ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চামড়ার ক্রেতা নেই হাজারীবাগে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৮
চামড়ার ক্রেতা নেই হাজারীবাগে

ঢাকা: চামড়া নিয়ে কিছু ব্যবসায়ী হাজারীবাগে হাজির হলেও তা কিনতে আগ্রহী নন সেখানকার ট্যানারি মালিকরা। ফলে চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এসব ব্যবসায়ী। 

বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) সকাল থেকে হাজারীবাগ ট্যানারি এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, চামড়ার ব্যবসার আগের সেই জমজমাট চিত্র এবার নেই। পুরো হাজারীবাগে কয়েকশ ট্যানারি থাকলেও প্রায় সবই বন্ধ।

বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়ার পর থেকে এখানে আর কাচা চামড়ার প্রসেস হয় না। বেশিরভাগ কারখানা চলে গেছে সাভারের হেমায়েতপুরে।

হাজারীবাগে কয়েকটি কারখানা মালিক সামান্য কিছু মাল ক্রয় করছে বলে জানান স্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ী মনির হোসেন।

তিনি বলেন, এখানকার ১৬ আনার ১৪ আনা ব্যবসা বন্ধ। ঘুরে দেখেন আগের হাজারীবাগ এখন আর নেই। ক্রিসেন্ট ট্যানারির মালিকের ১০টা কারখানার একটাও মাল কিনছে না।  

দিকে হাত উঁচিয়ে এলাকার শেষ মাথার দিকে নির্দেশ করে মনির বলেন, ওইদিকে রাজিব লেদার কিছু মাল কিনতাছে। হয়তো হাজার দশেক মাল কিনবো। মুক্তি ট্যানারি গত বছর ৫০ হাজার মাল কিনলেও এবার একটাও মাল কিনছে না।  

ব্যবসায়ীরা কেন মাল কিনছে না জানতে চাইলে মনির বলেন, টাকার অভাবে মাল কেনে না। টাকা পয়সা যা ছিল হেমায়েতপুরে কারখানায় ভরছে। এখন মাল কেনার টাকা নাই।

ট্রাকে তোলা হচ্ছে চামড়া।  ছবি: শাকিল আহমেদ

মিন্টু মিয়া নামের একজন মৌসুমি ব্যবসায়ী ৩০০ মাল কিনে পড়েছেন বিপাকে। চামড়া সংরক্ষণ করে কিছুদিন রেখে যদি কিছু একটা করা যায় এই আশায় লবণের পেছনে দৌড়চ্ছেন তিনি।  

মিন্টু মিয়ার চামড়ায় লবণ মাখাতে থাকা আউয়াল বললেন, চামড়ায় এ বছর ব্যবসা নাই। গত বছর এরকম একটি চামড়ার দাম ছিল ৩ হাজার টাকার ওপরে। এবার সেটা ৬০০ টাকাও বলে না। মালিক কিছু মাল কিন্না বিপদে পড়ছে। এখন লবণ দিয়া রাখবো। তাতে প্রতিটি চামড়ার পেছনে লবণ ও লেবার খরচ বাবদ ৩০০ টাকা খরচ হবে। এই টাকা উঠবে কিনা জানি না।  

হাজারীবাগ থানার পেট্রোল টিমের প্রধান এসএসআই মান্নান বলেন, হাজারীবাগে এখন আর কাঁচা চামড়ার প্রসেস হয় না। এটা অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু খুচরা ব্যবসায়ী কয়েকটি স্থানে চামড়ায় লবণ মাখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাও আমরা করতে দিচ্ছি না। ৪/৫ টি জায়গায় লবণ মাখানোর কাজ চলছিল, তাদেরকে উঠিয়ে দিয়েছি।

হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোর কি অবস্থা জানতে চাইলে মান্নান বলেন, এখানে এখন তেমন কিছু নেই। বেশিভাগ কারখানার মেশিন সব হেমায়েতপুরে নিয়ে গেছে। অনেক মালিক কারখানা ভেঙে অন্য কিছু করছেন।

২০ বছরেরও বেশি সময় যাবত হাজারীবাগ ট্যানারিগুলোতে কেমিকেল সাপ্লাই দেন তারেক হোসেন, তিনি বাংলানিউজকে বলেন, হাজারীবাগে এখন আর চামড়ার কোনো ব্যবসা নেই। সব হেমায়েতপুরে চলে গেছে। এখন যেসব চামড়া দেখতে পাচ্ছেন এগুলো সব আশ-পাশের পাড়া মহল্লার চামড়া। আগে সারাদেশ থেকে এখানে চামড়া আসতো। এখন আসে না।
 
বাংলাদেশ সময় : ১৫০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৮
এমএইচ/এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।