ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

করোনা সংকটেও প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশের পেছনে ভারত-পাকিস্তান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২০
করোনা সংকটেও প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশের পেছনে ভারত-পাকিস্তান

ঢাকা: দক্ষিণ এশিয়ায় করোনা ভাইরাস মহামারির প্রভাব অব্যাহত আছে। এ কারণে এ অঞ্চল সবচেয়ে খারাপ-মন্দায় ডুবে আছে।

অনানুষ্ঠানিকভাবে কর্মীদের ওপর অযৌক্তিক খড়গ নেমে এসেছে। লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। কমে এসেছে কর্মসংস্থানের সুযোগ। এসব পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়াকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও।  

তারপরও প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভারত পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে থাকছে বাংলাদেশ। করোনার প্রভাবে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি মাত্র ১ দশমিক ৬ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি হবে ০ দশমিক ৫ শতাংশ। আর দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে ভারত। তাদের প্রবৃদ্ধি হবে মাইনাস ৯ দশমিক ৬ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার (০৮ অক্টোবর) বিশ্বব্যাংক থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।  

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতির ওপর বিশ্বব্যাংক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।  

করোনা মহামারির আগে বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছিল ২০১৯ সালে প্রবৃদ্ধি হবে ৮ দশমিক ১ শতাংশ। এর পরে ২০২০ সালে তা হবে ৮ দশমিক ২ শতাংশ।

তবে ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের অর্থনীতি কিছুটা প্রাণ ফিরে পেয়ে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৪ শতাংশ হবে বলে দাবি সংস্থাটির।

বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসে দেখা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে এ অঞ্চলে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে মালদ্বীপ। তাদের প্রবৃদ্ধি হবে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ। এরপরে শ্রীলঙ্কা ৩ দশমিক ৩ শতাংশ, আফগানিস্তান ২ দশমিক ৫, ভূটান ১ দশমিক ৮, নেপাল ০ দশমিক ৬ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, করোনার প্রভাবে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং উৎপাদন ও নির্মাণ খাতে মজুরি কমে যাবে। ফলে বেসরকারি ভোগব্যয় কমে যেতে পারে। তৈরি পোশাকের চাহিদা তৈরি হবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এসব কারণে বিনিয়োগ ও রপ্তানিতে চরম বিপত্তি দেখা দিতে পারে। সম্প্রতি রেমিট্যান্স বাড়লেও তা সাময়িক মনে করছে বিশ্বব্যাংক।  কারণ হিসেবে বিশ্বব্যাংক বলেছে, করোনার কারণে ফেরত আসা প্রবাসীদের সঞ্চয়ের কারণে রেমিট্যান্স এখন বাড়ছে। তবে আগামীতে এ ধারা নাও থাকতে পারে।

দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টভিগ শ্যাফার বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় কোভিড-১৯ প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ক্ষতি করেছে।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। তবে প্রভাব কমানোর জন্য সরকারের নীতি সঠিক দিকে আছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ও ভুটানের বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং অনানুষ্ঠানিক খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লাখ লাখ শ্রমজীবী মানুষ দারিদ্র্যের কবলে পড়তে যাচ্ছে এবং এ অঞ্চলে করোনার প্রভাব দীর্ঘায়িত হতে পারে।

উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে দেশের প্রবৃদ্ধি ৮ শমিক ২ শতাংশ হবে বলে বাংলাদেশের প্রত্যাশা। সম্প্রতি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এশিয়ার অর্থনীতি নিয়ে সর্বশেষ প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২০
এমআইএস/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।