ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ইতালিসহ কয়েকটি দেশ ক্রয়াদেশ বাতিল করতে চাচ্ছে: টিপু মুনশি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২০
ইতালিসহ কয়েকটি দেশ ক্রয়াদেশ বাতিল করতে চাচ্ছে: টিপু মুনশি

ঢাকা: করোনার প্রভাবে ইতালিসহ বেশ কিছু দেশ তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল করতে চাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

তিনি বলেন, সব দেশ তো বাতিল করছে না। বিশেষ করে ইতালি বাতিল করতে চাচ্ছে।

করোনার জন্য তারা খুব বড় রকমের বিধিনিষেধ দিতে যাচ্ছে। এজন্য কেউ কেউ ক্রয়াদেশ বাতিল করতে চাচ্ছে। তবে আমাদের দেশের কোনো গার্মেন্টস শিল্প বন্ধ করে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। গার্মেন্টস কর্মীদের সচেতন করা হচ্ছে। এর কিছুটা প্রভাব আমাদের অর্থনীতি ও আমদানির ওপর পড়বে। সেটা কীভাবে পূরণ করা যায় সেই চেষ্টাই এখন চলছে।

রোববার (১৫ মার্চ) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস ২০২০ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও হটলাইন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবকদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যেখান থেকে কাঁচামাল আনা হয় সেখানে আমরা গতি কম দেখছি। সুখের বিষয় হলো চীনে শ্রমিকরা আবার কারখানায় ফিরেছেন। তারা আবার নতুন করে শুরু করেছে। আরেকটা সমস্যা আমাদের নজরে এসেছে। কিছু কিছু দেশ তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল করতে চাচ্ছে অথবা অন্যকোনো খানে দিয়ে দিচ্ছে। ফলে আমার মনে হয় সেখানে আমাদের কিছুটা সমস্যা হবে।  

কোন কোন দেশ আদেশ বাতিল করতে চাচ্ছে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ইতালি কিছু কিছু ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে। সঠিক সময় মাল না পাওয়ার কারণে তারা আদেশ বাতিল করতে চাচ্ছে। আবার তারা বলছে পণ্য প্লেনে করে পাঠাও। সেখানে সমস্যা রয়েছে৷ তাছাড়া যে সমস্ত দেশ নেবে তাদেরও করোনার ভয় আছে। সার্বিক অবস্থা আপনারা সবাই জানেন, সারা পৃথিবী একটা অস্থির সময় পার করছে। আমরা আশা করছে খুব শিগগিরই এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে জমায়েত স্থান পরিহার করতে। বড় বড় গার্মেন্টসে তিন-চার হাজার শ্রমিক কাজ করে। তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে টিপু মুনশি বলেন, এখনও সে রকম কোনো সমস্যা হয়নি যে গার্মেন্টস শিল্পে এ ধরনের....। তারপরও প্রতিটি গার্মেন্টসে সচেতনতা তৈরি করা হয়েছে। অধিকাংশ কারখানায় মাস্ক, হাত ধোয়ার জন্য সাবানসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমন অবস্থা তৈরি হয়নি যে বন্ধ করে দিতে হবে।  

দেশের বাইরে থেকে যারা আসছে তারা তো বিভিন্ন স্থানে লোকজনের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে- এখানে আপনারা কী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশ থেকে আসা কমে গেছে। এখন আমরা ডিজিটাল অর্ডার নেই, দাম নির্ধারণ করি। আজ থেকে ২৫/৩০ বছর আগে যে পরিস্থিতি ছিল সেটা কিন্তু এখন আর নেই। সমস্যা হচ্ছে কাঁচামালে। আমাদের ওভেন খাতের জন্য ৬০ শতাংশ কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। যেটা নিটিং ৯০ শতাংশ আমরা নিজেরাই তৈরি করি। ফলে সাপ্লাই ও সেলিং দুই খাতেই সমস্যা। এটা শুধু আমাদের জন্য না সারা পৃথিবী সমস্যায় পড়েছে।

তিনি বলেন, আশার কথা হলো চীনে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের কিছুটা উন্নিত হয়েছে। নতুন করে ইউরোপে গেছে। যে উহানে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছিল সেখানে অনেকটা নরমাল হয়ে গেছে। তাদের ৯০ শতাংশ লোক কাজে ফিরেছে। এছাড়া গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পণ্য রপ্তানি শুরু করেছে আমাদের দেশে।

বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম রহমান, ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান তপন কান্তি ঘোষ, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, বিভাগীয় কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সদস্য শেখ কবির হোসেনসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবুল কুমার সাহা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২০
জিসিজি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।