ঢাকা: এখন থেকে ব্যাংকগুলোর ইস্যু করা পারপিচুয়াল বন্ডের মাধ্যমে সংগ্রহ করা টাকা মূলধন হিসেবে বিবেচিত হবে। একই সঙ্গে বছর শেষে প্রকৃত মুনাফা থেকে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশও দেবে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পারপিচুয়াল বন্ডের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো সংগ্রহ করা টাকা মূলধন না আমানত তা পরিষ্কার করে একটি চিঠি ইস্যু করেছে।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করার জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো পারপিচুয়াল বন্ডের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে। বিনিময়ে সুদও দেয়। বর্তমানে দেশের আটটি ব্যাংক পারপিচুয়াল বন্ডের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করেছে। এসব ব্যাংক প্রায় চার হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
তফসিলি ব্যাংকগুলোর টায়ার-১ মূলধন শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত টায়ার-১ মূলধন বৃদ্ধির উপযোগী পারপিচুয়াল বন্ড ইস্যুর অনাপত্তি দিয়েছে। বর্তমানে পূবালী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, দি প্রিমিয়ার ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক যমুনা ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও এবি ব্যাংক পারপিচুয়াল বন্ডের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করেছে।
আগে তফসিলি ব্যাংকসমুহের টায়ার-১ মূলধন ভিত্তি ও পারপিচুয়াল বন্ড ইস্যুকারী ব্যাংকগুলোর জন্য সংশ্লিষ্ট বন্ডের মাধ্যমে সংগ্রহ করা টাকা মূলধন না আমানত এ বিষয়ে কোনো কিছু স্পষ্ট ছিল না। মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বিষয়টি স্পষ্ট করার উদ্যোগ নেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, পারপিচুয়াল বন্ডের মাধ্যমে সংগ্রহ করা টাকা ব্যাংকগুলো এখন থেকে মূলধন হিসেবে দেখাবে। বছর শেষে করপরবর্তী প্রকৃত মুনাফা থেকে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাশ দেবে। আগে পারপিচুয়াল বন্ডের টাকা মূলধন নাকি আমানত তা স্পষ্ট ছিল না। বিএসইসি এই চিঠি ইস্যুর পরে উক্ত বন্ডের মাধ্যমে সংগ্রহ করা টাকা ব্যাংকগুলো মূলধন হিসেবে দেখাবে। বছর শেষে বিনিয়োগকারীরা মালিক হিসেবে লভ্যাংশ পাবে।
এ বিষয়ে বেসরকারিখাতের মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি শর্ত ছিল যেটা পূরণ করলে পারপিচুয়াল বন্ডের টাকা মূলধন হিসেবে দেখানো যাবে। কিন্তু সিকিউরিটিজ একচেঞ্জ কমিশন বলেছিল সেটা করা যাবে না। অবশেষে সিকিউরিটিজ একচেঞ্জ কমিশন সেই শর্তটি বাদ দেওয়ায় আমরা পারপিচুয়াল বন্ডের টাকা ব্যাসেল মোতাবেক মূলধন হিসেবে দেখাতে পারবো।
পারপিচুয়াল বন্ডে বিনিয়োগে যেমন ভালো মুনাফা পাওয়া যায় তেমন ঝুঁকিও রয়েছে। যদি কোনো কারণে ব্যাংক দেউলিয়া হয় তাহলে বন্ডে বিনিয়োগকারীদের টাকাও ঝুঁকিতে পড়বে কারণ কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হলে সবার আগে পরিশোধ করা হয় আমানতকারীদের টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ০২০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২১
এসই/আরএ