ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ইলিশে সয়লাব বাজার, দামও হাতের নাগালে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২০
ইলিশে সয়লাব বাজার, দামও হাতের নাগালে

খুলনা: রূপালি ইলিশের ছড়াছড়ি এখন খুলনার বাজারে। দাম কম হওয়ায় খুশি ক্রেতারাও। ভরা মৌসুমে যা পাওয়া যায়নি তা মিলছে এখন, বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রচুর বড়, মাঝারি ও ছোট ইলিশ।

যেখানে ইলিশের ভরা মৌসুমে এক কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হতো হাজার টাকার ওপরে। অথচ সেই ইলিশ এখন কেনা যাচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকায়।

মহানগরীর কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়ত, পাইকারি মোকাম ৫ নম্বর ঘাট, নতুন বাজার, রূপসা ঘাট, বড় বাজার, শেখপাড়া বাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজার, নিউ মার্কেট, বৈকালী বাজারে অসময়ের ইলিশে সয়লাব। সচরাচর মাঘের শেষে নদীতে ইলিশ পাওয়া না গেলেও এ বছরের চিত্র উল্টো। ইলিশের সরবরাহ বেশি থাকায় দামও কিছুটা কম।

এসব বাজারে শীতকালীন অন্য মাছের ভিড়েও ইলিশের দাপট ব্যাপক। শীতকালীন শোল, বোয়াল, কৈ মাছের পাশাপাশি ইলিশের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশ। দামের ক্ষেত্রে কিছুটা নমনীয় বলে ক্রেতাদের ইলিশের প্রতি নজরও বেশি।
এদিকে অসময়ে বাজারে ইলিশ আসায় মৌসুমে ইলিশ পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত ১০ বছরেও শীত মৌসুমে এত বেশি ইলিশ ধরা পড়েনি। কারণ শীতের মৌসুমে উপকূলে সাধারণত ইলিশ মাছ তেমন পাওয়া যায় না, প্রচলিত এ ধারণা দীর্ঘদিনের। তবে এবার যেন তার ব্যতিক্রম ঘটিয়ে বাজারে উল্লেখযোগ্য হারে ইলিশের দেখা পাওয়া যাচ্ছে। ফলে নিম্নআয়ের মানুষ যারা মৌসুমে ইলিশ খেতে পারেননি তারা এখন ইলিশের স্বাদ নিতে পারছেন।

তারা আরও জানান, সাধারণত এ সময় বাজারে ইলিশের চেয়ে শীতকালীন মাছের চাহিদা বেশি থাকে। তবে এবছর ইলিশের সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও অনেকটা কমে গেছে। তাই ক্রেতাদের মধ্যেও বেড়েছে ইলিশের চাহিদা। ইলিশের  দামের প্রভাব পড়েছে অন্য প্রজাতির মাছেও। এর সুফল পাচ্ছেন ক্রেতারা।

ক্রেতাকে মাছ দেখাচ্ছেন িএক বিক্রেতা।  ছবি: বাংলানিউজশুক্রবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) ইউনি ভিশনের ব্যবস্থপনা পরিচালক হেলাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, অন্যান্য বছর এ সময় বাজারে দাপট থাকে সামুদ্রিক মাছের, কিন্তু এ বছর অসময়ে ইলিশের দাপট শুরু হয়েছে। ইলিশ রক্ষায় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এছাড়া শীতে এসময় দেশি মাছের যোগান বেশি বলে ইলিশের দামও কিছুটা কম।
রফিক নামে এক বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, বাজার ছাড়াও নগরীর অনেক মোড়ে মোড়ে পাওয়া যাচ্ছে তুলনামূলক কম দামে বড় সাইজের ইলিশ।

কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়তের মেসার্স মদিনা ফিস ট্রেডার্স পরিচালক মো. আবু মুসা বাংলানিউজকে বলেন, বরিশাল ও ভোলাসহ বেশ কিছু নদ-নদীতে এই শীত মৌসুমেও প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। আকারে বেশ বড় এসব ইলিশ অন্যান্য সময়ের চেয়ে খেতেও সুস্বাদু। মাছ বিক্রির নির্দিষ্ট বাজার ছাপিয়ে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে শহরের অলি-গলি ও বাসা বাড়িতে। শীতে সাধারণত ইলিশ মাছের সরবরাহ কম থাকে। কিন্তু এ বছর শীতে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। ধরা পড়া ইলিশের গড় ওজনও বেড়েছে।

তিনি আরও জানান, এক কেজি ওজনের নদীর ইলিশের দাম সাড়ে ৭শ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রামের কেজি দাম সাড়ে ৬শ টাকা। আর ৫০০ গ্রামের কেজি সাড়ে ৪শ টাকা।

একই বাজারে ব্যবসায়ী আরিফ জানান, নদীগুলোতে এখন চলছে ইলিশ ধরার ধুম। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশের দল আটকা পড়ছে জেলেদের জালে। সাধারণত শীতের মৌসুমে অলস সময় কাটাতেন জেলেরা। নদীতে তেমন ইলিশ ধরা পড়তো না। তবে চলতি বছর এই মৌসুমে ইলিশ ধরা পড়ায় বেজায় খুশি জেলেরা। এর প্রভাবে দাম কমেছে ইলিশের। এতে খুশি ক্রেতারাও।
তিনি জানান, সাগরেও ইলিশ ধরা পড়ছে তবে চাহিদা বেশি নদীর ইলিশের।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭ , ২০২০
এমআরএম/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।