ঢাকা, রবিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪
পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোটা অংকের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পৌর মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীরের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ রয়েছে, ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সাতটি ভবনের নির্মাণ কাজের নকশার অনুমোদনের জন্য পৌর মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিলেন।

সেই চিঠিকে কেন্দ্র করেই মেয়র মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন।

জানা গেছে, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শক্তিশালীকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সাতটি নতুন বহুতল ভবন করা হয়েছে। সেগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন। তবে এসব ভবনের কোনোটির পৌরসভা থেকে নকশার অনুমোদন নেওয়া হয়নি।

স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন ২০০৯-এর দ্বিতীয় তফসিলের ক্রমিক নম্বর ৩৫ অনুযায়ী পৌর এলাকার অভ্যন্তরে সব সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা নির্মাণের আগে পৌরসভার কাছ থেকে নকশা অনুমোদন নিতে হবে। তবে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে জারীকৃত এ আদেশ অমান্য করে প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ভবনগুলোর নকশা অনুমোদনহীনভাবে নির্মাণ কাজ শেষ করে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, নির্মাণ কাজের অনুমোদনবিহীন নকশার কারণে ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ প্রকল্পের আওতায় মাল্টিপারপাস ভবনের ঢালাইয়ের সময় ক্যান্টিলিভার পোর্স ভেঙে ১৮ শ্রমিক গুরুতর আহত হন। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য নামমাত্র তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢালাইয়ের ত্রুটির কারণে সমস্যাটি হয়েছে। কিন্তু পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী ভবনটির নকশায় পরিবর্তন করে ক্যান্টিলিভার স্ল্যাবের একটি কলাম সাপোর্ট প্রদান করেন। বিষয়টি নামমাত্র পরিকল্পনা উন্নয়ন ওয়ার্কস (পউও) কমিটির ৪৭তম সভায় টেবিল এজেন্ডা হিসেবে আলোচনা করা হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পউও বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক ও উপ-পরিচালক মো. আনোয়ারুল হকের সঙ্গে কথা বলতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ইতিপূর্বে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কিছু ক্ষমতা থাকে, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়েছে।

এছাড়া তিনি সংবাদের প্রতিবেদককে আরও বলেন, এ বিষয়ে সব কথা মোবাইল ফোনে বলা যাবে না। আপনি সামনে আসেন তাহলে কর্তৃপক্ষ আপনার সঙ্গে কথা বলবে।

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। এর আগে তার সঙ্গে কথা বলে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, ভবনের নকশায় পৌরসভার অনুমোদনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাই ভালো বলতে পারবেন।

মাল্টিপারপাস ভবনের ঢালাইয়ের সময় ক্যান্টিলিভার পোর্স ভেঙে ১৮ শ্রমিক গুরুতর আহত হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেছিলেন, চলমান প্রকল্পে প্রয়োজনে নকশার পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করার সুযোগ আছে, যা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সম্পাদন হয়ে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী আবু তালেব সাংবাদিকদের বলেছিলেন, পৌরসভা থেকে অনুমতি নিতে গেলে অর্থের দরকার। এখানে আমাদের কোনো বরাদ্দ নেই। আমরা বলেছি ভবিষ্যতে প্রকল্পের ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) যখন করব, তখন এ খরচটা ধরে দেব।

টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ২০২১ সালের চিঠির বিষয়টি আমার মনে নাই। অফিসে গিয়ে ফাইল দেখে কথা বলতে হবে।

ঘুষের বিষয়ে মেয়র বলেন, সাংবাদিক বলে সব কথা আমাকে জিজ্ঞেস করা ঠিক হয়নি।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, চিঠি বিষয়টি আমার যোগদানের আগের। তাই এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।