ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চড়া সবজি বাজার, খুচরায় বাড়তি চালের দাম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০২০
চড়া সবজি বাজার, খুচরায় বাড়তি চালের দাম বাজারে পছন্দের সবজি দেখছেন ক্রেতা। ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: গত এক মাসের বেশি সময় ধরে চড়া শাক-সবজি ও নিত্যপণ্যের বাজার। বাজারে ৫০ টাকার নিচে যেন মিলছেই না কোনো ধরনের সবজিই।

 সবজির পাশাপাশি খুচরা বাজারে  কেজিতে চালের দাম বেড়েছে প্রায় পাঁচ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া দাম বেড়েছে ভোজ্যতেল, চাল, চিনি ও রসুনের।

তবে নতুন করে আবারও দাম বেড়েছে সবজির বাজারে। সবজিভেদে পাঁচ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে বাড়তি রয়েছে শাকের দাম ও। আর বাজারে খাসির মাংসের দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংস, মাছ, মুরগি, ডাল ও গরম মসলার দাম। তবে ডজনে কিছুটা কমেছে ডিমের দাম।

এদিকে শাক-সবজির নতুন করে দাম বাড়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে ক্রেতা ও বিক্রেতার।

বিক্রেতারা বলছেন, সবজির সিজন না হওয়ায় প্রতি বছর এ সময়ে শাক-সবজির দাম বাড়তি থাকে। এবার বন্যায় ফসলের ক্ষতি হওয়ায় দাম আরও বেড়েছে।  

আর ক্রেতার অভিযোগ, বাজারে একটি জিনিসের দাম বাড়লে অপরটির দাম বাড়িয়ে দেন বিক্রেতা। দাম বাড়ার পেছনে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কাজ করছে।

শুক্রবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর রামপুরা, মগবাজার, মালিবাগ, মালিবাগ রেলগেট, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা, ফকিরাপুল, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনি বাজার ও খিলগাঁও বাজার ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।



এসব বাজারে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে প্রতিকেজি বরবটি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, সিম ১৮০ টাকা, গাজর ৯০ থেকে ১০০ টাকা, বেগুন আকারভেদে ৭০ থেকে ১১০ টাকা, ধনিয়াপাতা ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা।

কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে প্রতিকেজি দেশি শসা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, উস্তা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, মানভেদে ঝিঙা-ধন্দুল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কাঁকরোল আকারভেদে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পটল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, আলু ৪০ টাকা, কচুর লতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। তবে দাম অপরিবর্তিত আছে টমেটো, লাউ, জালি কুমড়া ও কাঁচাকলার।  

এসব বাজারে প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, প্রতিহালি কাঁচকলা ৪০ টাকা, প্রতি পিস জালি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা, লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর প্রতি আঁটিতে (মোড়া) তিন থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে এসব বাজারে লাল শাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা, মুলা ও কলমি শাক ১৫ টাকা, পুঁই শাক ২০ টাকা, ডাটা শাক ২০ টাকা, লাউ ও কুমড়ার শাক ৪০ টাকা।

মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি বাজারের সবজি বিক্রেতা মন্টু শেখ বলেন, বর্তমান সবজির সিজন না হওয়ায় প্রতি বছর এসময়ে দাম চড়া থাকে। এছাড়া সম্প্রতি বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে। পাইকারি বাজারে সবজির ঘাটতি থাকায় দাম বেশি। তাই খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে।

তবে এ বাজারের ক্রেতা আলমগীর হোসেন বিক্রেতা মন্টুর সঙ্গে একমত নন। তিনি বলেন, বাজারে এক জিনিসের দাম বেড়ে গেলে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে অন্যগুলোর দাম বাড়িয়ে দেন।


আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ডাল, চিনি ও ভোজ্যতেল। বাজারে বর্তমানে প্রতিকেজি ডাবলী ডাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, অ্যাঙ্কার ৫০ থেকে ৫২ টাকা, দেশি মসুর ডাল ৯০ থেকে ১২০ টাকা। আর প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০২ টাকা ও চিনি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা। এসব বাজারে খুচরায় প্রতিকেজি আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, পায়জাম ৪৮ টাকা, মিনিকেট ৫৮ টাকা, জিরা মিনিকেট ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৫৫ টাকা, পোলাও চাল (খোলা) ৯৫ থেকে ১০০ টাকা।

এদিকে এসব বাজারে খাসির মাংসের দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত (আগের দাম) রয়েছে গরুর মাংস, মাছ ও মুরগির দাম। কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮২০ টাকা, গরু মাংস ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা। বর্তমানে এসব বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়ালার বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২২০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা কেজিদরে। তবে অপরিবর্তিত আছে মাছের বাজার।

বাজারে প্রতিকেজি রুই (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৮০ টাকা, মৃগেল ১৬০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙাস ১০০ থেকে ১৬০ টাকা, কাতল ১৭০ থেকে ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কৈ ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, পাবদা ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, মলা ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, দেশি টেংরা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৬০০ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিদরে।

বর্তমানে প্রতি সোয়াকেজি থেকে দেড়কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা, প্রতি এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা, প্রতি ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশে ৫৫০ টাকা কেজিদরে, প্রতি ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, ছোট ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি।

পেঁয়াজ ও আদার বাজার অপরিবর্তিত থাকলেও দাম বেড়েছে রসুনের। এসব বাজারে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা।

আর বর্তমানে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজিদরে, চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা ও কেরালার আদা ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০২০
ইএআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।