ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘লোভ সংবরণ করতে পারলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত সম্ভব হবে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
‘লোভ সংবরণ করতে পারলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত সম্ভব হবে’

ঢাকা: ব্যবসায়িক অতি লোভ ত্যাগ করতে না পারলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা অনেকটাই কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, অতি লোভ সংবরণ করে যদি আমরা আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারি তাহলে আমরা আমাদের উদ্দেশ্য অর্জন করতে সক্ষম হবো এবং জনগণের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, পাহাড়া দিয়ে কাউকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, যদি তার বিবেক, মন তাকে পাহাড়া না দেয়।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত ঢাকার বিজয়নগরের হোটেল-৭১ এ ‘হোটেল-রেস্তোরাঁ, বেকারি ও মিষ্টির কারখানার গ্রেডিং’ দেওয়া অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আপনাদের যারা ‘এ’ গ্রেড পেলেন আমরা আশা করি সরকারের দেওয়া এই স্বীকৃতি ধরে রাখবেন এবং সামনের বছর ‘এ+’ গ্রেড পাবেন। রেস্তোরাঁর ভালো মান বজায় রাখতে হবে। এখন যদি ব্যবসায়িক অতি লোভ ত্যাগ না করতে পারি তাহলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা অনেকটাই কঠিন হবে।  

তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হলে শুধু খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে তা সম্ভব নয়। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। যারা ব্যবসা করেন তারা নিজেদের মানসিক তৃপ্তির জন্য হলেও ভোক্তার হাতে নিরাপদ খাদ্য তুলে দিন।  

যারা খাবার খেতে যাবেন- তারা রেস্তোরাঁয় প্রবেশের সময় স্টিকার দেখেই জেনে নিতে পারবেন, এখানকার ভেতরের পরিবেশ পরিস্থিতি কেমন, কিচেনের অভ্যন্তরের কী ধরনের দূষণ বা কতটা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার রয়েছে, বলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

এ সময় খাদ্য সচিব নাজমানারা খানুম বলেন, এটি একটি আন্তর্জাতিক মানসম্মত গ্রেডিং পদ্ধতি। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। আমরাও সেভাবেই এই হোটেল গ্রেডিং করছি। ভবিষ্যতেও দেশব্যাপী রেস্তোরাঁগুলোকে এই গ্রেডিংয়ের আওতায় আনা হবে।  

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল কস্তুরি হোটেলে স্টিকার লাগিয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টন ও সচিবালয় এলাকায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে এই উদ্যোগ চালু করা হয়েছিল। আজকের অনুষ্ঠানে মোট ১৩টি ‘এ’, ৯টি ‘বি’ এবং ৭টি ‘সি’ গ্রেডের স্টিকার দেওয়া হয়।  

রেস্তোরাঁয় সবুজ স্টিকার দেখলে বুঝতে হবে এখানকার মান ‘এ+’ (এ প্লাস) অর্থাৎ উত্তম। কমলা রংয়ের স্টিকার দেখলে বুঝতে হবে এটি অনিরাপদ। কমলা স্টিকারযুক্ত রেস্তোরাঁগুলো এক মাসের মধ্যে রেস্তোরাঁর মান ভালো না করলে বাতিল হবে তাদের লাইসেন্স। ভোক্তা ও ভোজনরসিকদের স্বার্থে ‘এ+’, ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ এই চার ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ঢাকা মহানগরীর হোটেল ও রেস্তোরাঁকে।  

গ্রেডিং সিস্টেমের আওতায় খাবারের মান, বিশুদ্ধতা, পরিবেশ, ডেকোরেশন, মনিটরে রান্নাঘরের পরিবেশ দেখা যাওয়ার ব্যবস্থা ও ওয়েটারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ভিত্তিতে রেস্তোরাঁগুলোকে চার ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করা হবে। এসব বিচারে ৯০ নম্বরের বেশি স্কোর হলে সবুজ বর্ণের স্টিকার ‘এ+’, স্কোর ৮০ এর ঊর্ধ্বে হলে নীল বর্ণের স্টিকার বা ‘এ’; ৫৫ থেকে ৭৯ পর্যন্ত স্কোর হলে হলুদ বর্ণের ‘বি’ এবং ৪৫ থেকে ৫৫ স্কোর হলে কমলা বর্ণের ‘সি’ ক্যাটাগরি পাবে।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারওয়ার জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির নেতা, বেকারি ও মিষ্টির দোকানের মালিক প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
জিসিজি/এসকে/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।