পাথরঘাটা (বরগুনা): দুপাশে সারিবদ্ধ উঁচু দালান, গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা, রয়েছে ফুড ফ্যাক্টরি, হাসপাতাল, স্কুল, উন্নতমানের ট্রাফিক লাইট, অপরদিকে রয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র।
রয়েছে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য গাছ।
অনেকে অবাক হচ্ছেন উপকূলীয় উপজেলা পাথরঘাটার এমন এক টুকরো স্মার্ট সিটি? এটা বাস্তবে না হলেও জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় এমন স্মার্ট সিটি প্রদর্শনী করেছে একদল শিক্ষার্থী।
নাচনাপাড়া মানিকখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা এমন স্মার্ট সিটি গড়ার লক্ষ্যেই তৈরি করেছে। শুধু তাই নয় নিরাপত্তার জন্য এ স্মার্ট সিটির প্রবেশ মুখেই সিকিউরিটি সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এ প্রবেশ মুখেই অ্যালার্ম বেজে উঠবে।
‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, উদ্ভাবনেই মুক্তি’ স্লোগান নিয়ে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা প্রশাসনের বাস্তবায়নে উপজেলা পরিষদ চত্বরে সপ্তাহ ব্যাপী জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ৪৫ তম বিজ্ঞান মেলা শুরু হয়। এ মেলায় উপজেলার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেন।
কথা হয় স্মার্ট সিটি স্টলের নাচনাপাড়া মানিকখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহসান ইমন, সালেহ মুসা, জাহিদুল ও রেদওয়ানের সঙ্গে।
তারা বলে, আমাদের দেশে অনেক জায়গায় সড়কের ইট নষ্ট হয়ে যায়। একটি পরিকল্পিত শহর তৈরি করে সেখানে সোলার প্যানেল দিয়ে সড়ক তৈরি করে এবং ওই সোলার প্যানেল এমন টেকসই করা দরকার ভারী যানবাহনের চাপেও যাতে না ভাঙে। ওই সোলারের সড়ক দিয়ে যানবাহনের ঘর্ষণে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। ওই বিদ্যুৎ সড়কের পাশেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সংরক্ষিত হবে। এতে করে দেখা যায় আমাদের খরচ কম হবে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেশি হবে।
তারা আরও বলে, নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিদ্যুৎ একদিন শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু পৃথিবী যতদিন থাকবে সোলার প্যানেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। এতে পরিবেশের ভারসাম্যতাও রক্ষা পাবে। তাছাড়া প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ২৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। নিরাপত্তার জন্য সিকিউরিটি ক্যামেরা সিস্টেম চালু করেছি। যা আকাশপথে রাখার জন্য। তার কারণ বর্তমান বিশ্বে আকাশ পথেই যুদ্ধ হচ্ছে।
যদিও মেলায় দর্শনার্থীদের দেখানোর জন্য নিচে রাখা হয়েছে। সিটিকে সুরক্ষার এটার নাম দেওয়া হয়েছে এয়ার ডিফেন্স।
পরিবেশকর্মী সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি একদিন শেষ হয়ে যাবে। বিশ্বে যেভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে তাতে আমাদের বাংলাদেশও হুমকির মুখে। জলবায়ু পরিবর্তনের করাল গ্রাস থেকে মুক্তির জন্য আমাদের নতুন নতুন পদ্ধতি, পরিকল্পনা নিতে হবে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক মানুষ গুরুত্ব না দিলেও বিজ্ঞান মেলা শিক্ষার্থীরা যে পদ্ধতি প্রদর্শন করেছে এটিই ভবিষ্যতে আমাদের কাজে লাগবে। এ বিজ্ঞান মেলায় এলেই মেধার বিকাশ ঘটে - এটিই তার প্রমাণ।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। প্রতিটি স্টলেই নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে প্রদর্শন করেছে। আমরা এই মেলাটি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। কারণ আজকের শিশুই আগামীর ভবিষ্যৎ। এটি যেন শুধু মেলা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ না থাকে। বিদ্যালয়ে যেন শিক্ষার্থীরা চর্চা করে এমন নির্দেশনা সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানকে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৪
এসএএইচ