ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পাইকারি পোশাক বিক্রিতে এখন ভাটার টান!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৯ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০১৮
পাইকারি পোশাক বিক্রিতে এখন ভাটার টান! ঈদের সময় যতই এগিয়ে আসছে, ততই কমতে শুরু করেছে পাইকারি মার্কেটগুলোর বেচাকেনা।

ঢাকা: ঈদের সময় যতই এগিয়ে আসছে, ততই কমতে শুরু করেছে পাইকারি মার্কেটগুলোর বেচাকেনা। শেষ সময়ে ছোট ছোট লটের বিক্রি চলছে এসব পাইকারি মার্কেটে। যাদের প্রথম পর্বের পণ্য ইতোমধ্যেই শেষ, তাদের মধ্যে কিছু হাতে গোনা পাইকার ও ব্যবসায়ী এখন আসছেন দ্বিতীয় ও শেষ লটের পণ্য সংগ্রহের জন্য।    

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নানা ডিজাইনের জিন্স প্যান্ট, শার্ট, পাঞ্জাবি, গেঞ্জি এবং থ্রি-পিসের জন্য বিখ্যাত কেরানীগঞ্জের আলম মার্কেট, আলম মল, নুরু মার্কেট, তানাকা মার্কেট, টোকিও মার্কেট, মসজিদ মার্কেট, তাছনুর প্লাজা, এন ই এন নুর সুপার মার্কেট, রফিক টাওয়ার, জেলা পরিষদ মার্কেট, বিক্রমপুর প্লাজা, মাকসুদা গার্ডেন সিটি, আলীমুল্লা মার্কেট এবং এস আর শপিংমলসহ বিভিন্ন দোকানে এখন চলছে শেষ সময়ের বেচাকেনা।

পুরান ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর এপার-ওপার দু’পাশে অবস্থিত তৈরি পোশাকের বড় এসব পাইকারি বাজারে ঈদের বেচাকেনা শুরু হয়েছে শবে বরাতের পর থেকেই।

সে সময় থেকে জমজমাট ব্যবসা চলেছে ১০ম রোজা পর্যন্ত। এসময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরা এসে এ জায়গা থেকে দলে দলে ট্রাক বা মিনি ট্রাক ভাড়া করে এসে তাদের পছন্দসই জিনিস কম দামে কিনে ফিরেছেন নিজ এলাকায়।   ঈদের সময় যতই এগিয়ে আসছে, ততই কমতে শুরু করেছে পাইকারি মার্কেটগুলোর বেচাকেনা। তবে ১০ম রোজা থেকে ১৬ রোজা পর্যন্ত কিছু কিছু পণ্যের বিক্রি থাকলেও এখন বিক্রি আরও কমেছে। তাই অনেক দোকানের কর্মচারীদের আয়েশি ভঙ্গিতে সময় কাটাতে দেখা গেছে। এছাড়া মফস্বল এলাকায় বিক্রি ভাল না থাকায় বেশ কিছু জায়গা থেকে পণ্য ফেরত আসছে বলেও জানিয়েছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।

আবার প্রথম লটের বিক্রি শেষে কিছু ব্যবসায়ী ও পাইকার এসেছেন দ্বিতীয় লটের পণ্য সংগ্রহে।

মৌলভীবাজার থেকে গার্মেন্টস পণ্য কিনতে আসা ব্যবসায়ী ইসহাক মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, শবে বরাতের পরদিন প্রথম লটে অনেক পণ্য নিয়েছিলাম। বিক্রি ভাল থাকায় শেষ সময়েও ভাল বিক্রির আশায় আজ আবার এসেছি। তবে এসে অবাক হয়েছি, আগেরবার যখন এসেছিলাম তখন হই-হুল্লোড়ে পণ্য কিনতে হয়েছে চড়া দামে। কিন্তু এবার সেটার দাম ১০-২০ টাকা কমে নেওয়া যাচ্ছে। ভরা মৌসুমে যেসব দোকানি ‘নিলে নেন-না নিলে চলে যান’ ব্যবহার করেছিলেন তারাই এখন অমলিন ব্যবহারে পণ্য নিতে অনুরোধ করছেন। ঈদের সময় যতই এগিয়ে আসছে, ততই কমতে শুরু করেছে পাইকারি মার্কেটগুলোর বেচাকেনা। এদিকে, ঈদের বাজারে ভরা মৌসুমেও এখানকার বিক্রি আশানুরূপ হয়নি বলে জানিয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। অন্য মৌসুমে যেখানে দিনে গড়ে প্রতিদিন দুই-তিন লাখ টাকা বিক্রি ছিল, এবার সেখানে দিনে গড়ে এক-দুই লাখ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ফলে কর্মচারী ও সব খরচ মিলে খুব বেশি লাভের আশা নেই তাদের।

বিক্রি সম্পর্কে জানতে চাইলে এন ই এন নুর সুপার মার্কেটের নাসির গার্মেন্টসের বিক্রয় ব্যবস্থাপক খাইরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, পাইকারি মূল্যে সর্বনিম্ন ৬০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকার মধ্যে ছোটদের শার্ট এবং প্যান্ট বিক্রি হয়েছে। তবে বিক্রি যা আশা ছিল সে রূপ না হলেও একবারে খারাপ যে তাও নয়। লাভ-লস মিলিয়ে চলা যাবে।

চয়েজ কালেকশন নামের গার্মেন্টসের মালিক মো. ফরিদ বাংলানিউজকে বলেন, এবারে ব্যবসা আশানুরূপ হয়নি। মফস্বলে বেচাকেনা ভাল না হলে আমাদের বিক্রি কিভাবে ভাল হবে? দেশের যারা ভাল ক্রেতা, তাদের বেশির ভাগ চলে যায় দেশের বাইরে শপিং করতে। আর ইন্ডিয়ান শাড়ি, থ্রি-পিস তো আছেই। সার্বিকভাবে এবার কাপড়ের দাম কম থাকলেও অন্যান্যবারের তুলনায় বিক্রি ভাল হয়নি। যা হয়েছে তাতে এক-দেড়শ’ কর্মচারীর বেতন দিয়ে খুব ভাল কিছু থাকবে না।  

কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল আজিজ শেখ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের মূল বেচাকেনা ১০ রোজার মধ্যেই শেষ। এখন যা হচ্ছে তা বাড়তি বলা চলে। এছাড়া আমরা এখনো লাভ-লসের হিসাব নিয়ে বসিনি। ২২ রোজার পর যখন বিক্রি একবারে বন্ধ বা কমে যাবে তখন এসব হিসাব করা যাবে। তবে যা মনে হচ্ছে আগেরবারের তুলনায় এবার বিক্রি কম হয়েছে। বিক্রি যদি কম হয় তাহলে লাভ তো কিছু কম হবেই।  

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, ০৪, ২০১৮
কেডি/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।