ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

স্থিতিশীল সবজি-মাছ বাজার, কমছে চালের দাম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৯
স্থিতিশীল সবজি-মাছ বাজার, কমছে চালের দাম কারওয়ান বাজারের মাছের বাজারে ক্রেতার ভিড়/ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: বিগত দুই সপ্তাহের তুলনায় রাজধানীর বাজারগুলোতে স্থিতিশীল রয়েছে সবজি, মাছ-মাংস ও মসলার দাম। তবে নিম্নমুখী হাওয়া বইতে শুরু করেছে চালের বাজারে। তবে আগামী সপ্তাহে গরু ও খাসির মাংসের দাম বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন মাংস ব্যবসায়ীরা। 

শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর মিরপুর-১১ নম্বর, ৬ নম্বর ও কারওয়ান বাজার এলাকা ঘুরে পাওয়া এ চিত্র পাওয়া যায়।  

আটাশ, নাজিরশাইল, মিনিকেট ও কাজল লতা চালের দাম গত সপ্তাহের থেকে কেজিতে ১ টাকা থেকে ১ টাকা ৩০ পয়সা কমেছে।

বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে আটাশ প্রতিকেজি ৩৮-৪০ টাকা, নাজির (ইন্ডিয়ান) প্রতিকেজি ৫৪-৫৬ টাকা, মিনিকেট প্রতিকেজি ৫২-৫৪ টাকা এবং কাজল লতা ৪৪-৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  

মিরপুর-৬ নম্বর বাজারের চাল বিক্রেতা আক্কাস আলী বলেন, নির্বাচনের আগে চালের দাম কম ছিল। নির্বাচনের পর অনেক বেড়েছে। এখন আবার কমতে শুরু করেছে। মিনিকেট ৫০ কেজির বস্তা ২৫শ ৭০ টাকায় কিনতাম। এখন সেটা ২৫শ ৩০ থেকে ২৫শ ৪০ টাকায় কিনছি।  

সবজি বাজারখুব একটা ঝাঁজ নেই পিঁয়াজের বাজারে। ইন্ডিয়ান আর দেশি- দু’ধরনের পিঁয়াজের দামই ২০ টাকার আশপাশে। তবে পাল্লা হিসেবে নিলে ইন্ডিয়ান পিয়াজ কিছুটা কমে পাওয়া যাবে। ইন্ডিয়ান পিঁয়াজের পাল্লা ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। আর দেশি পিঁয়াজের পাল্লা ১০০ থেকে ১১০ টাকা। মরিচে ঝাল থাকুক বা না থাকুক আগের সপ্তাহের মতোই ঝাল আছে মরিচের দামে। প্রতিকেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।

এছাড়া দাম প্রায় আগের মতোই আছে মৌসুমী সবজিতে। মাঝারি আকারের ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ১৫ থেকে ২০ টাকায়। তবে ব্রকলি হলে দাম ৫ টাকা বেশি। কারওয়ান বাজারে গোল বেগুন পাওয়া যাচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। আর লম্বাগুলোর প্রতিকেজি পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। এছাড়াও সিম প্রতিকেজি ২০ টাকা, টমেটো ২৫ থেকে ৩০ টাকা, পাতাকপি ১৫ থেকে ২০ টাকা, পিঁয়াজ কলি ২০ টাকা, গাজর ২০ টাকা, মূলা ২৫ টাকা, পেঁপে ১০ টাকা, আলু ১৬ থেকে ২০ টাকা, করল্লা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মটরশুঁটি ৫০ টাকা এবং কাঁচা কলা প্রতিহালি ১৫ থেকে ২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ভইত্তা শাক পাওয়া যাচ্ছে ১০ টাকা প্রতি আঁটি। তবে দাম বেড়েছে শসার। গত সপ্তাহেও প্রতিকেজি ৩০ টাকায় বিক্রি হওয়া শসা এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।  

দোকানে মাংসের পসরাবাড়তি দামের হাওয়া লেগেছে ডালের বাজারেও। প্রতিকেজি মসুর ডাল পাওয়া যাচ্ছে ৮৬ টাকায়, আর পুরনো ডালের কেজি মূল্য ১০০ টাকা। মুগ ডালের দাম যথাক্রমে ৯০ ও ১১০ টাকা। মিরপুর-১১ নম্বরের ডাল বিক্রেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহেও এসব ডাল বিক্রি করেছি ৭৪ টাকা থেকে ৯০ টাকার মধ্যে। এখন এই দাম। প্রতিকেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা বেড়েছে। কোম্পানি থেকে দাম বাড়ায়। তাই আমাদেরও দাম বাড়াতে হয়েছে।

বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১০০ টাকা (রূপচাঁদা)। আর ৫ লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে ৪৮০ টাকায়। আর খোলা তেল প্রতি লিটার ৮৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।  

মাছের বাজার মোটামুটিভাবে আগের সপ্তাহের মতোই রয়েছে। প্রায় ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকায়। মাঝারি ও ছোট সাইজের কোরাল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। মাঝারি আকারের প্রতিকেজি রুই ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, মাগুর ৪০০ টাকা, শোল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কৈ (দেশি) ৫০০ টাকা, বোয়াল প্রতিকেজি ৫০০ টাকা আর পাঙ্গাস পিস হিসেবে ১৮০ টাকা আর কাঁটা হলে ২০০ টাকা। দেশি শিং মাছের দাম প্রতিকেজি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা আর চাষের হলে দাম প্রায় ৫০০ টাকা। দেশি চিংড়ি পাওয়া যাচ্ছে প্রতিকেজি হাজার টাকায়। আর চাষের গলদা বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা ৬০০ টাকা কেজিতে এবং বাগদা কিনতে হলে প্রতিকেজির দাম পড়বে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা।  

মাংসের মধ্যে মুরগির দাম আছে স্থিতিশীল। গত সপ্তাহের মতো এবারও প্রতিকেজি দেশি মুরগি ৩৮০ টাকা এবং ব্রয়লার ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কেজিতে ১০ টাকা দাম বেড়েছে পাকিস্তানি সোনালি মুরগির। এদিকে গরু ও খাসির মাংসের দাম এখন পর্যন্ত না বাড়লেও আগামী সপ্তাহে দাম বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন মাংস ব্যবসায়ীরা।

বর্তমানে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকায় আর খাসির দাম প্রতিকেজি ৭৫০ টাকা। কারওয়ান বাজারের মাংস বিক্রেতা কাল্লু মিয়া বলেন, এখনই গরুর মাংসের দাম বেশি। চার-পাঁচদিন যাবত আমাদের বেশি দামে কেনা লাগছে। তবে আমরা দাম বাড়াইনি। কিন্তু আগামী সপ্তাহেও এমন থাকলে দাম বাড়ানো লাগবে।  

রাজধানীতে পশুর সরবরাহ কম থাকার কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে জানান এই মাংস বিক্রেতা।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৯
এসএইচএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।