ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অর্থনীতি ‘নেক্সট লেভেলে’ পৌঁছাতে প্রয়োজন বিনিয়োগ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৯
অর্থনীতি ‘নেক্সট লেভেলে’ পৌঁছাতে প্রয়োজন বিনিয়োগ  অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: দেশের অর্থনীতিকে ‘নেক্সট লেভেলে’ পৌঁছাতে আরও বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। 

তিনি বলেছেন, গত পাঁচবছরে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার বিশ্বে সর্বোচ্চ। বেসরকারি খাতে উন্নতির জন্যই এই অবস্থানে আসা সম্ভব হয়েছে।

আর এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে বিদ্যুতের সফলতা। ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতিকে ‘নেক্সট লেভেলে’ পৌঁছাতে আরও বিনিয়োগ প্রয়োজন।  

রোববার (০৩ ফেব্রুয়ারি) ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালমান এফ রহমান এসব কথা বলেন।  

‘বিদ্যুৎ উৎপাদনে অভাবনীয় সাফল্য: গতিশীল প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিদ্যুতের সর্বোত্তম ব্যবহার’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।  

সভার প্রধান অতিথি সালমান এফ রহমান বলেন, গত ১০ বছর আগে কেউ যদি আমাকে অর্থনৈতিকভাবে আজকের বাংলাদেশের কথা বলতো আমি বিশ্বাস করতাম না। তবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা এই জায়গায় চলে এসেছি, এটা বাস্তব।  

দেশে বিনিয়োগের জন্য ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়া নাগাদ জিডিপিতে (মোট দেশজ উৎপাদন) দুই অংকের সংখ্যায় নিয়ে যেতে চাই। সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের ইকোনমিক জোনগুলো তাদের কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে।  

‘বিনিয়োগের জন্য ব্যাংক ঋণে সুদের হার কমানোর জন্য আমরা কাজ করছি। ইতোমধ্যে আমরা অর্থমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা এগিয়ে নিয়েছি। ’

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে সালমান এফ রহমান বলেন, এই সরকার ব্যবসাবান্ধব সরকার। আপনারা বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায়ীদের জন্য ‘ইজ অব বিজনেস’ পরিস্থিতি আরও সুবিধাজনক উপায়ে নিয়ে আসা হবে।  

বিদ্যুৎ উৎপাদনের নানা অর্জন তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ২০৪১ সালের আগে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অর্জন করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। বিগত ১০ বছরে এছাড়া দেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে কাজ করছে সরকার।  

এ সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন তিনি।  

ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি ও বিদ্যুতের সরবরাহ পেতে পরিকল্পিত উপায়ে এবং সরকার ঘোষিত অর্থনৈতিক জোনগুলোতে ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুলতে আহ্বান জানাচ্ছি।  

সভার শুরুতে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এক উপস্থাপনায় বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ৯২ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায়। এর মধ্যে ৮৭ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা নিয়ে সন্তুষ্ট। আর এই বিদ্যুতের বেশিরভাগ যোগান দেয় বেসরকারি খাত।  

তিনি জানান, দেশে প্রায় ১০ হাজার ৯৩৫  মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয় বেসরকারি খাত থেকে। আর সরকারি খাত থেকে আসে প্রায় ৮ হাজার ৯০১ মেগাওয়াট।  আর কিছু আসে বিদেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে।  

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, আমাদের দেশের সার্বিক বিদ্যুতের অবস্থা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভালো। তবে সমস্যা হচ্ছে আমরা কোয়ালিটি ইলেক্ট্রিসিটি পাচ্ছি না। ভোল্টেজের আপডাউন এবং সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।  

`বিদ্যুৎ লাইন এবং সংযোগ স্থাপনে দীর্ঘসূত্রিতা এখনও রয়েছে যা আমাদের কাটিয়ে উঠতে হবে। জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বেসরকারি খাত। তাই এই খাতের উন্নয়নে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে। ’ 

এ সময় দেশের শিল্পখাতে যেন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানির জোগান থাকে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৯
এসএইচএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।