ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পেওনিয়ারে ফ্রিল্যান্সারদের পেমেন্ট আসবে বিকাশে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
পেওনিয়ারে ফ্রিল্যান্সারদের পেমেন্ট আসবে বিকাশে

ঢাকা: এখন সারা বিশ্ব থেকে ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম পেওনিয়ারের মাধ্যমে মুহূর্তেই ফ্রিল্যান্সারদের পেমেন্ট আসবে বিকাশে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা রিয়েল টাইমে এ সেবা আসার সুবিধা বিকাশমান ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে আরও গতিশীলতা আনবে এবং দেশের বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহকে আরও বেগবান করবে।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ভার্চ্যুয়াল এক অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বর্ডারলেস পেমেন্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান পেওনিয়ার, দেশের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্যিক ব্যাংক ব্র্যাক ব্যাংক ও দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ যৌথভাবে এ সেবার উদ্বোধন করে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে এ সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।  

অনুষ্ঠানে বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, পেওনিয়ারের রিজিওনাল সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট রোহিত কুলকার্নি ও চিফ রেভিনিউ অফিসার রবার্ট ক্লার্কসন, ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর এফ হোসেন ও বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীরসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন।

অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের অনলাইন লেবার ইনডেক্স১ এর মতে, আইসিটি ফ্রিল্যান্সিং সেবার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান সারা বিশ্বের মধ্যে শক্তিশালী। লাখো বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সার সারা বিশ্বে এ খাতে অবদান রাখছেন। তারা দেশের অর্থনীতিতে প্রতিবছর মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা যুক্ত করছেন। ফ্রিল্যান্সিং আয়েও সারা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সেরা একটি দেশ হলো বাংলাদেশ।

নতুন এ সেবার ফলে বিকাশ অ্যাপের রেমিট্যান্স আইকন থেকে খুব সহজেই নতুন পেওনিয়ার অ্যাকাউন্টের রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন গ্রাহকরা। যাদের ইতোমধ্যে পেওনিয়ার অ্যাকাউন্ট আছে তারাও নিজেদের বিকাশ অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযুক্ত করে নিতে পারবেন। অ্যাকাউন্ট সংযুক্ত হয়ে গেলে ফ্রিল্যান্সাররা তাৎক্ষণিক তাদের পেমেন্ট বিকাশ অ্যাকাউন্টে আনতে পারবেন। বিকাশ থেকেই পেওনিয়ার অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্স চেক করারও সুযোগ থাকবে।

দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা যেকোনো প্রান্তে বসে বিকাশে তাৎক্ষণিক পেমেন্ট গ্রহণ করার সুযোগ তৈরি হওয়ায় ফ্রিল্যান্সারদের আগের মতো পেমেন্টের জন্য আর দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে না। বিকাশে আসা টাকা তারা প্রয়োজন মতো অন্য বিকাশ অ্যাকাউন্টে পাঠানো, বিল পরিশোধ করা, কেনাকাটার পেমেন্ট দেওয়া, ক্যাশ আউট করাসহ যেকোনো প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবেন।

এ সেবায় ফরেন কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট ও ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড সেটেলমেন্ট ব্যাংক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ব্র্যাক ব্যাংক।

নতুন এ সেবা চালু হওয়া উপলক্ষে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন বিকাশে সর্বোচ্চ পেমেন্ট গ্রহণকারী ফ্রিল্যান্সারকে একটি করে মোবাইল ফোন পুরস্কার দেওয়া হবে। ক্যাম্পেইন চলাকালীন একজন গ্রাহক একবারই এ পুরস্কার পাবেন। পেওনিয়ার অ্যাকাউন্ট থেকে এক বা একাধিক ট্রানজেকশনে বিকাশ অ্যাকাউন্টে আসা অর্থের পরিমাণ দিনে ১৫ হাজার টাকার বেশি হতে হবে। ক্যাম্পেইন শেষে বিজয়ীদের কাছে পুরস্কারের মোবাইল ফোন তুলে দেওয়া হবে। পাশাপাশি নতুন এ সেবা চালু হওয়া উপলক্ষে প্রতিবার পেওনিয়ার থেকে বিকাশে ট্রানজেকশনে ২ শতাংশ ইন্সট্যান্ট ক্যাশব্যাকও দিচ্ছে বিকাশ। ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ মার্চ, ২০২২ পর্যন্ত এ সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন ফ্রিল্যান্সাররা।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দ্রুততার সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে নিরাপদে ফ্রিল্যান্সারদের উপার্জিত অর্থ পাওয়ার পদ্ধতি সহজ করায় বিকাশ, পেওনিয়ার ও ব্র্যাক ব্যাংককে ধন্যবাদ জানাই।

তিনি আরও বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। যে সাড়ে ছয় লাখ ফ্রিল্যান্সার কাজ করছে, তারা বিশ্বের অনলাইন আউটসোর্সিংয়ে ১৬ শতাংশ অবদান রাখছে। অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের গবেষণায় উঠে এসেছে, অনলাইন আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম গন্তব্য। গত ১৩ বছরে সরকারের বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ ও নীতি সহায়তায় ২০ লাখ তরুণ-তরুণীর প্রযুক্তি নির্ভর কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে, যা আরও সম্প্রসারণের জন্য কাজ করছি আমরা।

বৈশ্বিক দৃষ্টিকোন থেকেই পেওনিয়ারের জন্য বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ উল্লেখ করে পেওনিয়ারের চিফ রেভিনিউ অফিসার রবার্ট ক্লার্কসন বলেন, সম্ভাবনাময় বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের ওপর বরাবরই আমাদের আস্থা রয়েছে। বিকাশের সঙ্গে এ অংশীদারিত্ব আমাদের বিনিয়োগ ও স্থানীয় গ্রাহকদের সেরা সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিকেই ব্যক্ত করে। আমাদের অন্যতম লক্ষ্য হলো বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে সব ধরনের ডিজিটাল ব্যবসায় প্রবৃদ্ধির অংশ হওয়া। বিকাশ ও ব্র্যাক ব্যাংকের মতো শীর্ষ দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদার হয়ে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সঙ্গী হতে পেরে আমরা আনন্দিত।

ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ফ্রিল্যান্সারদের বৈদেশিক আয় সরাসরি ও তাৎক্ষণিকভাবে বিকাশ অ্যাকাউন্টে নিয়ে আসার এ উদ্যোগের সঙ্গে থাকতে পেরে আমরা আনন্দিত। এ সেবা দেশের ফ্রিল্যান্সারদের পেমেন্ট গ্রহণ করার পথ যেমন সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করবে। সেইসঙ্গে দেশে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহকে আরও বৃদ্ধি করবে। আমরা একসঙ্গে বাংলাদেশকে বিশ্বের ফ্রিল্যান্সিং খাতের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে এবং এ খাতের বৈদেশিক আয় বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারি।  

বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর বলেন, বাংলাদেশের যে ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরি হয়েছে তার সর্বোচ্চ সুবিধা নিয়ে বিশ্ববাজারে দেশের ফ্রিল্যান্সিংকে আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। রেগুলেটেড পদ্ধতিতে ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে সহজে পেমেন্ট পাওয়ার এ পদ্ধতি ফ্রিল্যান্সারদের দীর্ঘদিনের পেমেন্ট সংক্রান্ত জটিলতা দূর করবে। এ সেবা আরও অনেককেই ফ্রিল্যান্সিংয়ে যুক্ত হতে উৎসাহিত করবে, সেইসঙ্গে যারা ফ্রিল্যান্সিং করছেন তাদের কাজে আরও সময় ও মনোযোগ দিতে সহায়তা করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
এসই/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।