ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দুবাইয়ে ৬ মাসব্যাপী ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২১
দুবাইয়ে ৬ মাসব্যাপী ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ

ঢাকা: বিশ্ববাসীর কাছে দেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে দুবাইতে অনুষ্ঠেয় ছয় মাসব্যাপী ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২০ তে বাংলাদেশ অংশ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এ ওয়ার্ল্ড এক্সপো আগামী ১ অক্টোবর ২০২১ শুরু হয়ে চলবে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত।

 

সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আগামী অক্টোবরে ‘দুবাই এক্সপো ২০২০’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।  

২০১৫ সালে ইতালির মিলানে সর্বশেষ ওয়ার্ল্ড এক্সপো অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়া (এমইএএসএ) অঞ্চলে সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রথম ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২০ আয়োজন করছে। যা কোভিড মহামারির কারণে পরিবর্তিত মেয়াদে ১ অক্টোবর ২০২১ শুরু হয়ে আগামী ২০২২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ছয় মাসব্যাপী চলবে এ এক্সপো।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছরটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের মতো তিনটি গৌরবময় বিষয় বিশ্বব্যাপী ইতিবাচকভাবে তুলে ধরার জন্য এক্সপো ২০২০ দুবাই সুযোগ তৈরি করেছে। তাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অতীতের মতো এক্সপোতে প্রথাগতভাবে অংশ নেওয়ার পরিবর্তে সাসটেইনেবিলিটি সাভ-থিমের আওতায় প্রথমবারের মতো ভাড়া করা প্যাভিলিয়নে অংশগ্রহণ করছে। একইসঙ্গে আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, সংযুক্ত আরব আমিরাতও এ বছর তাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবে।

টিপু মুনশি বলেন, ছয় মাসব্যাপী এ ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে আগামী ৮ মার্চ নারী দিবসের আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এক্সপো ভেন্যুতে সেমিনার, বিটুবি সভা আয়োজনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এক্সপো ২০২০ দুবাই আয়োজনের মূল থিম ধরা হয়েছে ‘কানেকটিং মাইন্ডস, ক্রিয়েটিং দ্য ফিউচার’ এবং সাব-থিম তিনটি অপরচুনিটি, মোবিলটি এবং সাসটেইনেবলিটি নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের এক্সিবিশন টাইটেল নির্ধারিত হয়েছে ‘টেকসই উন্নয়নের দিকে অদম্য বাংলাদেশ’।  

তিনি বলেন, এক্সপো কর্তৃপক্ষের বরাদ অনুযায়ী, বাংলাদেশের দ্বিতল বিশিষ্ট প্যাভিলিয়নের নিচতলায় ৪৩৬ দশমিক ৫৬ বর্গমিটার প্রদর্শনীর জন্য এবং দ্বিতীয় তলায় ৩৮২ দশমিক ৫৭ বর্গমিটার দাপ্তরিক, সেমিনার ও বিজনেস টু বিজনেস সভার কাজে ব্যবহারের জন্য সংস্থান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এক্সপো কর্তৃপক্ষ বরাবর প্যাভিলিয়ন ভাড়া বাবদ ছয় লাখ মার্কিন ডলার বা প্রায় ৫ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। প্যাভিলিয়নের সাজসজ্জা বাবদ প্রায় ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এসব কাজের জন্য এক্সপো কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত তালিকা থেকে পিপিয়ার অনুসরণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এক্সেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশে আর্থসামাজিক উন্নয়ন, অগ্রগতি, সাফল্য ও বাণিজ্য সম্ভাবনা তুলে ধরা হবে। প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশের সম্ভাবনায় পণ্যের পাশাপাশি কৃষ্টি ঐতিহ্য সম্পর্কিত পণ্য সম্ভার প্রদর্শনী করা হবে। কিছুদিন পর পর পণ্য প্রদর্শনীর তালিকা পরিবর্তন করা হবে।  

এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোতে থাকবে বিশেষ আয়োজন। যেমন- ৩ ডিসেম্বর ইন্টারন্যাশনাল ডে অব পারসনস উইথ ডিজাবিলিটি হিসেবে পালন করা হবে। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয়ের দিনে কান্ট্রি ডে হিসেবে উদযাপন করা হবে। সেদিন পুরো এক্সপো এলাকা বাংলাদেশের থিম অনুযায়ী সাজানো হবে। বাংলাদেশ নিয়ে সেমিনার সিম্পোজিয়ামের পাশাপাশি কৃষ্টি ও ঐতিহ্য প্রদর্শন করা হবে। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হবে এবং বাংলাদেশের ভাষা ও গণমুক্তি আন্দোলন সংক্রান্ত গৌরব-গাঁথা গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হবে। ৮ মার্চ ২০২২ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করা হবে এবং নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নে বিভিন্ন দেশের অর্জন তুলে ধরার পাশাপাশি বিশ্বমঞ্চে নারী নেত্রীদের সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ব্যাপকভাবে তুলে ধরা হবে। ১৭ মার্চ ২০২২ বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সমগ্র মেলায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনা সংক্রান্ত প্রচারণার পাশাপাশি মহান স্বাধীনতা অর্জনে জাতির পিতার ভূমিকা ব্যাপকভাবে তুলে ধরা হবে এবং বিশ্বনেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর পরিচিতি ও ভূমিকা তুলে ধরা সম্ভব হবে। ২৬ মার্চ ২০২২ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস হিসেবে সমগ্র মেলায় স্বাধীনতার গৌরব গাঁথা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রচারণার পাশাপাশি মহান স্বাধীনতা অর্জনে জাতির পিতার ভূমিকা ব্যাপকভাবে তুলে ধরা হবে।

ফ্রান্সের প্যারিসে অবস্থিত ব্যুরো ইন্টারন্যাশনাল ডেস এক্সপোজিশন (বিআইই)-এর পৃষ্ঠপোষকতায় ছয় মাসব্যাপী ওয়ার্ল্ড এক্সপো পাঁচ বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয়। ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে অংশগ্রহণকারী দেশসমূহ বিভিন্ন খাতে তাদের অর্জন, পণ্য, ধারণা, উদ্ভাবন, জাতীয় ব্র্যান্ড, পর্যটন ও ইতিবাচক ব্যবসায়িক পরিবেশ প্রচারের মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার চেষ্টা করে থাকে। অলিম্পিক গেমস ও ফিফা ওয়ার্ল্ডকাপের পরে তৃতীয় বৈশ্বিক ইভেন্ট হিসেবে ওয়ার্ল্ড এক্সপো মূলত বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রগতি, বাণিজ্য সম্ভাবনা ও সংস্কৃতি বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২১
জিসিজি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।