ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রণোদনার অর্থ মূল্যস্ফীতির চাপ তৈরি করতে পারে

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২১
প্রণোদনার অর্থ মূল্যস্ফীতির চাপ তৈরি করতে পারে

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি শিথিল করা, স্বল্প সুদে পুনঅর্থায়ন তহবিলের আওতায় ঋণ বিতরণ এবং মহামারির মধ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সহায়তার জন্য সরকারের প্রণোদনা অর্থনীতিতে একটি বড় অংকের তারল্য সরবরাহ করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ বার্ষিক মুদ্রানীতি পর্যালোচনা পর্যবেক্ষণ করে বলা হয়েছে, তারল্যের এমন প্রবাহ অদূর ভবিষ্যতে দেশে কিছুটা মূল্যস্ফীতির চাপ তৈরি করতে পারে।

পর্যালোচনাটি বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংক সময়োপযোগী ও যথাযথ একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যেমন ১ দশমিক ২২ ট্রিলিয়ন টাকারও বেশি পরিমাণের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।  

নীতিমালা শিথিল করা, স্বল্প ব্যয়ে পুনঅর্থায়ণ পরিকল্পনা ছাড়াও অর্থনীতির দুর্বল অংশগুলোকে সমর্থন করে এমন উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় পর্যাপ্ত তারল্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ছয় বছর পর মুদ্রানীতি পর্যালোচনা প্রকাশ করেছে এবং বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে গবেষণা দলে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ছাড়াও আছেন চিফ ইকোনোমিস্টস ইউনিটের মহাব্যবস্থাপক ড. মো. এজাজুল ইসলাম, উপমহাব্যবস্থাপক ড. মো. সেলিম আল মামুন ও মো. মাহিনুর আলম।

মূল্যস্ফীতির প্রবণতা বিশ্লেষণ করে পর্যালোচনায় উল্লেখ করা হয়েছে, বৈশ্বিক পণ্য ও জ্বালানির দামের ধীর পুনরুদ্ধার বহিউত্স থেকে মূল্যস্ফীতির চাপ কিছুটা ইঙ্গিত দেয়।  

অপর দিকে অভ্যন্তরীণ কৃষি ফসল এবং অকৃষি ফসল উত্পাদন বৃদ্ধির ফলে আগামী মাসগুলোতে খাদ্যস্ফীতি হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা ইতোমধ্যে ২০২০ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের খাদ্যস্ফীতি হ্রাসের প্রতিফলন ঘটেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশ্লেষণ ও সতর্ক করে বলেছে, খাদ্য সরবরাহের সাম্প্রতিক উর্ধ্বমুখী প্রবণতা মূলত সরবরাহ-ব্যাহত হওয়ার কারণে হতে পারে, যা প্রধান মূল্যস্ফীতিতে কিছুটা উল্টো ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক এ জাতীয় যে কোনও ঘটনায় সতর্ক থাকবে এবং প্রয়োজনীয় নীতিমালা গ্রহণের জন্য সে অনুযায়ী কাজ করবে।

মুখ্য মূল্যস্ফীতি হার লক্ষ্যবস্তুর সঙ্গে সামঞ্জস্য রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য বিচক্ষণ সামষ্টিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে অব্যাহত রাখতে হবে।

সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী গেলো বছরের জুলাই মাসে ঘোষিত ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য প্রণীত বাৎসরিক মুদ্রানীতি নীতিতে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৪০ শতাংশের মধ্যে রাখার ওপর জোর দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষণা দল ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ইকনোমেট্রিক কৌশল প্রয়োগ করে বলেছেন, চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ০৪ শতাংশ থেকে ৫.৯৩ শতাংশের মধ্যে পরিবর্তন হতে পারে।

২০২০ অর্থবছরে কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) ভিত্তিক বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক শতাংশ রেকর্ড করা হয়েছিল। ২০১৯ অর্থবছরে এই হার ছিল ৫.৪৭ শতাংশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২১
এসই/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।