ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

নিঃশঙ্ক চিত্তে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন: নৌ প্রতিমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২১
নিঃশঙ্ক চিত্তে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন: নৌ প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: নিঃশঙ্ক চিত্তে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার এমন কোনো অপ্রত্যাশিত নীতি কার্যক্রম গ্রহণ করবে না, যা আপনাদের বিনিয়োগের বিপক্ষে যেতে পারে।

সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১ এর ‘পরিবহন ও লজিস্টিকস’ শীর্ষক কারিগরি/প্যারালাল অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, লজিস্টিক খাতের সামগ্রিক উন্নয়ন ও বিকাশে বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যেই বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনামূলক কার্যক্রম নিয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং ২০৪১ সালের বাংলাদেশের জন্য প্রণীত প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় লজিস্টিক খাতকে একটি প্রাধিকারমূলক খাত হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় যে দুটি কর্মকৌশলের ওপর ভিত্তি করে ২০২৩ সালের মধ্যে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- অধিকতর সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ ও বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণ। এই দুটি কৌশল সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে প্রয়োজন একটি গতিশীল লজিস্টিক খাত। লজিস্টিক খাতের উন্নয়নে অধিকতর বেসরকারি বিনিয়োগ আনয়নে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এ জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

খালিদ মাহমুদ বলেন, লজিস্টিকস খাতের মধ্যে রয়েছে সকল ধরনের পরিবহন, পণ্যাগার, সংরক্ষণাগার, কোল্ড চেইন, ফ্রেইট অ্যান্ড ফরওয়ার্ডার্স, ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট এবং বন্দর সেবাসমূহ। আগামী ২০৩১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার জন্য ভৌত অবকাঠামো এবং লজিস্টিকস খাতে বিনিয়োগ বর্তমানে জিডিপি’র ২-৩ শতাংশ হতে বৃদ্ধি করে ৮-১০ শতাংশে উন্নীত করার কোনো বিকল্প নেই। সরকার এ খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব এই উভয় প্রকারের বিনিয়োগ উৎসাহিত করছে। এছাড়াও এ খাতটিকে বিনিয়োগবান্ধব করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, লজিস্টিকস খাতে যৌথ উদ্যোগে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগগ্রহণ বৃদ্ধি করা।

লজিস্টিকস খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অপরিসীম উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের পরিবহন ও অবকাঠামো খাতে প্রায় ২৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে এবং এ খাতসমূহের প্রদত্ত সেবার জন্য বছরে প্রায় ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার রয়েছে। ব্যবসার আয়তন বৃদ্ধির সাথে সাথে এই বাজারও আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পাবে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, ব্যবসা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পণ্যাগার, সংরক্ষণাগার, কোল্ড চেইন ব্যবসা, সড়ক, নৌ, সমুদ্র এবং বিমানপথে পণ্য পরিবহন, নৌ, বিমান ও স্থল বন্দরের কার্যক্রম আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পাবে। ২০২২ সালের মধ্যে এই ব্যবসার প্রবৃদ্ধি হবে প্রায় ৬৪ শতাংশ। এ কারণে এফ শ্রেণির বিমান, যেমন: এ-৩৮০, বি৭৪৭-৮এফ, ইত্যাদির অবতরণ ও উড্ডয়ন সহজতর করতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে লজিস্টিকস ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কিং কমিটি, বাংলাদেশ এর কো-চেয়ার আবুল কাশেম খান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পিপিপি অথরিটির মহাপরিচালক মো. আবুল বাশার, পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড সিঙ্গাপুরের রিজিওনাল সিইও ওয়ান চি ফুং, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম, ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্স কর্পোরেশনের ভিক্টোরিয়া রিগবি ডেলমন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সোসাইটির সভাপতি নকীব খান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২১
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।