ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রমজান মানেই ব্যবসায়ীদের পোয়া বারো

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৮ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৮
রমজান মানেই ব্যবসায়ীদের পোয়া বারো দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি

বাগেরহাট: রমজানের আগে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সরকারের নানা উদ্যোগ থাকলেও মফস্বল শহরগুলোতে নেই কোনো তদারকি।

রমজান এলে প্রতিবছরই ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন দ্রব্যমূল্য বাড়াতে। আর এতে অসহায় হয়ে পড়েন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা।

তবে খেটে খাওয়া মানুষেরা অসহায় হলেও পোয়া বারো হয় ব্যবসায়ীদের।

রমজানের আগের দিন থেকেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে শাক-সবজি, মাছ-মাংসসহ সব নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম। প্রশাসনের বাজার মনিটরিংও ভেস্তে যায় ব্যবসায়ীদের কৌশলের কাছে। আর রোজাদার ব্যক্তিরা সবকিছু সহ্য করে অতিরিক্ত মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদী কিনে নিয়ে যান বাড়িতে। আর এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ ঝাড়ছেন সাধারণ মানুষ।

শুক্রবার (১৮ মে) বিকেলে সরেজমিনে বাগেরহাট কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, দুইদিন আগে যে পেঁয়াজের দাম ছিল ৩২ টাকা কেজি তা এখন কিনতে হচ্ছে ৪৫ টাকা, ৫৫ টাকা কেজির রসুন ৭০ টাকা, ৩০ টাকার বেগুন ৬০ টাকা, ৪০ টাকার শসা ৭০ টাকা, ২০ টাকার পেঁপে ৫০ টাকা, ৪০ টাকার কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুদি দোকানে দেখা যায়, কেজি প্রতি চিনির দাম বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা, বেড়েছে মাংসের দামও। ৪৪০ টাকার গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, ব্রয়লারও পিছিয়ে নেই। ১২০ টাকার ব্রয়লার এখন ১৫০ টাকা এবং ১৬০ টাকার কক ২২০ টাকা।

মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে আশঙ্কাজনক হারে। সাধারণ মানুষ মাছের কাছেও যেতে পারছে না। ২৬০ টাকার হরিনা-চামি-চামটি চিংড়ি এখন ৪২০ টাকা।

এছাড়া রুই, কাতল, টেংরা, ইলিশ, পাবদাসহ বিভিন্ন প্রজাতিসহ সাগরের মাছের দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। অধিকাংশ দোকানগুলোতে নেই কোনো মূল্য তালিকা। বাজার মনিটরিং করার জন্য বাজার কর্মকর্তার কোনো সদিচ্ছা নেই বলে অভিযোগ করেছেন সচেতন মহল।
 
সোহরাব হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজারে গিয়ে দ্রব্যমূল্যের দাম শুনে মাথা বিগড়ে যায়। মন চায় ঘর সংসার ছেড়ে বৈরাগি হয়ে যাই। ৭ জনের সংসারের প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

রিকশাচালক আনারুল শেখ বলেন, সারাদিন বৃষ্টিতে রিকশা চালাতে পারিনি। গতকালের ২শ’ টাকা ছিল পকেটে। এ নিয়ে ঢুকলাম বাজার করতে। সংসারের প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক বাজার করে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এরকমই অনুভুতি বেশিরভাগ ক্রেতার।

জেলা বাজার কর্মকর্তা মো. সুজাত হোসেন খান বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কথা স্বীকার করলেও কবে নাগাদ মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করবেন সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি।

বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্টির সভাপতি মো. লিয়াকত হোসেন লিটন বলেন, আমরা বাজার তদারকি শুরু করেছি। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি না করার ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের সর্তক করেছি।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, শুনেছি বাজারে দ্রব্যমূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে দুই একদিনের মধ্যেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৮
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।