জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণিত বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে একই বিভাগের এক শিক্ষককে বিভাগীয় সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) গণিত বিভাগের একাডেমিক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ বি এস মাণিক মুনসী ও ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী একই বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।
জানা যায়, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক তার নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘ এক বছর প্রেমের সম্পর্কে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। সেই সঙ্গে ওই শিক্ষক তার স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়েছে বলে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে বিয়ে করার আশ্বাস দেন। গত বুধবার ওই শিক্ষকের নিজ কক্ষে ওই নারী শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে দীর্ঘ সময় দরজা বন্ধ অবস্থায় দেখা যায়। বিষয়টি বিভাগের অন্য একজন শিক্ষকের নজরে এলে ঘটনাটি প্রকাশ হয়। এ ঘটনার পর ওই নারী শিক্ষার্থী শিক্ষককে বিয়ে করতে বললে তিনি আপত্তি জানায়। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভাগীয় চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণিত বিভাগের একজন শিক্ষক বলেন, তিনি ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কীভাবে এমন একটি জঘন্য কাজ করতে পেরেছেন আমরা সবাই হতবাক। যদি না বিষয়টি হাতেনাতে ধরা না পড়তো তাহলে হয়তো আড়ালেই থাকতো। তিনি ওই শিক্ষার্থীকে মধু ও পানি পড়া পর্যন্ত খাইয়েছেন। কারণ ওই শিক্ষার্থীর আচরণ নাকি অস্বাভাবিক- আমাদের বলেছেন।
তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী প্রথমে ওই শিক্ষকের কাছে কাউন্সেলিং ও বিভিন্ন পরামর্শের জন্য আসেন। এ সুযোগে ওই শিক্ষক শিক্ষার্থীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীকে বিয়ে করবে বলে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
এ বিষয়ে গণিত বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক এ বি এস মাণিক মুনসী বলেন, আমি এ বিষয় নিয়ে আপনাকে কিছু বলতে চাচ্ছি না। যা বলার আমার বিভাগের চেয়ারম্যানকে বলবো।
অভিযোগের বিষয়ে গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. শরিফুল আলম বলেন, আমাদের বিভাগের একজন নারী শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আমরা বিষয়টি বিভাগের একাডেমিক সভায় তুলেছি ও প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ওই শিক্ষককে বিভাগের সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আমরা বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত ও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভাগের পক্ষ থেকে উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, আমরা গণিত বিভাগের পক্ষ থেকে উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত আবেদন পেয়েছি। উপাচার্য অসুস্থ থাকায় তারা আবেদনটি আমাকে দিয়েছে। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে উপাচার্যের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেব।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মোতাবেক তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে ও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৩
আরবি