ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বগুড়ার হাটে ১৫ টাকার বেগুন ৫ টাকা

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১৯
বগুড়ার হাটে ১৫ টাকার বেগুন ৫ টাকা সবজি বিক্রি করতে হাটে দোকান নিয়ে বসিয়েছেন বিক্রেতা। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: গত বছরের নভেম্বর মাসে উত্তরাঞ্চলের বগুড়ার মহাস্থান হাটে প্রতিকেজি বেগুন প্রায় ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। দুই মাসের ব্যবধানে বর্তমানে বেগুন মাত্র পাঁচ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। এ হাটে শিমের বেলায়ও চিত্রটা বেগুনের মতোই। প্রতিকেজি শিম পাঁচ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক।

বিক্রি না করলেও সমস্যা ফসল নষ্ট হয়ে জমিতেই পচে যাবে। এ কারণে ক্ষেতের ফসল তুলতে বাধ্য হন কৃষকরা।

নইলে তখন আর সেই পাঁচ টাকাও মিলবে না কৃষকের ভাগ্যে। তাই ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়ে কৃষক ক্ষেতের ফসল তুলে সোজা হাটে নিয়ে যাচ্ছেন। বাজার দর অনুযায়ী যা দাম পাচ্ছেন তাতেই ক্ষেতের সবজি বিক্রি করে বাড়ি ফিরছেন তারা।
 
উত্তরাঞ্চলের সবজির বৃহৎ মোকামখ্যাত বগুড়ার মহাস্থান হাট ঘুরে শীতকালীন সবজির বর্তমান বাজারমূল্য সম্পর্কে এমন তথ্য জানা গেছে।
 
রাজধানীসহ চট্টগ্রাম, সিলেট, টাঙ্গাইল, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা ও বিভিন্ন বিভাগীয় শহর ছাড়াও জেলা এবং উপজেলা শহর থেকে ব্যাপারীরা আসেন এ হাটে। কিনে নেন বছরের সব ধরনের সবজি।
 
এছাড়া বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় ১২ মাসই বিভিন্ন জাতের সবজি উৎপাদন করে থাকেন এখানকার কৃষকরা। তবে একটু বেশি লাভের আশায় কৃষকরা শীতকালীন সবজি চাষকে তুলনামূলক অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।

বগুড়া সদর, শাজাহানপুর, শেরপুর, শিবগঞ্জ, গাবতলী, নন্দীগ্রাম উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সবজি চাষ করা হয়। এছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলাও কমবেশি সবজি চাষ করেন কৃষকরা। সবজি বিক্রিতে ব্যস্ত এক বিক্রেতা।  ছবি: বাংলানিউজ
মহাস্থান হাট ঘুরে দেখা যায়, পুরো হাটের জায়গা ছাপিয়ে বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের দুই পাশ ও শিবগঞ্জ উপজেলার সদরে যাওয়ার প্রবেশ পথে শুধু সবজি আর সবজি। দূর-দুরান্ত থেকে আসা ব্যাপারীরা ছোট-বড় ট্রাক নিয়ে এসেছেন এ হাটে। আবার অনেকেই প্রয়োজনীয় সবজি কেনার পর এখান থেকেই ট্রাক ভাড়া করে সেই সবজি নির্ধারিত গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছেন।
 
শিবগঞ্জসহ আশেপাশের বিভিন্ন উপজেলা ও গ্রাম থেকে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত নানা জাতের সবজি ভটভটি, ভ্যান, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, পিকআপ ভ্যান, বাই সাইকেলে করে এ হাটে বিক্রি করতে আসেন। প্রতিদিন ভোর থেকে এ হাটে জমজমাট বেচাকেনা শুরু হয়।  
 
সাদেক নামে এক কৃষক বাংলানিউজকে বলেন, কি ধরনের সবজি চান। সবই এ হাটে পাওয়া যায়। এরমধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, কাঁচা মরিচ, পিঁয়াজ, বেগুন, করলা, পেঁপে, লাউ, ডাটাসহ বিভিন্ন জাতের সবজি পাওয়া যায় এখানে। তবে দাম নিয়ে চরম হতাশ এ কৃষক।
 
কৃষক শামসুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, প্রত্যেক বছর শীতকালীন সবজি চাষ করেন তিনি। বেশ ভালো দামেই বিক্রি করেছেন। কিন্তু এবাব সবজির দাম একেবারে পড়ে গেছে। এতে করে তার মতো সব সবজি চাষিকেই চরম লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ রকম দামে সবজি বিক্রি করলে কোনো ভাবেই মূলধন উঠবে না যোগ করেন কৃষক শামসুর।
 
কৃষক জামাল উদ্দিনসহ একাধিক কৃষক জানান, পাইকারি দর হিসেবে প্রতিকেজি ফুলকপি ছয় টাকা, গাজর ১০টাকা, টমেটো ছয় টাকা, বরবটি পাঁচ টাকা, আলু ১৭ টাকা, মুলা পাঁচ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০ টাকা, পেঁয়াজ ১৭ টাকা, প্রতি পিস বাঁধা কপি ৪ টাকা দরে বর্তমান বাজারে বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা বাজারে এসব সবজি অনেক চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে যোগ করেন কৃষকরা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৯
এমবিএইচ/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।