ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

নিরাপদ সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে একনেকে প্রকল্প উঠছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০
নিরাপদ সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে একনেকে প্রকল্প উঠছে

ঢাকা: জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে যথাযথমানে সাইন-সিম্বল ও রোড মার্কিং স্থাপনসহ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনাগুলো উন্নয়নের মাধ্যমে নিরাপদ সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে। সড়ক ব্যবহারকারীদের বিশেষ করে চালক ও পথচারীদের নিরাপদ চলাচলের স্বার্থে এই উদ্যোগ।

‘জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রয়োজনীয় সাইন ও রোড মার্কিং স্থাপন এবং চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ স্থানসহ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ করিডোর উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় এসব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।  

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ৬৩৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি চলতি সময় থেকে জুন ২০২২ মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্পটি মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি)  শেরে বাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে।
 
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সিনিয়র সহকারী প্রধান মো. সাইফুল ইসলাম মন্ডল বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রকল্পটি মঙ্গলবার একনেক সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। মূলত ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝূঁকিপূর্ণ সড়কের কারণেই সড়কে প্রাণ ঝরছে। দুর্ঘটনারোধে সারাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক চিহ্নিত করে উন্নয়ন করবে সরকার। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় বাঁকে সাইন ও মার্কিং করবে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সড়ক নিরাপদ হবে দুর্ঘটনাও কমে যাবে। ’

জানা গেছে, সারাদেশে বর্তমানে সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার সড়কে নেই কোনো সাইন ও মার্কিং। ফলে সড়কে দুর্ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকার ৭৩৩, চট্টগ্রামের ৭২১, খুলনার ৯০০, গোপালগঞ্জের ২৭৬, রাজশাহীর ৭৫০, ময়মনসিংহের ৪৪১, সিলেটের ৪৯১, রংপুরের ৫৪৭, কুমিল্লার ৩১১ এবং বরিশালের ৩৩০ কিলোমিটার অংশে নিরাপত্তা যথাযথমানে উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি।

সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাইন ও মার্কিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যানবাহন কোথায় কী বাঁক নেবে, ট্রাফিক কী নির্দেশনা দিচ্ছে, যানবাহনের গতিসীমা কত হবে ইত্যাদি সাইনের মাধ্যমে আগে থেকেই জানতে পারেন চালক।

অন্যদিকে যানবাহনের লেন ঠিক করা এবং কোন অংশে যানবাহন ওভারটেক করতে পারবে ইত্যাদি নির্দেশনা দেয় সড়কের মার্কিং।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) সূত্র জানায়, জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থা তথা টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি নিরাপদ মহাসড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে সরকার। বর্তমানে সড়ক নেটওয়ার্কের দৈর্ঘ্য ২১ হাজার ৩০২ কিলোমিটার। সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, নির্ভরযোগ্য, নিরাপদ ও টেকসই অবকাঠামো নির্মাণের জন্য সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রধান চ্যালেঞ্জ। মহাসড়কগুলোতে ট্রাফিক সাইন ও রোড মার্কিং স্থাপনের হার এখনো সন্তোষজনক নয়। এরইমধ্যে কিছু স্পটে সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত সাইন-মার্কিং করা হয়েছে। এরপরও ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে এখনো সাইন-মার্কিং দৃশ্যমান নয়।

২০১২ সালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের আওতায় জরিপের মাধ্যমে ১ হাজার ৩৭২ কিলোমিটার সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০০ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন করা হয়েছে। তবে, এখনো বেশিরভাগ সড়ক মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশের হাইওয়ে পুলিশ ইউনিটের কোনো সাইন-সিম্বল নেই এবং প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এমন তালিকার ভিত্তিতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ চিহ্নিত সব স্থানগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে সরকার।

সাইন-মার্কিং কাজ বাস্তবায়নে পাঁচ কোটি টাকার প্রকৌশল যন্ত্রপাতি কেনা হবে। প্রকল্পে স্থানীয় প্রশিক্ষণ খাতে তিন কোটি, বৈদেশিক প্রশিক্ষণ খাতে দেড় এবং সচেতনামূলক প্রশিক্ষণ খাতে তিন কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় টেকনিক্যাল পরামর্শক খাতে আট কোটি, সুপারভিশন পরামর্শক খাতে দেড় কোটি, সুপারভিশন পরামর্শক খাতে ১৫ কোটি, সড়ক নিরাপত্তা সচেতনতা বৃদ্ধি খাতে দুই কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২০
এমআইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।