ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

গরিব ঠকিয়ে চামড়া বাণিজ্য

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৮
গরিব ঠকিয়ে চামড়া বাণিজ্য এখনও চলছে চামড়া বিকিকিনি/ছবি: শাকিল আহমেদ

পোস্তা (লালবাগ) থেকে: ধর্মীয় অনুশাসন অনুযায়ী কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রির টাকার হকদার গরিব, ফকির-মিসকিন, মাদরাসা। আদিকাল থেকেই এ নিয়ম চলে আসছে। মাদরাসায় দানের সিংহাভাগ এই কোরবানির সময় হয়। গরিবেরাও কিছু অতিরিক্ত টাকা পায় এসময়।

কিন্তু এবছর কোরবানি পশুর চামড়ার দাম কম হওয়ায় অনেকে বিক্রি না করে মাটিতে পুতে রেখেছেন। আর মাদরাসার ছাত্রদের মধ্যে যারা চামড়া সংগ্রহ করেছিলেন তারাও পড়েছেন চরম বিড়ম্বনায়।

কম দামে চামড়া বিক্রি করেও নগদ অর্থ পাননি অনেকে।

মো. ওমর নামে এক মাদরাসার ছাত্র বলেন, এবার চামড়া কিনে লোকসান। মহল্লা থেকে যে দামে কিনেছি তার অর্ধেক দাম পাইনি। যে দাম পেয়েছি তাতে পরিশ্রমের মূল্যও ওঠে না। গরিবের হক চামড়া, সেই চামড়া নিয়ে চরম বাণিজ্য হয়েছে। যা আগে কখনই হয়নি। এতো মন্দা বাজার কখনো দেখিনি।

এবছর ভালো চামড়া বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১২শ টাকায়। গরুর প্রতিটি চামড়া কমপক্ষে ২৫ বর্গফুটের হয়।  

আড়তদাররা খেয়াল-খুশিমতো চামড়া কিনে এখন সরকার নির্ধারিত দামের বাস্তবায়ন চায়। তাদের দাবি সরকার নির্ধারিত দাম দিলেই পুঁজি উঠবে। আড়তদারদের হিসাব অনুযায়ী, সবচেয়ে ছোট চামড়াটির সরকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন মূল্য আসে ১১শ ২৫ টাকা। অথচ সে চামড়া ৫শ টাকার মধ্যেই কিনতে পেরেছেন আড়তদাররা। অবশ্য তাদের দাবি, প্রতি পিস চামড়া প্রসেস করতে প্রায় ২৫০ টাকা খরচ হচ্ছে। তাতেও চামড়াপ্রতি ৩৭৫ টাকা লাভ। যদিও এর চেয়ে বেশি দামেই বিক্রি হবে।
চামড়া বহন করে আড়তে নিচ্ছেন শ্রমিকেরা
এবছর ঈদুল আজহায় ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা আছে ৪৫-৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৫-৪০ টাকা। প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়া ১৮-২০ টাকা, বকড়ির চামড়া ১৩-১৫ টাকা।  

পোস্তার আড়তদার আলী আজগর বাংলানিউজকে বলেন, অবশ্যই লাভ হবে। আমরা কি লোকসান দেওয়ার জন্য কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি?

আরেক আড়তদার শহীদ খান বলেন, সরকার যে দাম বেঁধে দিয়েছে সেই দাম দিলেই চলবে। দামে সমস্যা হবে না, এবার তো ট্যানারি মালিকরাই আসছেন না। আমাদের আরো লোকসান হবে যদি না নগদ টাকা হাতে পাই।

আড়তদাররা চাইছেন সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হোক। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ট্যানারির মালিকরা চামড়া কিনে বাকি রাখেন। যে টাকা একবছরও পড়ে থাকে।

রাজধানীর পোস্তায় এবার কম-বেশি এক লাখ গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে। এই চামড়া এক সপ্তাহের মধ্যে ট্যানারিতে বিক্রি হয়ে যাবে বলে আশা করছেন আড়তদাররা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৮
এসএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।