সাভার (ঢাকা): জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মওলানা ভাসানী হলের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদের ‘টাকা খাওয়ার’ একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটির সঙ্গে আলোচনায় এসেছে তার লেগুনায় চাঁদাবাজি সংশ্লিষ্টতার।
অবশ্য সাজ্জাদের দাবি, ভিডিও ২০২২ সালের। সে সময় বড় ভাইয়ের ব্যবসায়ীক কারণে এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি টাকা দিয়েছিলেন। সে প্রমাণ তার কাছে আছে।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকাল থেকে বিভিন্ন মানুষের ফেসবুকের ওয়ালে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। দুই মিনিট ১৫ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে টাকার লেনদেন ধরা পড়ে। এ কর্মকাণ্ডে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের ১ নম্বর সহ-সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ ও গাড়ির মালিক মিন্টু গাজী।
সাজ্জাদ মওলানা ভাসানী হলের তৃতীয় তলায় আগে থেকেই লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় অপেক্ষা করছিলেন। গাড়ির মালিক মিন্টু গাজীসহ ৩ জন ওই হলের সিঁড়ি দিয়ে তিনতলায় সাজ্জাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। এরপর মিন্টু গাজী তিন বান্ডেল টাকা ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদের হাতে তুলে দেন। সাজ্জাদ টাকা নিয়ে প্রথমে লুঙ্গির ভাঁজে (কোমরে) রাখার চেষ্টা করেন। পরে তিনি সিঁড়ির কোণ থেকে একটি সাদা রঙের ব্যাগ নিয়ে টাকাগুলো মুড়িয়ে নিয়ে চলে যান।
এ বিষয়ে সেই ব্যবসায়ী মিন্টু গাজীরমোবাইল নম্বরে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
ভিডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ বাংলানিউজকে বলেন, ভিডিওর ঘটনাটি ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের দিকে। আমি মওলানা ভাসানী হলে থাকি। আমার হলের ওখানে সিসিটিভি ফুটেজ আছে। ঘটনাটি কেন ঘটেছে সে ডকুমেন্টস আমার কাছে আছে। একজন ব্যবসায়ীর সাথে আমার এক বড় ভাইয়ের ব্যবসায়ীক সম্পর্ক রয়েছে। সেই বড় ভাইয়ের জন্য আমি তার কাছ থেকে টাকাটি নিয়েছিলাম৷ সেই ব্যবসায়ীর স্বাক্ষরসহ আমার কাছে ডকুমেন্টস আছে।
তবে হঠাৎ এই ভিডিও প্রকাশের কারণ কী? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সম্প্রতি কিছু লেগুনা নিয়ে আমাদের ক্যাম্পাসে আলোচনা চলছে৷ কিছু লোক এই ঘটনাটিকে ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করার জন্য ও আমার ব্যক্তি সম্মান নষ্ট করার জন্য এটা করেছে৷ সেই ব্যক্তির সাথে আমার লেগুনাকেন্দ্রীক কোনো ইস্যু হয়নি।
লেগুনা আটকানোর বিষয়ে তিনি বলেন, মীর মশাররফ হোসেন হলের ছাত্রদের লেগুনা দুর্ঘটনা ঘটেছিল৷ এরপর সেই হলের ছেলেরা তিনটা লেগুনা আটকায়। পরে ছাত্রদের না জানিয়ে লেগুনাসহ চালকরা পালিয়ে যায়৷ তার পরিপ্রেক্ষিতে তারা আরও অনেকগুলো লেগুনা আটকায়৷ এটুকুই আমি জানি৷ এখানে চাঁদাবাজি বা টাকা দাবি এসব কিছুই আমি জানি না।
এদিকে সম্প্রতি ২৪ টি লেগুনা চার দিন আটকে রেখে মাসিক দেড় লাখ টাকা চুক্তিতে শুক্রবার (২৮ জুলাই) সকালে গাড়িগুলো ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এ চাঁদাবাজির বিষয়ে কথা বলতে জাবি ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কথা বলা যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫৫ ঘণ্টা, ১ আগস্ট, ২০২৩
এসএফ/এমজে