ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অর্থনীতিতে চাপ বাড়াতে পারে অতিরিক্ত তারল্য

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২২
অর্থনীতিতে চাপ বাড়াতে পারে অতিরিক্ত তারল্য

ঢাকা: দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অতিরিক্ত তারল্য অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়াতে পারে এমন আশঙ্কায় অর্থ-সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়ে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে পূর্বাভাস  দিয়েছিল সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে সরবরাহ করা অতিরিক্ত তারল্য সামনের দিনগুলোতে অকল্পনীয় মূল্যস্ফীতি তৈরি করতে পারে,  যেখানে শক্তিশালী সতর্কতার প্রয়োজন হবে।

 বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে মূল্যস্ফীতির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা প্রধানত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সঙ্গে খাদ্য দ্রব্যের অতিরিক্ত দামের বিষয়টি সামনে এসেছে।

এদিকে, সরকারি গণনা অনুসারে, ভোক্তা মূল্যসূচক দ্বারা পরিমাপিত মুল্যস্ফীতি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৬ দশমিক ১৭ শতাংশে পৌঁছেছে। যা এক মাস আগেও পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে ছিল ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। যেখানে ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬৯ শতাংশে পৌঁছেছে।

যদিও সরকার ২০২১-২২ অর্থবছরের গড় মূলস্ফীতির হার নির্ধারণ করেছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

অন্যদিকে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তফসিলি ব্যাংকগুলোতে সামগ্রিক ভাবে অতিরিক্ত তারল্য সামান্য হ্রাস পেয়েছে। কারণ স্থানীয় এবং বৈশ্বিক উভয় অর্থনীতি পুনরায় চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ প্রয়োজনীয় জিনিসের উচ্চ মূল্যের সঙ্গে বাণিজ্যিক ভাবে অর্থায়ন উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে ব্যাংকিংখাতে এক মাস আগে উদ্বৃত্ত তারল্য ২১৬৭ দশমিক ২৯ বিলিয়ন টাকা থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ২১১৫ দশমিক ০৬ বিলিয়ন টাকায় নেমে এসেছে। ২০২১ সালের জুনে এটি ছিল ২৩১৪ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন টাকা।

প্রধানত কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে বেসরকারি খাতের ঋণ বিতরণ কমে যাওয়ায় ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে দেশের ব্যাংকিং খাতে অতিরিক্ত তারল্যের একটি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি এবং সরকারি প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের ফলে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তারল্য বেড়েছে।

মহামারি বিধ্বস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতির দ্রুত পুনরুদ্ধারে সহায়তায় এরই মধ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতির অবস্থান ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত করার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থান অবশ্যই সম্প্রসারণমূলক বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ’

মূ্দ্রানীতির প্রধান উদ্দেশ্য হলো বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী কার্যক্রমগুলোকে সমর্থন করা এবং ব্যবসা, উৎপাদন এবং সরবরাহের চেইন স্বাভাবিক করার জন্য সক্ষম অবস্থা তৈরি করা।

মূদ্রানীতিতে অগ্রাধিকার খাতগুলোতে পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং বিভিন্ন নীতি প্রনয়নের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিত করার জন্য একটি কৌশল গ্রহণ করা হয়।

যথাযথ নীতি ও পরিকল্পনার কারণে বারবার কোভিড-১৯ আঘাতের পরও বাংলাদেশের অর্থনীতি ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজের সাহায্যে পুনরুদ্ধারের পর্যায়ে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২২
এসই/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।