ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

যে কারণে ‘দেশসেরা’ বিটিআরআই গ্রিন টি ফ্যাক্টরি

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১৯
যে কারণে ‘দেশসেরা’ বিটিআরআই গ্রিন টি ফ্যাক্টরি অত্যাধুনিক বিটিআরআই গ্রিন টি ফ্যাক্টরি। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: ঢুকতেই তাজা সবুজ চা-পাতার ঘ্রাণ! তারপর ফ্যাক্টরির ভেতরে প্রবেশ করলে সে  ঘ্রাণ আরও তীব্রতা পায়। পাকা সড়কের দু’ধারে চা গাছেদের সারি থেকে ধেয়ে আসা এই নীরবে ঘ্রাণ জানান দেয়– চা শিল্পের সতেজতার কথা।  

সদ্যনির্মিত এই চা ভবন মানবকল্যাণেই বিনির্মিত। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, গ্রিন টি অত্যন্ত উপকারী একটি পানীয়।

যা আমাদের অধিক ব্যবহৃত ‘ব্ল্যাক-টি’ (কালো চা) থেকে বহুগুণ উপকারী।  

চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) এ সদ্য উদ্বোধন করা হয়েছে ‘দেশসেরা’ গ্রিন-টি ফ্যাক্টরি।  

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯) বিকেলে লাল ফিতা কেটে এর শুভ উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের (বিটিবি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর মো. আল মুস্তাইদুর রহমান পিএসসি। কয়েকটি প্রসেসিং ইউনিটের মাধ্যমে ঘণ্টায় প্রায় দুশো কেজি সবুজ চা পাতা ফিডিং (প্রক্রিয়াজাত) করতে সক্ষম প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ফ্যাক্টরি।

‘দেশসেরা’ শব্দটি শুধু অধিক নির্মাণব্যয়কেই উল্লেখ করছে তা আসলে নয়; এর অর্থ এই ফ্যাক্টরি থেকে উৎপন্ন গ্রিন টি পুরোপুরিভাবে চা পাতার সমস্ত গুণাগুণ ও মান অক্ষুণ্ন রেখে মানবশরীরের উপকারী করে উৎপন্ন করা হয়।  

কী কারণে ‘দেশসেরা’ বিটিআরআই গ্রিন টি ফ্যাক্টরি? এর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়।  
অত্যাধুনিক বিটিআরআই গ্রিন টি ফ্যাক্টরি।  ছবি: বাংলানিউজবিটিবি’র চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর মো. আল মুস্তাইদুর রহমান পিএসসি এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের গ্রিন টি ফ্যাক্টরিতে চা পাতার নির্যাসটা তিনটি অত্যাধুনিক ড্রায়ার মেশিনের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত হয়। ফলে পর্যায়ক্রমে এমনভাবে ড্রাই করা হয় যে পাতার নির্যাসটা পাতাতেই থেকে যায়। প্রথম পর্যায়ে চা পাতাগুলোকে ঝলসিয়ে নির্যাসটা বের হওয়ার পরে পুনরায় ওই নির্যাসটাকে এমনভাবে তিন পর্যায়ে শুকানো হয় যে পাতার নির্যাসটা আবার পাতাতেই অক্ষুণ্ন থাকে।  

মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর আরও বলেন, এ পর্যায়ে বাংলাদেশে চলমান যে অল্প কয়েকটি গ্রিন টি ফ্যাক্টরি আছে তারা চা পাতার নির্যাসটা ড্রেনআউট করে ফেলে দেয়। ফলে গ্রিন টির আসল স্বাস্থ্যকর উপাদানগুলোই তাতে থাকে না। কিন্তু আমাদের এই নবনির্মিত বিটিআরআই গ্রিন টি ফ্যাক্টরির উৎপাদন করা গ্রিন টিতে আসল স্বাস্থ্যকর উপাদানগুলো পুরোপুরিভাবে অক্ষুণ্ন রয়েছে; যা আমাদের মানবশরীরের জন্য বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর।
 
শরীরে ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমানো, শরীরের ওজন কমানো, বার্ধক্যজনিত হাড়ের ক্ষয়রোগ, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি প্রভৃতির ক্ষেত্রে গ্রিন টি বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে বলে জানান বিটিবির চেয়ারম্যান।  

আরও বলেন, আমাদের তৈরি গ্রিন টি চায়ে ‘এক্সটেনজেন্সি’ (চায়ের আকর্ষণ) এবং ‘বিটারনেস’ (তিতা ভাব) অত্যধিক বেশি। এই পাতাগুলো প্রচুর আকর্ষণ এবং প্রচুর তিতা ভাব বিদ্যমান থাকায় অন্য গ্রিন টির তুলনায় বিটিআরআই গ্রিন টি দ্বিগুণ কার্যকর। ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে ওষুধের মতোই অনেকটা কার্যকর।  

এই ‘এক্সটেনজেন্সি’ এবং ‘বিটারনেট’ই হলো আমাদের স্পেশালিটি (বিশেষত্ব)। যা অন্য গ্রিন টি ফ্যাক্টরিতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এই চা বাংলাদেশে বহু মানুষের উপকারে আসবে। আমাদের চা পাতার মান উন্নত হওয়ায় প্রতি কেজি গ্রিন টির মূল্য ধরা হয়েছে দুই হাজার টাকা বলে জানান বিটিবি র চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর মো. আল মুস্তাইদুর রহমান পিএসসি।  

বাংলাদেশ সময়: ১০০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১৯ 
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।