ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য বিশেষ সঞ্চয় স্কিম!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১৮
জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য বিশেষ সঞ্চয় স্কিম! সঞ্চয়পত্রের প্রতীকী ছবি

ঢাকা: সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কমানোর পর উপকারভোগী জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য বিশেষ সঞ্চয় স্কিম চালু করা হবে ব্যাংকগুলোতে। একইসঙ্গে সুদ কমানোর পর সঞ্চয়পত্রের আয়ের উপর নির্ভরশীল জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করা যায় কি-না তাও সরকারকে ভাবতে হবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা।

সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কমানোর পর জনগণ ব্যাংকমুখী হবেন কি-না জানতে চাইলে ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, সঞ্চয়পত্রের প্রতি ঝোঁক ঠেকাতে জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য ব্যাংকগুলোতে একটি আলাদা ডিপোজিট রেট (সুদ হার) বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিতে হবে। তা না হলে ঋণ ও আমানতের সুদ হার যতই কমানো হোক, আমানত চলে গেলে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।


 
জানা গেছে, দীর্ঘদিন বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট থাকায় বিনিয়োগ স্থবিরতা সৃষ্টি হয়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকার ঋণ ও আমানতের সুদ হার কমানোর পাশাপাশি সরকারি আমানতের অর্ধেক বেসরকারি ব্যাংকে রাখার বাধ্যবাধকতা জারি করে। এতোকিছুর পরও দেশের অধিকাংশ বেসরকারি ব্যাংক ঋণ ও আমানতের সুদহার ৯ ও ৬ শতাংশ কার্যকর করতে পারেনি।
 
আমানতের সুদ হার এতো কম হওয়ায় গত অর্থবছরের শেষ দিকে এসে সঞ্চয়পত্র কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। এ কারণে দেশের ব্যাংকগুলো আশানুরূপ আমানত সংগ্রহ করতে পারেনি। তাই আমানতকারীদের ব্যাংকে ফেরাতে এবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
 
সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কমানোর উদ্যোগ

চলতি মাসের ২ আগস্ট রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অর্থনৈতিক সর্ম্পক বিভাগে (ইআরডি) কার্যালয়ে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের বলেন, সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কত হবে তার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৮ আগস্ট (বুধবার)।
 
সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমানোর পর এর উপকারভোগীদের উপর কোন প্রভাব পড়বে কি-না জানতে চাইলে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কিছুদিন আগে বলেন, সঞ্চয়পত্রের সুদ কমানোর পাশাপাশি আমানত সংগ্রহের জন্য ব্যাংকগুলোর বিশেষ সঞ্চয় স্কিম চালু করতে হবে। যারা সঞ্চয়পত্রের আয়ের উপর নির্ভরশীল তাদের জন্য সরকার আলাদাভাবে কোন ভাতার ব্যবস্থা করতে পারেন। এতে ব্যাংকগুলোতে আমানত বাড়বে।
 
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের হিসাব মতে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২৮ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হলেও পরের বছর অর্থাৎ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকায়। আর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিক্রি হয় ৪২ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসেই বিক্রি হয়েছে ৪৭ হাজার ৮৬১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র।
 
চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকর্স বাংলাদেশের (বিএবি) আমানতের সুদহার ৬ শতাংশ ঘোষণা করে। এরপর থেকেই অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। কোনো কোনো দিন তা ১০ কোটি টাকাও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আর প্রতিদিন গড়ে বিক্রি হচ্ছে চার কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র।  
দেশের বিপুল সংখ্যক অবসরপ্রাপ্ত নাগরিক জীবনযাপন করেন সঞ্চয়পত্রের আয়ের উপর। সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কমানো হলে তাদের জন্য সরকার কোন ভাতার ব্যবস্থা করবে কিনা জানতে চাইলে ৮ আগস্টের আগে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান।
 
বাংলাদেশ: ০৯৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৮
এসই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।