ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কমেছে পেঁয়াজের দাম, চড়া সবজিসহ মাছ-মাংসে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৯
কমেছে পেঁয়াজের দাম, চড়া সবজিসহ মাছ-মাংসে -

ঢাকা: রাজধানীর বাজারগুলোতে মান ও প্রকারভেদে কমেছে পেঁয়াজের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। তবে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ আগের মতোই ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। 

এছাড়া গত সপ্তাহে হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া সবজির দাম এখনও বেশ চড়া। আলু ও পেঁপে ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ, মাংস, তেল ও ডিম। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে সব ধরনের চালসহ মুদি পণ্যের দাম। দ্রব্যমূল্যের চড়া দামের কারণে জীবনযাপনের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় সরবরাহ কমেছে। তাই সবজির বাজার চড়া৷ আর শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় মাছ ও মাংসের দাম একটু বেশি থাকে এসময়ে। এদিকে ক্রেতারা বলছেন, সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থা ভালো হলে এ অবস্থার সৃষ্টি হতো না।

শুক্রবার (২২ মার্চ) রাজধানীর সূত্রাপুর, শ্যামবাজার, নয়াবাজার, দয়াগঞ্জ,  যাত্রাবাড়ী, সেগুনবাগিচার কাঁচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, গত এক মাস ধরে বাজারগুলোতে নতুন সবজি পাওয়া গেলও গত সপ্তাহ থেকে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। বাজারে এখন সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে নতুন আসা সজনা ও বরবটি। গত সপ্তাহের মতো বাজার মানভেদে সজনা ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর বরবটি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে।  

দামের দিক থেকে এরপরেই রয়েছে পটল ও করলা। বিভিন্ন বাজারে পটল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে করলা। ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কচুর লতি। শিম গত সপ্তাহের মতো ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, ফুলকপি ও বাধাকপি ৪০    থেকে ৪৫ টাকা, ঝিঙ্গা ও ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি  ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ মানভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, শালগম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে। পেঁপে আগের মতোই ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, গাজর পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি। আর গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শসার দাম কমে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

সূত্রাপুর বাজারের সবজি ব্যবসায়ী আবদুল বলেন, বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহে একটু বাড়ালেও এ সপ্তাহে এসে কেজিতে ৫ টাকা কমে গেছে। আর শীতের সবজি শেষ হয়ে আসায় ফুলকপি, শিম, লাউয়ের দাম চড়া। পটল, বরবটি, ঢেঁড়স বাজারে নতুন আসায় দাম একটু বেশি। কিছুদিন গেলে এগুলোর দাম কমে যাবে। তবে অন্যান্য সবজির দাম কমার খুব একটা সম্ভাবনা নেই।

পেঁয়াজ ও মরিচে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও মাছ ও মাংসের দামে ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি কম। কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়তে থাকা ব্রয়লার মুরগির দাম নতুন করে আর বাড়েনি। আগের সপ্তাহের মতো বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি।

ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি দাম অপরিবর্তিত রয়েছে লাল লেয়ার মুরগি ও পাকিস্তানি কক মুরগি। লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা কেজি। আর পাকিস্তানি কক মুরগি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়। গরুর মাংসের কেজি আগের মতোই ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজিতে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের মতো সব থেকে কম দামে বিক্রি হচ্ছে তেলাপিয়া। এই মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। পাঙাস ২০০ থেকে ২২০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, শিং চাষের ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, চিতল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

অপরিবর্তিত রয়েছে চাল ও অন্যান্য মুদিপণ্যের দাম। বাজারে প্রতি কেজি নাজিরশাইল ৫৮  থেকে ৬০ টাকা, মিনিকেট চাল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা, বিআর ২৮ নম্বর ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা, চিনি আমদানি করা ৫০ টাকা, ডাল ৪০ থেকে ৯০, লবণ ৩০ থেকে ৩৫, পোলাউর চাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়।  

তবে বেড়েছে সব ধরনের ডিমের দাম। মুরগির ডিম প্রতি ডজনে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ টাকা। হাঁসের ডিম ১৫৫ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ১৭০ টাকা ডজন বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেল ৯০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর ৫ লিটারের প্রতি গ্যালনে রূপচাঁদা  ৫০০ টাকা, পুষ্টি ৪৭০ টাকা, তীর ৪৯০ টাকা, ফ্রেস ৪৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খোলা সরিষার তেল প্রতি কেজি ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৯
জিসিজি/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।