ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চামড়া শিল্পনগরীর প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ ঋণ সুবিধা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২১
চামড়া শিল্পনগরীর প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ ঋণ সুবিধা ...

ঢাকা: সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তরিত শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত বিভিন্ন কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেক ঋণ/বিনিয়োগ নিয়মিতভাবে পরিশোধিত না হওয়ায় তা বিরূপমানে শ্রেণীকৃত হয়ে পড়ছে। ফলে এ খাতে স্বাভাবিক ঋণ/বিনিয়োগ প্রবাহ বজায় রাখা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হচ্ছে না।

এসব প্রতিষ্ঠানের ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা দিতে ব্যাংকগুলো নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বুধবার (০৬ জানুয়ারি) এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করে সকল তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।  

এতে বলা হয়েছে, যে সকল চামড়া শিল্প প্রতিষ্ঠান এ ব্যবসা অব্যাহত রাখতে সমর্থ নয়, সে সকল প্রতিষ্ঠানসমূহকে নিন্মোক্ত এক্সিট পলিসির আওতায় ব্যাংকের ঋণ/বিনিয়োগ পরিশোধের সুযোগ দেওয়া যাবেঃ ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ভিত্তিক ঋণ/বিনিয়োগ স্থিতির ন্যূনতম ২% অর্থ ডাউন পেমেন্ট হিসাবে নগদে আদায় সাপেক্ষে এ সার্কুলারের আওতায় এক্সিট সুবিধা দেওয়া যাবে। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ভিত্তিতে যে সকল প্রতিষ্ঠানের ঋণ/বিনিয়োগ স্থিতি ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত, সে সকল প্রতিষ্ঠানসমূহকে দায়-দেনা পরিশোধের জন্য সর্বোচ্চ ৩ বছর এবং যে সকল প্রতিষ্ঠানের ঋণ/বিনিয়োগ স্থিতি ৫ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে, সে সকল প্রতিষ্ঠানসমূহকে দায়-দেনা পরিশোধের জন্য সর্বোচ্চ ৫ বছর সময় দেওয়া যাবে। বিদ্যমান বিধি-বিধান ও আইন-কানুন পরিপালন সাপেক্ষে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে স্থগিত সুদ হিসাবে রক্ষিত সুদ, অনারোপিত সুদ ও দন্ড সুদ মওকুফ বিষয়ে পর্ষদ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই আসল ঋণ/বিনিয়োগ মওকুফ করা যাবে না।  

চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তরিত যে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসা অব্যাহত রাখবে, সে সকল প্রতিষ্ঠানের ঋণ/বিনিয়োগ পুনর্গঠন/পুনঃতফসিলিকরণের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত নীতিমালাসমূহ অনুসরণীয় হবেঃ ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ভিত্তিক ঋণ/বিনিয়োগস্থিতির ন্যূনতম ২% অর্থ ডাউন পেমেন্ট হিসাবে নগদে আদায় সাপেক্ষে এ সার্কুলারের আওতায় পুনর্গঠন/পুনঃতফসিল সুবিধা দেওয়া যাবে। এ প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ ১ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ১০ বছর (১ বছর+৯ বছর) মেয়াদে ঋণ/বিনিয়োগ পুনর্গঠন/পুনঃতফসিল করা যেতে পারে। বিদ্যমান বিধি-বিধান ও আইন-কানুন পরিপালন সাপেক্ষে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে স্থগিত সুদ হিসাবে রক্ষিত সুদ, অনারোপিত সুদ ও দন্ড সুদ মওকুফ বিষয়ে পর্ষদ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই আসল ঋণ/বিনিয়োগ মওকুফ করা যাবে না।

পুনর্গঠনকৃত/পুনঃতফসিলিকৃত ঋণ/বিনিয়োগ স্থিতির (মওকুফ অবশিষ্ট) উপর সর্বোচ্চ ৯% হারে সুদ আরোপ করা যাবে। ইতোপূর্বে চামড়া খাতের জন্য ঘোষিত বিভিন্ন নীতিমালার আওতায় যারা ঋণ পুনর্গঠন/পুনঃতফসিল/সুদ মওকুফ সুবিধা গ্রহণ করেছে, তারাও এ সার্কুলারের আওতায় সুবিধা পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে। জাল-জালিয়াতি বা অন্য কোনো ধরনের প্রতারণা/অনিয়মের মাধ্যমে সৃষ্ট ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহীতার অনুকূলে এ সার্কুলারে বর্ণিত সুবিধা দেওয়া যাবে না।

মওকুফ করা সুদ পৃথক সুদবিহীন অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতে হবে। এক্সিট বা পুনর্গঠন/পুনঃতফসিলের শর্ত মোতাবেক সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ হবার পর পৃথক হিসাবে স্থানান্তরিত সুদ চূড়ান্ত মওকুফ হিসেবে বিবেচিত হবে। রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিশেষায়িত ব্যাংকসমূহের জন্য সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং অনুবিভাগ কর্তৃক ইস্যুকৃত নির্দেশনা পরিপালনীয় হবে। এ সার্কুলারের আওতায় সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ/বিনিয়োগ হিসাবসমূহের বিপরীতে আরোপিত সুদ প্রকৃত আদায় ব্যতিরেকে আয়খাতে স্থানান্তর করা যাবে না।  

এ সার্কুলারে প্রদত্ত সুবিধা নেওয়ার পর নির্ধারিত ৬টি মাসিক কিস্তি/২টি ত্রৈমাসিক কিস্তি পরিশোধে গ্রাহক ব্যর্থ হলে এ সুবিধা বাতিল বলে গণ্য হবে। নির্ধারিত সময়ে ঋণ আদায় না হলে ঋণ শ্রেণীকরণ ও প্রভিশনিং এর প্রচলিত নিয়ম প্রযোজ্য হবে এবং ব্যাংক তার প্রচলিত নিয়মে ঋণ আদায় নিশ্চিত করবে।  

এ সার্কুলারের আওতায় পুনর্গঠন/পুনঃতফসিল সুবিধা গ্রহণে ইচ্ছুক গ্রাহক নগদে ডাউন পেমেন্ট পরিশোধ সাপেক্ষে চলতি বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে অর্থায়নকারী ব্যাংকের নিকট আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে ঋণ/বিনিয়োগ পরিশোধ বাবদ ইতোপূর্বে জমা করা অর্থ ডাউন পেমেন্ট হিসেবে বিবেচিত হবে না। যথাযথভাবে ডাউন পেমেন্ট পরিশোধ সাপেক্ষে এ সার্কুলারের আওতায় ঋণ/বিনিয়োগ পুনর্গঠন/পুনঃতফসিলিকরণ বা এক্সিট সুবিধা চেয়ে কোনো গ্রাহক আবেদন করলে, আবেদন প্রাপ্তির তারিখ হতে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে গ্রাহকের আবেদনের বিষয়ে ব্যাংক সিদ্ধান্ত নেবে।

এ সার্কুলারের আওতায় সুবিধা নেওয়ার সময় সোলেনামার ভিত্তিতে চলমান মামলাসমূহ নিষ্পত্তি করা যেতে পারে। পরবর্তী সময়ে কোনো গ্রাহক প্রদত্ত সুবিধার কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে তার অনুকূলে প্রদত্ত সকল সুবিধা বাতিল বলে গণ্য হবে এবং গ্রাহকের বিরুদ্ধে স্থগিত মামলা পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।  

এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২১
এসই/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।