ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পরিবার-স্বজন চিনবো না, ঋণ নিলে ফেরত দিতে হবে 

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৯
পরিবার-স্বজন চিনবো না, ঋণ নিলে ফেরত দিতে হবে  অর্থমন্ত্রণালয় সম্মেলন কক্ষে কথা বলছেন নতুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বর্তমানে দেশে ১৩ শতাংশ খেলাপি ঋণ রয়েছে। এটি ৭ থেকে ৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। এজন্য আমাদের কঠোর হতে হবে। পরিবার ও আত্মীয় স্বজন চিনবো না। যারা ঋণ নিয়ে ফেরত দেয় এবং যারা ফেরত দেয় না তাদের এক জায়গায় রাখবো না। যারা ঋণ ফেরত দেয় তার জন্য প্রয়োজনে প্রণোদনার ব্যবস্থা করে দেবো।

সোমবার (৭ জানুয়ারি) সচিবালয়ের অর্থমন্ত্রণালয় সম্মেলন কক্ষে নতুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের যোগ দেওয়া উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মন্ত্রী একথা বলেন।  

অনুষ্ঠানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, এনবিআরের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

এছাড়া অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রয়াত্ব ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা নতুন মন্ত্রীকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।  

রাজস্ব আদায় নিয়ে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, সাধারণ মানুষ রাজস্ব দিতে চায়, আমাদের লোকরা যাতে নিতে পারে সেদিকে খেয়াল করতে হবে। একটি উইন উইন অবস্থা তৈরি করতে হবে। এনবিআরে বর্তমানে ৩৫ হাজার লোকবল রয়েছে। এটা বাড়িয়ে প্রয়োজনে ৫০ হাজার করা হবে। প্রতিটি উপজেলায় প্রয়োজনে আরো রাজস্ব অফিস করতে হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এবার ২ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, দুই লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা দিতে পারবো।

তখন অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা এখানে সবাই অভিজ্ঞ। আপনাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে আগামীতে আরো এগিয়ে যেতে হবে। অর্থনীতির অগ্রগতির যে ধারা তা বজায় রাখতে হবে। মন্ত্রণালয়ের কাজে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং পরিকল্পনা করে এ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে।

‘আমাদের দেশের সব কর্মকর্তা খারাপ না, এখানে সৎ মানুষের সংখ্যাই বেশি। যারা ব্যবসায়ী আছে সবাই খারাপ না। এখন থেকে ১০ বছর আগে অর্থনীতি নিয়ে লজ্জা পেতাম। আমরা বর্তমানে অনেক অর্জন করেছি। উন্নত বিশ্বের দেশে পরিণত হতে চাইলে আমাদের স্বপ্ন যে গতিতে এগিয়েছে এ গতি ২০৪১ পর্যন্ত চালিয়ে যেতে হবে। ’

‘যারা ঋণ নেয় তারা শোধ করবে না এমন মানসিকতায় নেয় না। যে যাচাই-বাছাই করে লোন দেওয়া হয় তা ভালো করে করতে হবে। মাঝে মধ্যে দেখা যায় চুক্তি করার পর চার্জ হিসেবে তা পাই না। এগুলো দেখার জন্য প্রফেশনাল ফার্ম নিয়োগ করতে হবে। তাহলে ওই লোনগুলো খারাপ লোনে যাবে না। ’

ঋণ আদায় করার কৌশল বের করার তাগিদ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা ভালো ও খারাপকে একসঙ্গে মেলাবো না। কাউকে জেলেও পাঠাবো না বন্ধও করে দেবো না। স্প্রেড (সুদ ও আমানতের হারের পার্থক্য) বেশি হলে আমানত ফেরত আসে না, এসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে। যত কম রেটে ঋণ নিতে পারবেন তত কম রেটে ঋণ দিতে পারবেন।

ব্যাংকিং খাত সম্পর্কে তিনি বলেন, সরকারি ব্যাংকগুলোর দায়িত্ব হবে জনগণকে কত সেবা দেওয়া যায়, ব্যাংকের সবাইকে খারাপ বলবো না। যে কাজটি করলে ভালো হবে তা আমাদের করতে হবে।  

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা একটি ভালো জায়গায় অবস্থান করছি, বাকি অবকাঠামো আপনারা তৈরি করবেন।  

পুঁজিবাজার নিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের পর বিশ্বাসের প্রতিফলন দেখা গেলো পুঁজিবাজারে। পুঁজিবাজার একদিন দু’দিনের জন্য না, লোভে পড়ে এখানে আসা যাবে না। দীর্ঘ সময়ের জন্য এগুলো বিবেচনা করতে হবে। এজন্য প্রশিক্ষিত বিনিয়োগকারীদের নিয়ে আসতে হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৯
এসই/জিসিজি/আরআইএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।