ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বেনাপোল বন্দরে কাঁচা পণ্য খালাসের ইয়ার্ড পরিবর্তনে নাখোশ ব্যবসায়ীরা

উপজেলা করেসপন্ডেট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২০
বেনাপোল বন্দরে কাঁচা পণ্য খালাসের ইয়ার্ড পরিবর্তনে নাখোশ ব্যবসায়ীরা

বেনাপোল (যশোর): দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে আমদানিকৃত পচনশীল কাঁচা পণ্য খালাসের কার্যক্রম ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড থেকে সরিয়ে টিটিবি আই মাঠে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এতে করে কাঁচা পণ্য আমদানি বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বেনাপোল স্থলবন্দরকে একটি চিঠি দিয়ে কাঁচামাল খালাসের কার্যক্রম বন্দরের ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড থেকে সরিয়ে টিটিবি আই মাঠে নেওয়ার নির্দেশনা দেয়।

এদিকে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা কাঁচামাল খালাসের জন্য বন্দরের ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ডে রাখতে চান। এ সিদ্ধান্তে দুই পক্ষই তাদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। দ্রুত এ সমস্যা সমাধান না হলে বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি কাস্টমস ও বন্দরের পরস্পরের মধ্যে সর্ম্পকের অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
 
কাঁচামাল আমদানিকারক কামরুল ইসলাম জানান, মোটরসাইকেল আমদানিকারকরা যেমন সরকারের রাজস্ব দিচ্ছেন, তেমনি আমরা কাঁচামাল আমদানিকারকরাও সরকারের রাজস্ব দিচ্ছি। তাহলে মোটরসাইকেল আমদানিকারকদের সুবিধা দিতে কাঁচামাল আমদানিকারকদের কেনো হয়রানি বা ক্ষতিগ্রস্ত করবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ? আগে আমাদের আমদানিকৃত কাঁচামাল খালাসের জন্য টিটিবি মাঠ উপযোগী করুক, তাহলে আমাদের সেখানে পণ্য খালাস করতে সমস্যা নেই।

বেনাপোল বন্দরের পণ্য খালাসকারী হ্যান্ডলিংক শ্রমিকরা বলেন, আমাদের রাতভর বন্দরে এ মাঠে কাঁচামাল খালাস করেতে হয়। এখানে পণ্য খালাসে আমদের বিভিন্ন সুবিধা আছে। সেখানে খোলা মাঠে পণ্য খালাস করা আমাদের জন্য অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুজিবর রহমান জানান, বন্দরের একেকটি ইয়ার্ড পণ্য খালাসের সুবিধার্থে একেক রকম করে বানানো হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন না করে হঠাৎ এক জায়গার পণ্য, আরেক জায়গায় খালাস করা হলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বিষয়টি বিবেচনা করে দু’পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, কাঁচামাল খালাসের জন্য উপযুক্ত স্থান হিসেবে এ ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ডটি তৈরি করা। অবকাঠামোহীন খোলা মাঠে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা কীভাবে খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পঁচনশীল পণ্য খালাস করবেন? এতে করে ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়ে এ বন্দর ছাড়বেন।

বেনাপোল কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম জানান, বৃহত্তর বাণিজ্যের স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাঁচামালের চেয়ে মেশিনারিজ ও মোটরসাইকেল আমদানিতে সরকারের অনেক বেশি রাজস্ব আসবে।

বেনাপোল বন্দরের যেসব পণ্য আমদানি হয়, তার বড় একটি অংশ হলো খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্যদ্রব্য তৈরির কাঁচামাল। যা অল্প সময়েই পচে যায়। এসব কাঁচামাল থেকে প্রতিদিন সরকারের প্রায় আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা রাজস্ব আসে। কাঁচামাল খালাসের জন্য বন্দরের নির্ধারিত ৩১ নম্বর ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড রয়েছে। যেখানে ঝড়, বৃষ্টিতে পণ্য খালাস করতে যাতে অসুবিধা না হয়, সেজন্য শেড করা আছে। এবং শ্রমিকদের বিশ্রমের ও নামাজের জন্য স্থান রয়েছে। বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রয়েছে অফিস। কিন্তু হঠাৎ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে বাধ সাধেন বন্দর কর্মকর্তা বন্দরের ব্যবসায়ী মহল ও শ্রমিকরা। এ নিয়ে কাস্টমস আর বন্দরের মধ্যে অসন্তোষ দেখা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।