ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আলু কারসাজি: অভিনব কায়দায় আড়তদারের প্রতারণা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২০
আলু কারসাজি: অভিনব কায়দায় আড়তদারের প্রতারণা

ঢাকা: প্রায় দুই মাস ধরে দেশে আলুর বাজারে অস্থিরতা চলছে। আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে দুই দফা মূল্যনির্ধারণ করে দেয় সরকার।

এরপরও সরকার নির্ধারিত মূল্যে দাম রাখা হচ্ছে না। ব্যবসায়ীর ইচ্ছেমতো বাজারে আলুর দাম নির্ণয় হচ্ছে।

অন্যদিকে, বাজার তদারকি জোরদার করা হলেও ব্যবসায়ীরা নিচ্ছেন অভিনব কায়দায় প্রতারণার আশ্রয়। আড়তগুলোতে সরকার নির্ধারিত মূল্য তালিকা (পাইকারি ৩০ টাকা কেজি) টানানো হলেও মূলত দাম রাখা হচ্ছে ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা। বিশেষ করে কারওয়ান বাজারের পাইকারি আড়তে এমন প্রতারণা করছেন আড়তদাররা।  

বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) সংশ্লিষ্ট এলাকা ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ২২টি আড়তে কম-বেশি পাইকারি বিক্রি করা হচ্ছে আলু। এসব আড়তের অধিকাংশগুলোতে মূল্য তালিকা নেই। যেগুলোর আছে সেসব তালিকায় নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করা হয়নি। সব তালিকায় প্রতিকেজি আলুর দাম লেখা রয়েছে ৩০ টাকা। বাজার তদারকি শুরু হলেই তারিখ পরিবর্তন করা হয়। তারিখ পরিবর্তন হলেও দামের পরিবর্তন করা হয় না। আর সরকার নির্ধারিত তালিকা থাকায় জরিমানাও গুনতে হয় না।

তবে বাস্তব চিত্র একেবারেই উল্টো। পাইকারে বিক্রেতার ইচ্ছা মাফিক দাম রাখা হয়। প্রতিকেজি আলুর দাম রাখা হচ্ছে ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা। ক্রেতারা প্রতিবাদ করলেই বিক্রেতার উত্তর ‘৩৫ টাকায় আলু কিনে ৩০ টাকায় কিভাবে দিবো। বাজার মনিটরিং করা হয় তাই সরকার নির্ধারিত দাম উল্লেখ করছি, এটা না করলে জরিমানা গুনতে হবে। ’

শরিফুল নামে এক খুচরা বিক্রেতা জানান, আড়তে ৩০ টাকা দাম লেখা থাকলেও তারা কোয়ালিটি অনুযায়ী ৩৭ থেকে ৩৮ টাকা আলুর দাম রাখছেন। সেখান থেকে আলু কেনার পর লেবার, বোর্ড ভাড়া, বাজারের চাঁদা দিয়ে পাঁচ টাকা খরচ হয়। আবার দোকান ভাড়া, কর্মচারী বিল বাদ দিয়ে কতো টাকায় বিক্রি করবো বলেন। পাইকার ব্যবসায়ীরা প্রতারণা করে এটা কেউ দেখে না আর আমরা দাম বেশি রাখলেই প্রচার হয়।

পাইকারি বিক্রেতা আফজাল জানান, হিমাগারের খোঁজ-খবর কেউ রাখে না, শুধু আমাদের এখানে সবাই আসে। এক কেজি আলু হিমাগার থেকে আড়তে আসতে ৩৫ টাকার বেশি খরচ পড়ছে, লেবার খরচ, ঘর ভাড়া আছে। কিভাবে তাহলে ৩০ টাকায় বিক্রি করবো।

তবে ৩০ টাকার তালিকা টাঙিয়ে ৩৬ টাকা দাম রাখা যুক্তিসংগত কিনা? হানিফ নামে এক ব্যবসায়ীকে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এটা না করলে আমার প্রতিষ্ঠানকে ২০/৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। আমার বিক্রি নাই এ অবস্থায় জরিমানা দিলে খাবো কি? তাই এভাবে স্বল্প পরিসরে মালামাল বিক্রি করছি।

ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডেপুটি পরিচালক (যুগ্মসচিব) মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, দেশে এখনও পর্যাপ্ত আলু আছে। কেউ প্রতারণা করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্যবসায়ীকে অবশ্যই বিক্রি ও কেনার রসিদ রাখতে হবে এবং প্রয়োজনে আমাদের দেখাতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২০
ইএআর/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।