ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ক্রেতা নেই ধানের, চালের দাম চড়া!

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২২
ক্রেতা নেই ধানের, চালের দাম চড়া!

খুলনা: আমরা ধান উৎপাদন করে যথাযথ দামে বিক্রি করতে পারছি না। মাঝখানে যারা মাধ্যম রয়েছে তারা বেশি দামে চাল বিক্রি করছেন।

আমাদের এখানে ৬২ কেজি বস্তা ধানের দাম দেড় হাজার টাকা। এই রেটে চলছে কিন্তু ধান কেউ কিনছে না। দুই একজন যারা কিনছেন তারা ২৩ ধান কিনছেন তাও বাকিতে।

ধান বিক্রি করতে না পেরে আক্ষেপ করে শনিবার (২২ জানুয়ারি) বাংলানিউজের কাছে কথাগুলো বলছিলেন খুলনার দাকোপ উপজেলার সুতারখালী গ্রামের আশীষ মণ্ডল।

তিনি আরও বলেন, দাকোপের সুতারখালি এলাকায় প্রত্যেক বাড়িতে শত শত মণ ধান উঠানে ভিজতেছে। কৃষকরা দিশেহারা। সার, বীজ দোকান থেকে বাকি এনেছে সেই পয়সা এখন কোথা থেকে দেবে ভরা মৌসুমে যদি ধান বিক্রি করতে না পারে। এলাকায় কোনো খাদ্য গুদাম নেই যে কৃষকরা ধানগুলো রাখবে। আইলা দূর্গত প্রত্যন্ত এলাকায় মানুষ ধানগুলো রাখবে কোথায়, ধানগুলোতো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ধানের দাম না বাড়া মিলারদের কারসাজি বলে অভিযোগ তার। তবে কৃষকদের এ অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন মিল মালিকরা।

এ রহমান পরশ অটো রাইস মিলস লিমিটেডের সেলস অফিসার (রাইস) গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, আমরা তো ধান কিনতেছি। ধান না কিনলে মিল চালাবো কি করে। ধানের দাম অতিরিক্ত। চালের বাজার থেকে ধানের দাম বেশি। চিকন ধান কিনছি ১১৬০ টাকা মণ দরে। মিনিকেট ও বাসমতি ধান আপাতত কিনছি না। শুধু বালাম ধান কিনছি। মোটা স্বর্ণা কিনছি ১ হাজার ২০ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা পর্যন্ত। মিল মালিকরা ধান কিনছে না কৃষকদের এ তথ্য ঠিক না। মোটা ধান হাজার টাকার ওপরে আছে। যা এখন স্বাভাবিক উচিত ছিল ৮০০-৮৫০ টাকায়। মিল থেকে আড়তে চাল যায়। মিল কত টাকায় চাল বিক্রি করছে আর ক্রেতার হাতে কত টাকায় চাল যাচ্ছে এই মাঝখানেই চালের দাম বাড়ছে-কমছে।

খুলনা জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ মো. জাহেদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, কৃষকরা ধানের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না এটা বলা আমাদের জন্য মুশকিল। কৃষক আমাদের কাছে আসছে না। না আসার কারণ যেটা আমি বুঝি ধানে আদ্রতা বেশি বলে আমরা নিতে পারছি না। আবহাওয়া খারাপ যাওয়ার কারণে মিলাররা সঠিক সময়ে ধান শুকাতে পারছে না যার কারণে চালের দাম বেশি। আগে যে ধান এক দিনে শুকানো যেন তিন দিনেও এখন ধান শুকাতে পারছেন না। ১৪ শতাংশের ওপরে আদ্রতা গেলে আমরা ধান নিতে পারি না। কিন্তু কৃষকরা ১৮-১৯ শতাংশ আদ্রতার ধান নিয়ে আসে। যা নেওয়া সম্ভব হয় না। অনেক কৃষক ধান পরিষ্কার করেন না। মারাই দিয়েই বাজারে নিয়ে আসেন যা পাইকাররা কিনে নিয়ে যায়। আমাদের পক্ষে তা কেনা সম্ভব হয় না।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, আমনের ভরা মৌসুমেও খুলনায় বেড়েছে চালের দাম। পাইকারি বাজারে চালের দাম বাড়ায় খুচরা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়েছে বেশি। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষসহ সব ধরনের ভোক্তারা।

তারা চালের দাম স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

বড় বাজারের মুরাদ ট্রেডার্সের ম্যানেজার জিয়াউল হক মিলন বাংলানিউজকে বলেন, আমনের ভরা মৌসুমে খুলনায় কিছুদিন ধরে চালের দাম বেড়েছে। ১৫ দিনের ব্যবধানে মিনিকেট ৫৬ থেকে বেড়ে ৬২ টাকা হয়েছে। বাসমতি ৬৪,৬৮ - ৭০,৭২,৭৩ টাকায়, ২৮ বালাম ৪৭ – ৪৯ টাকায়, নাজিরশাইল ৬০–৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২২ 
এমআরএম/এসআইএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।