ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

হাটে আসছে কোরবানির গরু, দাম চড়া

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৮
হাটে আসছে কোরবানির গরু, দাম চড়া গাবতলী পশুর হাট

গাবতলী পশুর হাট ঘুরে: কোরবানির ঈদের আর বাকি মাত্র ছয় দিন। রাজধানীর একমাত্র স্থায়ী পশুরহাট গাবতলীতে কোরবানির পশু আসা শুরু করেছে। ইতিমধ্যে কোরবানির পশু কিনতে হাটে ঢুঁ-মারা শুরু করেছেন অনেকেই।

বুধবার (১৫ আগস্ট) ভোর থেকেই ট্রাকে ট্রাকে গরু আসছে গাবতলীতে। হাটের একপাশে বাঁশ আর ত্রিপল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে আচ্ছাদন।

মূলত কোরবানি উপলক্ষে এই অংশ সম্প্রসারণ করা হয়েছে। আচ্ছাদনের নিচে গরু বাঁধার জন্য পোঁতা হয়েছে সারি সারি বাঁশের খুঁটি। তবে এসব স্থান এখনও ফাঁকা। আগামী শুক্রবার ও শনিবার কোরবানির পশুতে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে হাট।

গাবতলী পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, দেশি গরুর দাম চড়া। হাটে পশুর সরবরাহ কম থাকায় ইচ্ছামতো দাম হাঁকছেন ব্যাপারীরা। ৩ মণ মাংস পাওয়া যাবে এমন গরু ৮০ হাজার টাকা দাম হাঁকছেন তারা। চার মণ মাংস পাওয়া যাবে লাল রঙের এমন একটি গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১ লাখ টাকা। অথচ বর্তমানে গরুর মাংসের বাজারদর চলছে ২০ হাজার টাকা মণ।
ফেসবুক-ইউটিউব আতঙ্কে গরু ব্যাপারীরা
হাটে বর্তমানে ক্রেতার সংখ্যা খুবিই সামান্য। তবে দাম যাচাই করতে অনেকে ঘুরছেন পশুর হাটে। নগরীর গ্রিন রোড থেকে হাটে এসেছেন শামসুল আল আমিন। পরিবার পরিজনকেও সঙ্গে নিয়ে এসেছেন তিনি।

বাংলানিউজকে শামসুল আল আমিন বলেন, গরুর দাম দেখভাল করতে হাটে এসেছি। তবে ব্যাপারীরা দাম অনেক বেশি বলছেন। ছোট দেশি গরুর দাম লাখের উপরে চাচ্ছেন। মাংস হয়তো চার মণ হবে না। অন্যবারের চেয়ে এবার হাটে গরু কম এসেছে মনে হচ্ছে। হাতে এখনও সময় আছে দেখা যাক কি হয়!

মাংসের দামে কোরবানির গরু বিক্রি হয় না জানিয়ে বিশু নামে কুষ্টিয়ার এক ব্যাপারী বলেন, কেজি দরে কোরবানির গরু বিক্রি হয় না, কেজি দরে আলু বিক্রি হয়। গরু দেখতে ভালো, গায়ের রং লাল—এমন গরুর দাম চড়া!

ব্যাপারীরা দাবি করছেন, বিগত ছয় মাসে ভারত থেকে একটা গরুও আসেনি। কোরবানির পরেই নির্বাচনের আয়োজন। তাই সারা দেশে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার কোরবানির হারও বেশি হবে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন এমন প্রার্থীরা একাধিক পশু কোরবানি দেবেন, তাই গরুর দাম এবার বেশি হবে।

গরুর দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের জিয়ারুল ব্যাপারী বলেন, “হাটে ভারতের গরু নাই। গিরস্তের কাছ থেইক্কা চড়া দামে গরু কিনি হাটে তুলছি। দামও এবার অন্যান্য সময়ের থেকে বাড়তি হবে। গ্রামেও গরু পালতে অনেক খরচা। সামনে ভোট, এবার কোরবানিও অনেক হবে। যে নেতা গেলবার ৫টা কোরবানি দিছে এবার সেই নেতা ১০টা দেবে। মনে হচ্ছে এবার কোরবানিতে গরু শট হবে। ”

তবে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্র জানায়, “গত কোরবানির ঈদে ১ কোটি ৪ লাখ পশু বেচাকেনা হয়েছে। এবার কোরবানিতে গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল মিলে ১ কোটি ১৬ লাখ মজুদ আছে। এগুলো কোরবানির ঈদে বেচাকেনার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। নিজেরাই লালন-পালন করে কোরবানি দেবে এমন পশুর সংখ্যা আছে তিন লাখ। সুতরাং কোরবানির পশুর কোনো সংকট হবে না। ”

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক বাংলানিউজকে বলেন, “আমাদের দেশে পর্যাপ্ত গরু আছে। আশা করছি সংকট হবে না। আমাদের দেশে খামারিদের নিকটও প্রচুর গরু আছে। আমরা এখন নিজেরাই স্বয়ংসম্পূর্ণ। ভারত থেকে গরু না আসলেও সংকট হবে না। আমরা সংকট ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠছি। ”

বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৮
এমআইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।