটিতে গিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে তারা কর্মস্থলে ফিরে যথারীতি অফিসিয়াল কার্যক্রম শুরু করেছেন। এছাড়া ব্যবসায়ীরা যাতে বন্দরে আটকে থাকা পণ্যগুলো দ্রুত খালাস করতে পারেন সেজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা মে ০৩, ২০১৮
এজেডএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।