খুলনা: বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ২০তম দিবস উদযাপিত হয়েছে।
ভৈরব-রূপসা বিধৌত এ পাদপীঠে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতিবছরের মতো এ বছরও জাঁকজমকপূর্ণভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানের মধ্যে শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৯টায় জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মিহির রঞ্জন হালদার।
এ সময় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আবু নঈম শেখ ও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সোবহান মিয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন উদযাপন কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. সাহিদুল ইসলাম।
বক্তব্য শেষে প্রধান অতিথি বেলুন ও শান্তির প্রতীক কবুতর উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের উদ্বোধন করেন। এরপর সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালি শুরু হয়ে ফুলবাড়ী গেট ঘুরে ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়। র্যালিতে অতিথি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। সকাল ১০টায় স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে পোস্টার ও প্রজেক্ট প্রেজেন্টেশন, সোয়া ১০টায় অডিটরিয়ামে ‘কুয়েটের অর্জন: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক প্রেজেন্টেশন ও টেকনিক্যাল প্রেজেন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়।
বেলা পৌনে ১১টায় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, জাতির প্রত্যাশা পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়কে কাজ করতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগতমান নিশ্চিত করতে হবে। গুণগতমানের ক্ষেত্রে কোনো আপস করা চলবে না। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মিহির রঞ্জন হালদার বলেন, শিক্ষা ও গবেষণায় আমাদের আরও মনোনিবেশ করতে হবে। সবার একনিষ্ঠতায় বিশ্ব দরবারে কুয়েট নিশ্চয়ই অতিদ্রুত মর্যাদাকর অবস্থান নিশ্চিত করতে সক্ষম হব।
জনসংযোগ ও তথ্য শাখার সহকারী পরিচালক মনোজ কুমার মজুমদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আবু নঈম শেখ ও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সোবহান মিয়া।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. সাইফুল ইসলাম, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. শাহজাহান আলী ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম।
এছাড়া আলোচনা সভার পূর্বে ডি-নথি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মিহির রঞ্জন হালদার।
দুপুর ১টায় মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়। বিকেলে দর্শনার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ল্যাবসমূহ উন্মুক্তকরণ এবং খেলার মাঠে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, বাদ আসর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ১৯৬৮ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং ১৯৭৪ সালের ৩ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশেষ নির্দেশনায় অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়ে ১৯৮৬ সালের ১ জুলাই এ প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি) খুলনায় পরিণত হয় এবং ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০২৩
এমআরএম/আরবি