ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

মন্ত্রীর কথার প্রতিফলন নেই চালের বাজারে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৯
মন্ত্রীর কথার প্রতিফলন নেই চালের বাজারে

ঢাকা: রোববার (২৪ নভেম্বর) ব্যবসায়ীদের এক অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছিলেন, বর্তমানে দেশে চালের মওজুদ রয়েছে। আমরা চালে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাজারও নিয়ন্ত্রণে। এক কথায় বলতে পারি চালের দাম স্বাভাবিক রয়েছে।

তবে, বাজারে পরিস্থিতি এর বিপরীত। দাম বেড়েছে সব ধরনের চালের।

ক্রেতাকে বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে চাল। এদিকে দেশে ধান ও চালের মজুদ থাকার পরও দাম বাড়ার কোনো কারণ দেখছেন না সাধারণ মানুষ।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর মালিবাগ, শান্তিনগর, কারওয়ান বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় এসব তথ্যই উঠে এসেছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারি চালের বাজারে প্রতিবস্তা মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ২২৫০ টাকায়, আটাশ চাল ১৭৫০ টাকা, নাজিরশাইল ২৩৫০ থেকে ৩১০০ টাকায়। অথচ মাত্র দশদিন আগে এ বাজারে প্রতিবস্তা মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছিলো ২০৫০ টাকায়, আটাশ চাল ১৪৫০ টাকা, নাজিরশাইল ১৯৫০ থেকে ২৭০০ টাকায়।

অন্যদিকে, খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মিনিকেট চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা, নাজিরশাইল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, আটাশ ৪০ টাকা, ঊনত্রিশ ৩৮ থেকে ৪০ টাকা, স্বর্ণা চাল ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা, চিনিগুড়া ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ দশদিন আগে বাজারভেদে প্রতিকেজি মিনিকেট চাল ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা, নাজির ৫০ থেকে ৫২ টাকা, আটাশ ৩৪ টাকা থেকে ৩৫ টাকা, ঊনত্রিশ ৩২ থেকে ৩৫ টাকা, স্বর্ণা চাল ২৮ থেকে ৩০ টাকা, চিনিগুড়া ৯০ থেকে ৯২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।

পেঁয়াজের পর চালের বাজার দাম বাড়ায় মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে। ক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের মতোই চালের বাজারেও সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সাধারণ ব্যবসায়ীরা দায়ি না। মিলকল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়েছেন, যার প্রভাব পড়ছে বাজারে।

শামিমা সুলতানা নামে শান্তিনগর বাজারের এক ক্রেতা বলেন, পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের মতোই চালের বাজারে সিন্ডিকেট কাজ করছে। এর পেছনে সরকারি কিছু মানুষ দায়ী আছে, অথচ মন্ত্রী বলেছেন বাজার নিয়ন্ত্রণে একাধিক টিম কাজ করছে। বাজার মনিটরিং নেই, চালের দামের সঙ্গে খাদ্যমন্ত্রীর কথার কোনো মিল নেই। এখনই বাজার নিয়ন্ত্রণে না আনলে পেঁয়াজের মতো পরিবেশ হবে।

দাম বাড়ার বিষয়ে বিক্রেতারা দুষছেন মিল মালিকদের। তাদের মতে, মিল মালিকরা দর বাড়িয়েছেন বলেই বাড়তি দামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতা আবু রায়হান বলেন, চালের দাম বাড়ার কারণ আমরাও দেখি না, দেশে ধানের অভাব নেই, দাম কমার কথা। মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়েছেন। সেখান থেকে আমাদের বাড়তি দামে কিনে বিক্রি করতে হচ্ছে। চালের দাম বাড়ার পেছনে বিক্রেতাদের কোনো হাত নেই।

গত ২৪ নভেম্বর ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর বছরব্যাপী চাহিদা, বাংলাদেশে পণ্যের উৎপাদন, আমদানি, মজুত নিয়ে বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছিলেন, মানুষের অর্থনৈতিক আয় বাড়ার সঙ্গে খাদ্যপণ্যে পরিবর্তন এসেছে। তারা এখন মোটা চালের পরিবর্তে সরু (চিকন) চাল খায়। এজন্য সরু চালের দাম কিছুটা বাড়লেও মোটা চাল আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।

সরু চালের দাম বাড়ার পর ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা তা সমাধান করেছি। এখন চালের বাজার স্বাভাবিক। চালের বাজারে কোনো কারসাজি না হয় সে জন্য আমাদের ১০টি টিম কাজ করছে।

** ধর্মঘট ১০ দিন চললেও চালের দাম বাড়বে না: খাদ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৯
ইএআর/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।