ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চামড়ার বাজারে ব্যাপক ধস

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৮
চামড়ার বাজারে ব্যাপক ধস পোস্তায় চামড়া সংরক্ষণে ব্যস্ত শ্রমিকরা। ছবি: শাকিল/বাংলানিউজ

পোস্তা (লালবাগ) থেকে: ঈদুল আজহায় সারাদেশে বিপুল সংখ্যক পশু কোরবানি হয়েছে। আজও দুই এক জায়গায় কোরবানি চলছে। আর কোরবানি শেষে পশুর চামড়া নিয়ে চলছে টানা হেচড়া। 

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া নিয়ে রাজধানীর লালবাগের পোস্তায় অপেক্ষা করছেন ভালো দামের আশায়। তবে ভাগ্যের শিকে কারো ছিঁড়ছে না।

 

ঈদের পরদিন বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর চামড়ার পাইকারি বাজার লালবাগের পোস্তায় গিয়ে সরেজমিনে ঘুরে এবং ব্যবসা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে। চামড়ায় লবণ দিচ্ছেন শ্রমিকরা।                                          ছবি: শাকিল আহমেদ সিলেট থেকে নুরুল হক দুই ট্রাক চামড়া নিয়ে পোস্তায় এসেছেন লাভের আশায়, লাভ তো দূরের কথা এখন বিক্রিই করতে পারছেন না। প্রতি পিচ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় কিনেছেন। এখন পোস্তায় ব্যবসায়ীরা দাম বলছেন মাত্র ৩০০ টাকা করে।

বাংলানিউজকে নুরুল হক বলেন, সকাল ১০টায় দুই ট্রাক মাল (চামড়া) নিয়ে পোস্তায় এসেছি। দুই-একজন দাম বললেও দেওয়ার মতো না। কিনেছি ৫০০ টাকায় এখন দাম বলে ৩০০ টাকা, গাড়ি ভাড়া দিয়ে এনেছি সেই টাকাও তো উঠবে না। এবার ব্যবসা করে পুরাই ধরা।

একই দশা নরসিংদীর মনোহরদীর মিয়া হোসেনেরও। তিনি ৩৪০ পিচ চামড়া দুই ভাগে বিক্রি করেছেন। তার ২১০ পিচ বিক্রি হয়েছে ৩১০ টাকা করে আর ১৩০ পিচের দাম পেয়েছেন ৩০০ টাকা করে।

মিয়া হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, গতকাল (বুধবার) দুপুরের দাম শুনে মাল কিনেছিলাম। এখানে এসে দেখি কেউ জিগায়-ই না। অনেক অনুরোধ করে ৩৪০ পিচ মাল বিক্রি করেছি। ১৩০ পিচের দাম এখনো হাতে পাইনি। পচনশীল মাল এখন বিক্রি করতে না পারলে ফেলে দিতে হবে। তাই যে দাম বলছে দেওয়া ছাড়া উপায় নাই। ট্রাক থেকে চমড়া নামাচ্ছেন শ্রমিকরা।  ছবি: শাকিল আহমেদদাম কমের কথা স্বীকার করলেন আড়তদার লোকমান হোসেন। তিনি বলেন, ঈদের দিন দুপুরে ভালো দাম গেছে। রাত থেকে মাল কেনার লোক নাই। শুধু নিলে তো হবে না আগের মালগুলো লবণ মাখাতে না পাড়লে পচন ধরবে, তাই এখন বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি লবণ দেওয়ায়।

ঈদের দিন দুপুরে যে চামড়া ১২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেই একই আকারের চামড়া এখন ৬০০ টাকাও বলছে ব্যবসায়ীরা। আর সরকার নির্ধারিত দাম তো ধারে কাছেও নাই। ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ সরকারি দাম মানছেন না।

নরসিংদীর জামিয়া ইসলামিয়া লক্ষ্মীপুরা রহমতপুর মাদ্রাসার ছাত্র মোবারক হোসেন ১২৫ পিচ চামড়া বিক্রি করেছিলেন ৬২০ টাকা করে। মাদ্রাসায় তার শিক্ষক ওমর ফারুকের কাছে বিক্রি করেছিলেন বাকিতে।  

কথা ছিল মাল বিক্রি করে টাকা দেবে। আমি খোঁজ নিয়ে এসেছি, আইসা দেখি মালই বিক্রি করতে পারেননি, টাকা দিব কেমনে। একটু আগে একজন ২০০ টাকা পিচ বলেছে  এখন সেও নাই। দাম বলে কেউ নেয়না।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৮
এসএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।