ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রণোদনা প্যাকেজের যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি: জসিম উদ্দিন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২১
অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রণোদনা প্যাকেজের যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি: জসিম উদ্দিন বক্তব্য রাখছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

ঢাকা: মহামারীকালীন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সিএমএসএমই খাতে দ্রুততার সঙ্গে প্রণোদনা প্যাকেজের যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (০৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে ‘বিরাজমান পরিস্থিতিতে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় ব্যাংকিং খাতের ভূমিকা: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ভারতে কোভিড প্রণোদনার ৩৮ শতাংশ, থাইল্যান্ডে ৩৩ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ২৪ শতাংশ অর্থ সিএসএমইখাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে বরাদ্দের হার মাত্র ২২ শতাংশ। রপ্তানি ও বৃহৎখাতে প্রণোদনা প্যাকেজের বাস্তবায়ন সন্তোষজনক হলেও সিএমএসএমই খাতে বাস্তবায়ন হার মাত্র ৭৭ শতাংশ। এমন অবস্থায় কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে প্রণোদনা ঋণের দ্রুত ছাড় জরুরি হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, অনিচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এসএমই খাতের জন্য ‘ডেডিকেটেড ডেস্ক’ চালু, এসএমই সার্ভিস সেন্টার, নতুন ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রবর্তনসহ বাংলাদেশে ব্যাংক বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে কোনো কোনো ব্যাংকে এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে অনীহা দেখা যাচ্ছে।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ও জামানতবিহীন ঋণ সুবিধা চালু এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম সহজ ও সক্রিয় করার পরামর্শ দেন এফবিসিসিআই সভাপতি।

অন্যদিকে, এসএমই খাতের বিকাশে টার্ম লোনের মেয়াদ বাড়িয়ে ১০ থেকে ১৫ বছর ও গ্রেস পিরিয়ড দুই বছর করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি। এছাড়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকা এসএমইদের সংশ্লিষ্ট ট্রেডবডির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যাংক ঋণ দেওয়ার সুপারিশ করেন।

বৃহত্তর স্বার্থে শিল্প ঋণের সীমা নবায়ন বা পুনঃতফসিলীকরণের সময় ডাউন পেমেন্টের হার ১-২ শতাংশ নির্ধারণ করলে শিল্পায়ন প্রক্রিয়া সহজ হবে উল্লেখ করে মো. জসিম উদ্দিন বলেন, কস্ট অব বিজনেস কমাতে ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্পোরেট কর ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করার জন্য সরকারকে সুপারিশ করেছে এফবিসিসিআই। টেকসই এলডিসি উত্তরণ ও এসডিজি অর্জনে ব্যাংকিং খাতের সক্রিয় সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।

সভায় অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান আলী রেজা ইফতেখার বলেন, প্রণোদনা ঋণের ৮০ শতাংশ ছাড় হয়েছে। এই হার আরও বাড়লে ভালো হতো। ব্যাংকের পক্ষে র্দীর্ঘমেয়াদে ঋণ দেওয়া অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। এজন্য দেশে বন্ড মার্কেট সংস্কৃতি গড়ে তোলা উচিৎ। তবে সিএসএমই খাতে প্রণোদনা ঋণ বিতরণে এফবিসিসিআইর সঙ্গে একযোগে কাজ করার আশ্বাস দেন তিনি।

সমাপনী বক্তব্যে এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, একটি গ্রুপের কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলে বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ পায় না। যা ওই গ্রুপের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থাকে নাজুক করে তোলে। এ বিষয়টি গভীরভাবে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।

সভায় বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এফবিসিসিআই পরিচালকরা অংশ নেন। এ সময় এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, মো. হাবিব উল্লাহ ডন, এম এ রাজ্জাক খান রাজ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২১
এসই/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।