ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবিতে ছাত্রী হেনস্তা, পুলিশ কনস্টেবলকে বেধড়ক পিটুনি   

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৪ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
জাবিতে ছাত্রী হেনস্তা, পুলিশ কনস্টেবলকে বেধড়ক পিটুনি    আটক কনস্টেবল মেহমুদ হারুন ও জব্দ ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাফ, আইডি কার্ড

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর  বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে এক পুলিশ কনস্টেবলকে বেধড়ক পিটুনি দিয়ে থানায় সোপর্দ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষর্থীরা।  

রোববার (১১ জুন)  রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন সড়কে ওই পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়।

এ সময় তার কাছ থেকে অবৈধ ওয়াকিটকি এবং হ্যান্ডকাফ জব্দ করা হয়।  

অভিযুক্ত কনস্টেবলের নাম মেহমুদ হারুন। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইন্সের এসএএফ-এর কনস্টেবল পদে কর্মরত। তার বাড়ি সাভারে রাজাশনে।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন সড়কে এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করেন ওই পুলিশ কনস্টেবল। তার সঙ্গে ছিলেন বিদ্যুৎ চৌধুরী নামের এক যুবক। তখন ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী বন্ধুদের কল করেন। এসময় অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন ফটক দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। বিদ্যুৎ চৌধুরী পালিয়ে গেলেও ওই কনস্টেবলকে ধরে ফেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কাছে তুলে দেন শিক্ষার্থীরা।  

ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, আমি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের সমানের রাস্তা দিয়ে হলে ফিরছিলাম। এমন সময় ওই পুলিশ কনস্টেবল ও তার সঙ্গে থাকা এক যুবক এসে আমার পথ আটকায়। আমাকে নানান ধরনের আপত্তিকর কথা বলেন৷ এসময় আমি একটি রিকশায় উঠলেও তারা আমর সঙ্গে অসভ্য আচরণ করতে থাকে। এরপর আমি আমার বন্ধুদের ফোন করি। বন্ধুরা আসতে দেখে যুবকটি বাসে উঠে পালিয়ে যায়। তবে আমার বন্ধুরা পুলিশ কনস্টেবলকে ধরে ফেলে।  

অভিযুক্ত মেহমুদ হারুন অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি একা ছিলাম না। আমার সঙ্গে যে ছোট ভাই ছিল সেও জড়িত। তার নাম বিদ্যুৎ চৌধুরী। সে পালিয়ে গেছে। ’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার প্রধান সুদীপ্ত শাহিন বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তকে আমাদের হাতে তুলে দেয়। অভিযুক্ত প্রাথমিকভাবে তার দোষ স্বীকার করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় বাদী হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।

এদিকে রাত সাড়ে ১২টায় আশুলিয়া থানা পুলিশের চার থেকে পাঁচজন কর্মরত পুলিশ সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় আসেন। এসময় উপস্থিত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এস আই) আবজাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার প্রধানের সঙ্গে ঔদ্ধত্য আচরণসহ বিশ্ববিদ্যালয়কে হেয় করে কথা বলেন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে এসআই আবজালও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পালিয়ে যান।  

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান বলেন, আমি বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অভিহিত করেছি। আমরা অভিযুক্ত কনস্টেবলের বিরুদ্ধে মামলা নেব। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় একটি মামলা হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘ঔদ্ধত্য আচরণ করা এসআই আবজালকে আশুলিয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সহকারী অধ্যাপক এস এম এ মওদুদ আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরছে। অভিযুক্তকে আমরা আশুলিয়া থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছি৷  এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭১৮ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
এসএএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।