ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ট্রানজিট চুক্তি: তামাবিল দিয়ে মেঘালয়ে গেল কলকাতার পণ্য

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২২
ট্রানজিট চুক্তি: তামাবিল দিয়ে মেঘালয়ে গেল কলকাতার পণ্য

সিলেট: বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পাদিত চুক্তি ‘অন দ্য ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস টু অ্যান্ড ফ্রম ইন্ডিয়া (এসিএমপি)’ ট্রানজিট চুক্তির আওতায় বাংলাদেশি বন্দর ব্যবহারের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে ভারত।  

এরই আলোকে বুধবার (১০ আগস্ট) দুপুরে কলকাতা থেকে মেশিনারিজ পণ্য নিয়ে আসা ইলেক্ট্রো স্টিল কাস্টিং লিমিটেডের ৭০ প্যাকেজের ১৬.৩৮০ মেট্রিক টন লোহার পাইপসহ একটি কন্টেইনারের চালান সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর হয়ে মেঘালয়ে পাঠানো হলো।

 

সিলেটের কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন, সিলেটে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাই কমিশনার নীরজ কুমার জয়সওয়াল, গৌহাটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার এবং মিশন প্রধান শাহ মোহাম্মদ তানভীর মনসুরসহ স্থলবন্দর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

গত ১ আগস্ট ভারতের কলকাতা বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে ছেড়ে আসা একটি জাহাজ গত রোববার সকালে মোংলা বন্দরে আসে।  

গত সোমবার দুপুরে কন্টেইনার ও স্টিল পণ্য খালাসের পর দুটি কন্টেইনারের একটি ভারতের মেঘালয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। বুধবার সকালে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে আসে। আরেকটি কন্টেইনার কুমিল্লার বিবিরবাজার স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের আসামে যাওয়ার কথা রয়েছে।  

কাস্টমস সংশ্লিষ্ট সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করে জানায়, এসিএমপি চুক্তির আওতায় পরীক্ষামূলক পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে।  

২০১৮ সালের অক্টোবরে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য সরবরাহ করতে দুই দেশের মধ্যে চুক্তিটি হয়।

এরপর প্রথমবারের মতো পণ্য পরিবহন হয়েছিল ২০২০ সালের জুলাই মাসে। তখন কলকাতা বন্দর থেকে পণ্যবাহী নৌযান চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়।  

সেখান থেকে স্থলপথে পণ্য আগরতলা নেওয়া হয়েছিল। তখনকার পণ্য ছিল ডাল ও রড। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে জটিলতা সৃষ্টি হয়। ফলে গত চার বছরে এই চুক্তির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পরে ভারত চারটি রুটে পণ্য পরিবহনের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। আপাতত দুটি স্থলবন্দর দিয়ে ট্রান্সশিপমেন্ট দিতে রাজি হয় বাংলাদেশ।  

এর পরিপ্রেক্ষিতেই মোংলা বন্দর ব্যবহার বিষয়ক চুক্তি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নে চারটি পণ্য পরিবহনের প্রথমটি শুরু করেছে কলকাতা বন্দর। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথম ট্রায়ালে ভারতের কলকাতা থেকে বাংলাদেশি নৌযান (কার্গো) ‘এমভি রিশাদ রায়হান’পণ্য বোঝাই দুটি কন্টেইনার নিয়ে মোংলা বন্দরে আসে।  

এ দুটি কন্টেইনারের একটিতে ইলেক্ট্রো স্টিল কাস্টিং লিমিটেডের ৭০ প্যাকেজের ১৬.৩৮০ মেট্রিক টন লোহার পাইপ এবং আরেকটিতে ২৪৯ প্যাকেজে ৮.৫ মেট্রিক টন প্রিফোম রয়েছে। এর মধ্যে ইলেক্ট্রো স্টিল কাস্টিং লিমিটেডের ৭০ প্যাকেজের ১৬.৩৮০ মেট্রিক টন লোহার পাইপ ভর্তি কন্টেইনারটি তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে মেঘালয়ে পাঠানো হয়েছে।  

অপরটি কুমিল্লার বিবিরবাজার স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের আসামে যাওয়ার কথা রয়েছে।

সিলেটে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাই কমিশনার নীরজ কুমার জয়সওয়াল সাংবাদিকদের জানান, ভারত-বাংলাদেশ প্রটোকল রুটে অভ্যন্তরীণ নৌপথ ব্যবহার করে ব্যবসায়িক গতি বাড়ানোর লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ কার্যক্রমের মাধ্যমে দুই দেশের অর্থনীতি ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে আরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

তিনি বলেন, ‘২০২২ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত ১৩ তম ভারত-বাংলাদেশ জয়েন্ট গ্রুপ অব কাস্টমস (জেএসসি) বৈঠকের পর পণ্য পরিবহন (ট্রায়াল রান) পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তারই প্রথম ট্রায়ালের পণ্য মোংলা বন্দর দিয়ে খালাসের পর তামাবিল দিয়ে মেঘালয়ে পাঠানো হয়েছে।  

সিলেটের কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পাদিত এসিএমপি ট্রানজিট চুক্তির আওতায় বাংলাদেশি বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে একটি অনন্য মাইলফলক সৃষ্টি হলো। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশের সাথে বন্ধুত্ব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২২
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।