ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

খুলনায় হু-হু করে বাড়ছে চালের দাম

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০১৯
খুলনায় হু-হু করে বাড়ছে চালের দাম চালের বাজারে অস্থিরতা

খুলনা: খুলনার বাজারে হু-হু করে বাড়ছে চালের দাম। অথচ এখন চালের মৌসুম চলছে। মাত্র পাঁচদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ৩-৫ টাকা। চালের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। নানা প্রশ্ন করছেন দোকানিদের। বিক্রেতাদেরও হিমশিম খেতে হয় তাদের প্রশ্নের জবাব দিতে।

সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়াই পাইকারি ও খুচরা বাজারে সমানভাবে হু-হু করে বাড়ছে চালের দাম। অথচ প্রশাসন নীরব-নির্বিকার।

তারা মনে করেন, সরকারের সঠিক মনিটরিং না থাকার কারণে আমন মৌসুমে অতিপ্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য চালের দাম যে যেভাবে পারছে বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এর ফলে পাইকারি বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি খুচরা বাজারে প্রভাব পড়ছে।

তবে আড়ৎদাররা জানান, সরকারি খাদ্য গুদামে আমন মৌসুমের চাল ক্রয় করা শুরু হয়েছে। এর কারণে বাজারে চালের দাম বেড়েছে।
আবার কেউ কেউ বলছেন, এ বছর কৃষকরা ধান বিক্রি না করায় চালের দাম বেড়ে গেছে।

বুধবার (০২ জানুয়ারি) মহানগরীর বড় বাজারের মেসার্স এস আহম্মেদ ট্রেডার্সের আড়ৎদার মাসুদ আলম বাবলু বাংলানিউজকে বলেন, কৃষকরা ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় ধান কম বিক্রি করছেন। যার কারণে মিল মালিককরা ধান কিনতে পারছেন না। এতে ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের দাম বেড়ে গেছে।

মেসার্স মুরাদ ট্রেডিং এর পাইকারি বিক্রেতা জিয়াউল হক মিলন বাংলানিউজকে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগের দিন থেকে চালের দাম বেড়েছে। সরকারিভাবে চাল ক্রয় করায় বাজারে চালের দাম বাড়ছে। মোটা চাল কেজি প্রতি ৩-৫ টাকা বেড়েছে।

তিনি জানান, মোটা স্বর্ণা ২৮ থেকে বেড়ে ৩২ টাকায়। বালাম-২৮ ৩৭ থেকে বেড়ে ৪০ টাকায়। মিনিকেট ৪৮ এখন ৫২ টাকা, বাসমতি বিক্রি হয়েছে ৫৮ টাকা থেকে ৫৯ টাকা। ইরি আতপ ২৩ থেকে ২৮ টাকায়। কালোজিরা প্রকারভেদে ৭৩-৮৭ টাকা থেকে ৭৫-৯০ টাকায়।

মিলন বলেন, সংসদ নির্বাচনের দুই তিন মাস আগে থেকে চালের বাজার নিম্নমুখী ছিলো। এখন দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কিছুটা কমে গেছে।

এদিকে নতুন বছরের শুরুতে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

খুলনা শিপইয়ার্ডের কর্মচারী জুয়েল তালুকদার নামের এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের বেতন বাড়েনি। অথচ নতুন বছরে নতুন করে চালের দাম বেড়েছে। চালের দাম বাড়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমাদের বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চালের দাম বাড়লে তাতে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। কিন্তু এভাবে শুধু চালের দাম বাড়লে আমরা বিপদে পড়ে যাবো।

নাসির নামের অপর এক ক্রেতা বলেন, নানা অজুহাতে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়াটা যেন স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে, বরং কোনো জিনিসের দাম না বাড়লে অস্বাভাবিক মনে হয়। সরকার নির্বাচনের কয়েক মাস আগে চালের দাম কমিয়েছিলো। এতে আমরা স্বস্তি পেয়েছিলাম। এখন নতুন করে আবার ক্ষমতা আসার পর আশা করছি চালের দাম আবার কমাবে।

সাধারণ ক্রেতারা সরকারের কাছে চালের দাম বৃদ্ধির কারণ খুঁজে তার সমাধান করার দাবি জানিয়েছে।

খুলনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তানভির আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, সরকারিভাবে চাল ক্রয় করা হলে বাজারে তার একটু প্রভাব পড়ে। এতে চালের দাম একটু বাড়ছে। গৃহস্থ ও মিল মালিকদের কাছে ধান আটকা থাকায়ও চালের বাজারে প্রভাব পড়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৯
এমআরএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।