ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মশলার বাজারে কোরবানির ঝাঁঝ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৮
মশলার বাজারে কোরবানির ঝাঁঝ দোকানে সাজিয়ে রাখা বিভিন্ন প্রকার মসলা। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ঈদের আর হাতে গোনা কয়েকদিন বাকি। এরই মধ্য ধুম পড়েছে মশলা কেনা-বেচার। সঙ্গে কোরবানির ঝাঁঝও লেগে গেছে বিভিন্ন মশলার শরীরে। দাম বেড়েছে বেশ কয়েকটির।

শনিবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে তেমন চিত্রই। ঈদের দু-একদিন আগের তুলনায় এখন কেনাকাটায় একটু স্বস্তি পাওয়া যাবে ভেবেই মশলার বাজারে আসছেন অনেকে।

তাদের জন্যই যেন ব্যবসায়ীরা খুচরা পর্যায়ে বাড়িয়েছেন মশলার দাম।

এ প্রসঙ্গে মশলার ক্রেতা তাহমিনা রহমান বলেন, গত সপ্তাহে যে দামে মশলা কিনেছি, এখন তার থেকে প্রতিটির দামই বেড়েছে বেশ কয়েক টাকা করে।

ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, কোরবানির ঈদে মাংসের জন্যই মশলাটা বেশি প্রয়োজন হয়। আর এজন্যই এসময় এর চাহিদা থাকে বেশি। ঈদে মশলার দাম বৃদ্ধি পাবে এ আর নতুন কী! এ তো বরাবরই হয়ে আসছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চাহিদা বেশি থাকা জিরা, এলাচ ও দারুচিনির দাম এখন বেশ খানিকটা বাড়তি গত কয়েক দিনের তুলনায়। আর নতুন করে কিছু মশলায় বাজেটের প্রভাব পড়েছে বলেও জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এছাড়া পাইকারি তুলনায় বেশি মূল্য ধরা হচ্ছে খুচরা ক্রেতাদের কাছ থেকে। দোকানে সাজিয়ে রাখা বিভিন্ন প্রকার মসলা।  ছবি: শাকিল আহমেদখুচরা পর্যায়ে যে জিরা কিছুদিন আগে ৩৮০ টাকা দরে পাওয়া যেত, সেটা এখন ৪৫০ টাকা। ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকার দারুচিনি এখন ৪০০ থেকে ৪২০ আর মোটামুটি মানের এলাচ কিনতে প্রতি কেজিতে গুনতে হবে প্রায় ১৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা।

বাজারে মানভেদে প্রতি ১০০ গ্রাম জিরার দাম চাওয়া হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা। প্রতি ১০০ গ্রাম এলাচ ১৭০ থেকে ২০০ টাকা এবং ১০০ গ্রাম দারুচিনির দাম ধরা হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।

কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. হাসমত আলী বলেন, কিছুদিন আগেও জিরা কেনা যেত কেজিপ্রতি ৩৩০ টাকা দরে, এরপর সেটা ৩৫০ টাকা হলো। এখন কিনতে হচ্ছে ৩৮০ টাকা কেজি দরে। এলাচির দামও বাজেটের পর কেজিতে ১৫০-২০০ টাকা বেড়েছে। আর কোরবানির ঈদ সামনে রেখেতো এমনিতেই কিছু মশলার দাম বাড়ে।

আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চাল, চিনি, লবণ, রসুন, মাছ ও মাংসের চড়া দামের মধ্যে এবার মসলা কিনতেও বাড়তি ব্যয় করতে হবে ক্রেতাদের। দোকানে সাজিয়ে রাখা বিভিন্ন প্রকার মসলা।  ছবি: শাকিল আহমেদব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মসলার দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ দু’টি। একদিকে বাজেটে সরকার মসলা আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়েছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারদরও বেড়েছে।

তবে বাজারে প্রায় স্থিতিশীল রয়েছে হলুদ ও ধনিয়ার দাম। গুড়া হলুদ ২৪০ টাকা কেজি আর ধনিয়া ৩০০ টাকা। আর প্রতি ১০০ গ্রাম পাঁচফোড়নের জন্য বাজারভেদে গুনতে হবে ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং কালিজিরা ২৫ টাকা।

বাজারে সাদা সরিষা ও কালো সরিষার দাম প্রায় একই। খুচরা বাজারে এগুলোর দাম ধরা হচ্ছে প্রতি ১০০ গ্রাম ৩০ টাকা। আর গোল মরিচ প্রকারভেদে ৮০ থেকে ৯০ টাকা প্রতি ১০০ গ্রাম এবং জায়ফল রাখা হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকা প্রতিপিস।

এছাড়া কিসমিসের দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা ও দারুচিনি কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে খুচরা পর্যায়ে। তবে গোলমরিচ, লবঙ্গসহ অন্যান্য মসলার দামে হেরফের হয়নি। অবশ্য মসলার দামে খুচরা ও পাইকারি বাজারের পার্থক্য অনেক। এসব পণ্য যেহেতু খুব কম পরিমাণে বিক্রি হয়, সেহেতু খুচরা ব্যবসায়ীদের মধ্যে লাভ বেশি করার প্রবণতা দেখা গেছে সব বাজারেই। আর মশলার দাম আরো একটু বাড়তে পারে বলেও এসময় জানিয়েছেন বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৮
এইচএমএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।