ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সৈয়দপুরে কৃষকের স্বপ্ন খাচ্ছে কারেন্ট পোকায় 

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২০
সৈয়দপুরে কৃষকের স্বপ্ন খাচ্ছে কারেন্ট পোকায়  আমন ধানের গাছের গোড়ায় পোকা আক্রমণ করেছে, ছবি: বাংলানিউজ

নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিস্তীর্ণ আমন ক্ষেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এ পোকাকে কৃষির ভাষায় বলা হচ্ছে বাদামি গাছ ফড়িং।

এ পোকার আক্রমণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এর ফলে কৃষকরা আমনের ভালো ফলনের যে স্বপ্ন দেখেছেন, তা পূরণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।  

কৃষি বিভাগ জানায়, সৈয়দপুরের কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর, বোতলাগাড়ি ও বাঙালিপুরসহ পাঁচটি ইউনিয়নে এ বছর আট হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৩ হাজার ৯২৩ মেট্রিক টন। কিন্তু উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাড়ন্ত আমন ক্ষেতে কারেন্ট ও মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। কারেন্ট পোকা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। কৃষকরা বাজার থেকে কীটনাশক কিনে স্প্রে করছেন। আমন ধানের গাছ বড় হওয়ায় স্প্রে করতে কৃষকদের অসুবিধা হচ্ছে।

বন্যা, অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার ধকল কাটিয়ে উঠে কৃষকরা আমন ক্ষেতের পরিচর্যায় মন দেন। আশা ছিল ভালো ফলন হবে। কিন্তু আমনের ক্ষেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দিশেহারা করে তুলেছে তাদের। কারণ এ পোকা দ্রুত এক জমি থেকে আরেক জমিতে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে স্প্রে করেও খুব একটা লাভ হচ্ছে না।  

উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কৃষক আতহার আলী, বোতলাগাড়ির আব্দুল কাদের ও খাতামধুপুরে মঙ্গলু মামুদ বলেন, এসময় কারেন্ট পোকার আক্রমণ আমাদের চিন্তায় ফেলেছে। মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের সঠিক সময় পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে কীটনাশক বিক্রেতারা যে ওষুধ ব্যবহার করতে বলছেন, আমরা সেটিই ব্যবহার করছি।
 
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিনা বেগম জানান, উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তবে তা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। একদিকে রোদ, আবার বৃষ্টি হচ্ছে। এমন আবহাওয়ার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান উষ্ণ আবহাওয়ায় রোপা আমন ধানের ক্ষেতে বাদামি গাছ ফড়িংয়ের (কারেন্ট পোকা) আক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। কোনো কোনো জায়গায় এজন্য আক্রমণ শুরু হয়েছে৷ তবে তা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এখন এ পোকা দমন করতে না পারলে আক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। আর তা হলে এ উপজেলার শতভাগ আমন ধানই নষ্ট হতে পারে। কাজেই নিয়মিত ধান ক্ষেত পর্যবেক্ষণ করতে হবে, গাছের গোড়ায় ভালোভাবে লক্ষ্য করতে হবে৷ তবে এরই মধ্যে আমন ক্ষেতে পোকার আক্রমণ হয়ে থাকলে দুই থেকে তিন হাত পরপর ফাঁকা করে দিতে হবে৷ এছাড়া প্লেনাম ১০ গ্রাম/স্পেলেন্ডর ৮ গ্রাম/পাইটাফ ১০ গ্রাম/পাইরাজিন ১০ গ্রাম/হপারশট ১০ গ্রামসহ অনুমোদিত যে কোনো ওষুধ ১৬ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৮ শতাংশ  জমিতে ধান গাছের গোড়ায় স্প্রে করতে হবে (৩৩ শতাংশের বিঘায় কমপক্ষে ৪ মেশিন স্প্রে করতে হবে)।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।